আগামীকাল শনিবার হতে যাচ্ছে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ। এ সমাবেশকে ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গণসমাবেশের দু’দিন আগে থেকেই ফরিদপুরের বাইরে থেকে নেতাকর্মীরা সভাস্থলে যোগ দিচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সভাস্থলের খোলা মাঠেই বিএনপির কিছু নেতাকর্মীরা স্লোগান দিচ্ছেন। পাশেই কেউবা হুগলার মাদুর অথবা পাটের চটের বিছানা বিছিয়ে বসে কিংবা শুয়ে ঘুমাচ্ছেন। আবার কাউকে দেখা যায় বসে বসে খাবার খাচ্ছেন।
এসময় কথা হয় রাজবাড়ী কালুখালী উপজেলা থেকে আগত আবু তালেব খানের সাথে।
তিনি বলেন- বৃহস্পতিবার ৪০০ জন নেতাকর্মী কালুখালী থেকে এখানে এসেছেন গণসমাবেশে যোগ দিতে। আরও কয়েক হাজার বিএনপির নেতাকর্মী তাদের উপজেলা থেকে আসবেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এখানে খোলা মাঠেই নিজেরা রান্না করে আমাদের খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমাতে হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাসহ এ সরকারের দুঃশাসন থেকে মুক্তি লাভের জন্যই এ সমাবেশে স্বতস্ফূর্তভাবে আমাদের যোগদান।
এসময় কথা হয় মাদারীপুর থেকে আগত জেলা বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম ও মাহবুব হোসেন মুন্সীর সাথে।
তারা বলেন- অনেক বাধাবিঘ্ন পেরিয়ে বিএনপির এ বিভাগীয় গণসমাবেশকে সাফল্যমন্ডিত করতে আমরা কয়েক হাজার নেতাকর্মী এ সমাবেশে যোগ দিতে এসেছি। আমরা সরকারের দুঃশাসন থেকে মুক্তি চাই।
তারা আরও বলেন, সমাবেশ স্থলের খোলা মাঠেই আমরা দিন ও রাত যাপন করছি। খাওয়া-দাওয়াও এই মাঠে।
এদিকে সমাবেশ স্থলের পাশেই করা হয়েছে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। কেউ অসুস্থ হলেই সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মাঠে দাঁড়িয়ে কথা হয় কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিমের সাথে। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ থেকে দুই হাজার নেতা-কর্মী এসেছেন। এরকম সব জেলা থেকেই নেতা-কর্মী আসছেন বলে জানান সেলিম।
এসময় সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির দায়িত্বে থাকা যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল হাসান পিঙ্কু ভূঁইয়া বলেন, ফরিদপুর কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। নেতা-কর্মীদের আটকাতে পারবে না কোনো বাধাই।
পিঙ্কু জানান, প্রতিদিনই কয়েক হাজার নেতা-কর্মীদের মাঝে খবার বিতরণ করা হচ্ছে। জেলার নেতারা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এসব ব্যবস্থা করছেন।
বিএনপির এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে জেলার শ্রমিক সংগঠনগুলো শুক্রবার ও শনিবার দু’দিনের ধর্মঘট ডেকেছে। এই ঘোষণা আসার আগেই হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে শুরু করেন। যা শুক্রবার আরো বহুগুণে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
অন্যদিকে, গণসমাবেশের প্রস্তুতিও প্রায় শেষের পথে। মঞ্চ প্রস্তুত। সমাবেশকে ঘিরে রাস্তা-ঘাট সর্বত্র সাজসাজ রব। সমাবেশস্থল ও সড়কে শোভা পাচ্ছে পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার। নেতাকর্মীদের মাঝেও উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
ফরিদপুর জেলা যুবদলের সভাপতি মো. রাজিব হোসেন বলেন, বিএনপির এ গণসমাবেশে যোগ দিতে বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলা থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দিচ্ছেন। এখানে খাওয়া-দাওয়াসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে । কয়েক লক্ষ লোক এ গণসমাবেশে যোগ দিবেন বলে আশাবাদ এ যুবদল নেতার।
এদিকে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ,কে কিবরিয়া স্বপন বলেন, সব বাধা’কে উপেক্ষা করে গত দু’দিন যাবৎ নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসছেন। দলকে ভালোবেসে পায়ে হেঁটে, কেউবা ভ্যান, রিক্সা, অটোরিকশা ও ইজিবাইকে ভেঙে ভেঙে পথ অতিক্রম করে সভায় যোগ দিচ্ছেন। আশা করি, এ গণসমাবেশ জনসমুদ্র রুপ নিবে।
প্রিন্ট