পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় এক গৃহবধূকে (২৪) পালাক্রমে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করার ঘটনায় গতকাল বুধবার বিকেলে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এক সন্তানের জননী সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে এজাহার নামীয় সাত জন এবং অজ্ঞাতনামা চার জনকে আসামী করে পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রন আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর থানা পুলিশ গভীর রাতে এজাহারনামীয় তিন জনকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- উপজেলার বকসীর ঘটিচোরা গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র রবিউল ইসলাম (১৯), উত্তর মিঠাখালী গ্রামের সোহরাব ফরাজীর পুত্র ইলিয়াস (২৭), উত্তর কালিকা বাড়ির গ্রামের জাকির হোসেন তালুকদারের পুত্র রাজু (১৮)।
মামলা সূত্রে জানাযায়-এক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী ওই গৃহবধূ পৌর শহরের ৫নং ওয়ার্ড বহেরাতলার একটি ভাড়া বাসায় তার পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে বসবাস করে আসছিল। স্বামী প্রবাসে থাকায় তার দূর সম্পর্কের আত্মীয় উপজেলার বকসীর ঘটিচোরা গ্রামের নজরুল মাষ্টারের পুত্র রবিউল ইসলাম (১৯) প্রায়ই তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই গৃহবধূকে দেখে নেয়ার হুমকিও দেয়।
ঘটনার দিন মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে ওই গৃহবধূ তার ও বোনের দুই শিশু কণ্যাকে নিয়ে শহরের কে এম লতীফ সুপার মার্কেটের গ্রাফিক্স পয়েন্টে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শেষে অটোযোগে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।
কিন্তু অজ্ঞাতনামা অটো ড্রাইভার গৃহবধূর বহেরাতলার বাসার নিকটবর্তী আসা মাত্র গন্তব্য পৌঁছে না দিয়ে আসামী রবিউলের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পল্লী বিদ্যুতের সম্মূখ সড়ক দিয়ে গাড়িটি নিয়ে যায়। এসময় রবিউল সহ অন্যান্য আসামীরা অপর আর একটি অটোরিক্সায় এসে প্রবাসীর ওই স্ত্রী ও দুই শিশুকে জোর পূর্বক হাত পা চেপে ধরে মঠবাড়িয়া-পিরোজপুর সড়কের পাশে উত্তর মিঠাখালী গ্রামের ব্রাক অফিস সংলগ্ন মামুনের বাসার পিছনের নিয়ে যায়।
মামুনের ভাড়াটিয়া ইলিয়াসের রুমে নিয়া আসামী রবিউল যৌন কামনা চারিতার্থ করার লক্ষে জামা কাপড় খুলে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে । পরবর্তীতে পালক্রমে আসামী মোতালেব ওরফে ইব্রাহীম ও বাবু গৃহবধূকে ধর্ষণসহ পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং মোতালেবের ব্যবহ্রত মোবাইলে ধর্ষনের দৃশ্য ভিডিও করে।
এসময় দু কণ্যা শিশু কান্নাকাটি করলে ভাড়াটিয়া ইলিয়াস তার ঘরে থাকা সাউন্ডবক্স উচ্চস্বরে গান বাজাতে থাকলে স্থানীয়রা তাদের ডাকচিৎকারের শব্দ শুনতে পায়নি। এরপর আসামীরা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ওই ঘরে গৃহবধূকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ ৯৯৯-এ ফোন করলে ওই রাতে ঘটনা স্থল থেকে পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নূরুল ইসলাম বাদল মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন-এ মামলার এজাহার নামীয় ৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রিন্ট