ফরিদপুরের নগরকান্দায় ভরা বর্ষা মৌসুমে রোদের খরতাপে পুড়ছে পাট। ইতোমধ্যে পাট পরিপক্বতা হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় চাষিরা পাট কাটতে পারছেন না। রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে শত শত বিঘা জমির পাট। ফলে পাট চাষিরা পড়েছেন মহা সংকটে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে এ বছর এ উপজেলায় মোট ১২ হাজার হেক্টোর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে।
সোমবার সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলী মাঠ ঘুরে দেখাগেছে শত শত বিঘা জমিতে পাট রোপণ করা হয়েছে। সেই পাটের জমির অধিকাংশ পাট রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। চাষিরা কিছু কিছু জায়গায় পাট কেটে জমিতে রেখে দিয়েছেন। পাট জাগ দেওয়ার পানি পাচ্ছেন না চাষিরা। ফলে জমিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পাট। এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকে সামান্য পানিতে পাট জাগ দিলেও পরবর্তীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানেই নস্ট হচ্ছে।
পাটচাষী ধর্মদী গ্রামের আব্দুর রব মাতুব্বর বলেন, ৯ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। অনাবৃষ্টি আর প্রচÐ খরতাপের কারণে পাটগাছ খর্বাকৃতির হয়ে আছে। জমির বেশিরভাগ পাট গাছ পুড়ে মরে যাচ্ছে।
জুংগরদী গ্রামের ওহাব মিয়া বলেন ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। জমি বর্গা নিয়ে পাট চাষ করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। আমার মতো শত শত চাষি এবার পাট চাষ করেছেন।
এক বিঘা জমিতে ১২-১৪ মণ পাট উৎপাদন হয়। এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হয়। দাম ভালো পাওয়ার আশায় এবার চাষিরা বেশি করে পাট চাষ করেছেন। কিন্তু খরার কারণে পাট যেমন পুড়ে নষ্ট হচ্ছে, তেমনি পাট জাগ দেওয়ার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গর্ত ভাড়া করে পাট জাগ দিতে গেলে চাষিদের লাভ থাকবে না। এ জন্য এবার পাটচাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ফলোআপ : সালথার সেই উপজেলা চেয়ারম্যানের নামে আরও দুই মামলা
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলোক কুমার ঘোষ বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় বৃষ্টি না থাকায় মাঠে রোপণ করা পাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় অনেক চাষীরা পাট না কেটে জমিতে রেখে দিয়েছে। তাইতো পাট রোদে পুড়ে লাল হয়ে যাচ্ছে। আমরা কৃষকদেরকে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেয়ায় পরামর্শ দিচ্ছি। এতে কম পানিতে বেশী পাট জাগ দিতে পারবে এবং পাটের মানও ভালো থাকবে। এ কৃষিবদি আরো বলেন, দেশের কাগজ ও কালি তৈরী কারধানার মালিকগন কৃষকের নিকট থেকে এখন কাঁচা পাটকাঠি ক্রয় করেন তাহলে চাষীরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
প্রিন্ট