২৫ জন কৃষক-কৃষানীর স্কুল। সপ্তাহে একদিন বসেন তারা। শেখেন চাষাবাদের আধুনিক প্রযুক্তি ও নিরাপদ ফসল উৎপাদনেন কৌশল। কৃষক-কৃষাণী নিয়ে গড়ে তোলা এই স্কুলের কৃষকদের ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পাঠদান করান দুইজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক।
বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় চাটমোহর উপজেলায় ৭ টি স্কুলে ১৭৫ জন কৃষক-কৃষাণী শিক্ষা নিচ্ছেন নতুন প্রযুক্তি গ্রহনের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের পদ্ধতি।
আর সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে বসতবাড়িতেই সবজি চাষ সহ বানিজ্যিক কৃষি পরিবর্তন।
প্রশিক্ষিত কৃষকরা তাদের আশপাশের কৃষকদের তাদের অর্জিত জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে বিষমুক্ত ফসল ফলা সহায়ক ভূমিকা রাখবে মনে করছেন উপজেলা কৃষি অফিস।
সোমবার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুরে সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা মিললো কৃষক মাঠ স্কুলের । ছায়াঘেরা বাগানে পলিথিন শীট বিছিয়ে বসে লিচু ঝরে যাওয়া ও প্রতিকার বিষয়ে শিখছেন কৃষক-কৃষাণীরা। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মত তাদেরও রয়েছে প্রকল্প থেকে সরবরাহকৃত খাতা-কলম। কৃষকরা তাতে লিখে রাখেন প্রতিদিনের পাঠ্য।
কৃষক মাঠ স্কুলের প্রশিক্ষক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান,প্রকল্প থেকে টিওটি (বিশেষ প্রশিক্ষণ) করে তিনি কৃষক মাঠ স্কুল পরিচালনা করছেন। চলতি অর্থবছরে উপজেলায় ৭ টি আইপিএম কৃষক মাঠ স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। ধান, সবজি, ভুট্রা ও ফলের স্কুল গুলোতে কৃষকদের কীটনাশক ব্যবহার না করে পরিবেশ বান্ধব উপায়ে ফসল উৎপাদনের শিক্ষা দেওয়া হয়।
স্কুলের শিক্ষার্থী কৃষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা প্রচলিত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতাম। না বুঝে যখন তখন জমিতে বিষ ছিটাতাম। এতে খরচ বাড়ে। স্কুল থেকে জানছি পরিবেশও দূষিত হয়।
নিরাপদ উপায়ে সবজি চাষকারী ভাদড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ জানান, তারা এখন উপকারী ও ক্ষতিকর পোকা চিনেন। ফলে বিবেচনা করে কীটনাশক ছিটান।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ বলেন, দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে । এখন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের বিষয় নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। এ ধরনের স্কুল কৃষকদের সচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
প্রিন্ট