ফরিদপুরে পদ্মা নদীতে প্রতিদিন পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র স্রোত। আর এ তীব্র স্রোতের কারণে নদী রক্ষা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন।পদ্মার পানি গোয়ালন্দ পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ২৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৮.২৮ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
পদ্মা নদী বেষ্টিত ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী এলাকায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। পদ্মা নদীর লোহারটেক কোলের সংযোগ বাঁধেও দেখা দিয়েছে ভাঙন।এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে অস্তিত্ব সংকটে পরার সম্ভাবনা রয়েছে সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয়টি। সাথে এ এলাকার প্রায় সাড়ে তিন শ পরিবার ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির ত্রপা ভাঙনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইউএনও বলেন, ভাঙন এলাকায় কিছু বস্তা পানির স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে। তবে সেখানে পুনরায় বালুর বস্তা ফেলানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, সোমবার (২০ জুন) দুপুর থেকে ভাঙন দেখা যায়। চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামের নদীর বাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বালুভর্তি জিও ব্যাগের ডাম্পিংকৃত প্রায় ১০ মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মা নদী ও লোহারটেক কোলের সংযোগ স্থলে তীব্র স্রোত দেখা দিয়েছে। এর পরই পানিতে বালুভর্তি ডাম্পিংকৃত জিওব্যাগ নদীতে তলিয়ে যেতে থাকে। বাঁধের কাজ শুরু হওয়াতে তাদের আশা ছিল আর হয়তো ভাঙবে না। কিন্তু হঠাৎ ভাঙন দেখা দেওয়ার পর চিন্তায় পড়ে গেছেন ওই এলাকার বসবাসরত মানুষ।
এ ব্যপারে চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ খাঁন জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে তীব্র স্রোতের কারণে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এ এলাকায় একটি প্রাইমারী স্কুল ও প্রায় সাড়ে তিনশ পরিবার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙনরোধে কাজ চলছে। বালু ভর্তি জিও ব্যাগের ডাম্পিং করা হচ্ছে। এক একটি বালু ভর্তি জিও ব্যাগের ওজন প্রায় তিনশ মন। তাও ফেলার সঙ্গে সঙ্গে নিচের দিকে ডেবে যাচ্ছে। কাজের পরিমাণ ও গতি বাড়াতে হবে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ফরিদপুরে প্রতিদিনই পদ্মা সহ বিভিন্ন নদীর পানি বাড়ছে তবে এখন বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। এই পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন নদ-নদীতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
ভাঙনরোধে কাজ চলছে। সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামে দুইশত মিটার স্থায়ী বাঁধের কাজটি পুরোপুরি সম্পন্ন করা যায়নি। এবছর পূর্ব সতর্কতামূলক প্রকল্প এলাকা ঢালু করে তার উপর জিও ব্যাগের ডাম্পিং করা হয়েছে। ওই স্থানে ভাঙনের খবর তিনি পেয়েছেন। পদ্মা নদীর ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রিন্ট