ঢাকা , সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পৌরসভার সড়কে চাঁদা না দিলে প্রতিবন্ধীসহ চালকদেরকে প্রকাশ্যে মারধর Logo ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে হাঁড়ি পাতিল বিক্ষোভ Logo আলদাদপুরে উত্তেজনাঃ প্রশাসনের গাফিলতির প্রশ্ন উঠছে সর্বমহলে Logo হাতিয়ায় জোয়ারে ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত, বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত Logo জার্মানির বন নগরীর প্রবাসীদের অধিকার আদায়ে সকলকে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান Logo রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ Logo মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে গ্রেফতার রঞ্জন রায়ের ফাঁসির দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ Logo নগরকান্দায় বাসের চাপায়  নারীর মৃত্যু বাস ভাংচুর Logo অধিকাংশ দলই ক্ষমতার রাজনীতি করছেঃ – এনডিবি চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী Logo দুবাইতে বাংলাদেশ প্রবাস ক্লাবের উদ্যোগে শোক সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ছেউড়িয়ার লালন আঁখড়া এখন পরিণত হয়েছে গুরু শিষ্যর মিলন মেলায়

বাউল সম্রাট লালন শাহের গানের টানে বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারের মতো হাজার-হাজার মানুষ ছুটে আসছেন ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়িতে। লালন ফকিরের আখড়া ও সামনের বিশাল মাঠ এখন ভক্ত-অনুসারী। সাধু-বাউল ও দর্শনার্থীদের পদভারে প্রকম্পিত। ছেঁউড়িয়ার আঁখড়া এখন পরিণত হয়েছে গুরু শিষ্যর মিলন মেলার হাট। প্রতি বছরের মত এবারও লালন একাডেমী ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। একই সাথে লালন একাডেমির বিশাল কুঠির শিল্প হস্তশিল্প ও নানা ধরনের লোভনীয় খাবারের দোকানগুলোতে পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। আগে প্রতিবছর উৎসব ও মেলা ৫ দিন হলেও এবার হবে ৩ দিন।

একতারা,ঢোল ও বাঁশির সুরে এখন মুখর লালনের সাধনভূমি কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া। দুর-দুরান্ত থেকে আসা বাউলরা তাদের কন্ঠে গেয়ে চলেছেন লালনের রেখে যাওয়া সব আধ্যাত্মিক গান। তাদের সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন ভক্তরাও। বাউল সাধক ফকির লালন সাই এর ১৩২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ছেউড়িয়ায় ১৫মার্চ মঙ্গলবার সকালে থেকে শুরু হয়েছে এই উৎসব।

এবারও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসবে যোগ দিতে এসেছেন অসংখ্য বাউল, ভক্ত, গবেষক ও দর্শনার্থীরা। ভক্তদের ভীড়ে মুখর ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ীতে আপন মনে লালনের গান গেয়ে চলেছেন বাউল ফকিরেরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

লালন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সেলিম হক জানান,লালন সাঁইজির দর্শন পাওয়া ও অচেনাকে চেনা, আত্মার শুদ্ধি, মুক্তি, জ্ঞাণ আহরনসহ ভক্তরা মনের বাসনা পূরণ করতে এবারও সাঁইজির ধামে ছুটে আসছেন হাজার হাজার মানুষ। লালনের বানী মনের ভিতর সঠিক ভাবে ধারণ করতে পারলেই মানুষ নিজেকে চিনতে পারবে বলে মনে করেন লালন ভক্ত অনুসারীরা। তাইতো এখানে আসা ভক্তরা গানের মধ্যে দিয়ে ফকির লালন সাইয়ের বাণি লক্ষ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছেন।

লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম বলছেন, এবারের ৩ দিনের উৎসবে সর্বোচ্চ সংখ্যক লোক সমাগম হয়েছে । তবে এসব নিয়ে চিন্তা নেই লালন ভক্ত-অনুসারীদের। লালনের প্রতি এক উদাসী টান ও আত্মার শান্তির জন্যই নিজেরাই দিনক্ষন ঠিক রেখে প্রতি বছর এ উৎসবে ছুটে আসেন ভক্তরা। সেই টানেই উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পরও অনেক বাউল-ভক্ত-অনুসারীরা আরো কয়েকদিন থেকে যান লালনের এই ধামে।

লালন ভক্ত-অনুসারীরা তাদের সাইজিকে খুজে পেতে ছুটে এসেছে লালনের আখড়া বাড়ীতে বললেন দিনাজপুর ফুলবাড়ীয়া থেকে আসা সাধু আলতাফ হোসেন। লালন সাঁইজীর নিকট থেকে আল্লাহর রছুলকে চেনা বা জানার জন্যই এখানে এসেছেন সাধুরা। প্রায় ৪০ বছর ধরে লালনের সানিধ্য পাবার জন্যই এই আখড়া বাড়িতে আসেন। এমনটি জানালেন ঢাকা নারায়ন গঞ্জ থেকে আসা সাধু সাফায়েত উল্লা।

আধ্যাতিক বাউল সাধক ফকির লালন সাইয়ের ১৩২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার বাউল সম্্রাট ফকির লালন শাহের আখড়ায় বসেছে এমন সাধুরহাট।

লালন ভক্ত অনুসারী হৃদয় সাঁই বলেন, প্রতি বছর ফকির লালন সাইজির এই পুনর্ধাম আখড়া বাড়িতে দুটি উৎসব হয়, একটি হলো দোলপূর্ণিমা যা শিষ্য প্রোশিষ্য হয়ে এখনো চলমান, আরেকটি হলো লালন সাইজীর তিরোধান দিবস উপলক্ষে স্মরোণৎসব।

এখানে শুধু সাধু গুরুদের নিয়েই সাধুসংঘ নয়, লালন অনুরাগী লালন প্রেমীসহ আজ আমরা দেখছি ভিন্ন ভাষাভাষির মানুষও আজ এই সাইজীর আখড়ায় তাদের পদধুলি দিচ্ছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য পুরো এলাকা জুড়ে সিসি ক্যামেরাসহ রাখা হয়েছে ওয়াস টাওয়ারের মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টুনি গড়ে তোলা হয়েছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পৌরসভার সড়কে চাঁদা না দিলে প্রতিবন্ধীসহ চালকদেরকে প্রকাশ্যে মারধর

error: Content is protected !!

ছেউড়িয়ার লালন আঁখড়া এখন পরিণত হয়েছে গুরু শিষ্যর মিলন মেলায়

আপডেট টাইম : ০৪:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ ২০২২
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ :

বাউল সম্রাট লালন শাহের গানের টানে বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারের মতো হাজার-হাজার মানুষ ছুটে আসছেন ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়িতে। লালন ফকিরের আখড়া ও সামনের বিশাল মাঠ এখন ভক্ত-অনুসারী। সাধু-বাউল ও দর্শনার্থীদের পদভারে প্রকম্পিত। ছেঁউড়িয়ার আঁখড়া এখন পরিণত হয়েছে গুরু শিষ্যর মিলন মেলার হাট। প্রতি বছরের মত এবারও লালন একাডেমী ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। একই সাথে লালন একাডেমির বিশাল কুঠির শিল্প হস্তশিল্প ও নানা ধরনের লোভনীয় খাবারের দোকানগুলোতে পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। আগে প্রতিবছর উৎসব ও মেলা ৫ দিন হলেও এবার হবে ৩ দিন।

একতারা,ঢোল ও বাঁশির সুরে এখন মুখর লালনের সাধনভূমি কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া। দুর-দুরান্ত থেকে আসা বাউলরা তাদের কন্ঠে গেয়ে চলেছেন লালনের রেখে যাওয়া সব আধ্যাত্মিক গান। তাদের সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন ভক্তরাও। বাউল সাধক ফকির লালন সাই এর ১৩২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ছেউড়িয়ায় ১৫মার্চ মঙ্গলবার সকালে থেকে শুরু হয়েছে এই উৎসব।

এবারও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসবে যোগ দিতে এসেছেন অসংখ্য বাউল, ভক্ত, গবেষক ও দর্শনার্থীরা। ভক্তদের ভীড়ে মুখর ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ীতে আপন মনে লালনের গান গেয়ে চলেছেন বাউল ফকিরেরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

লালন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সেলিম হক জানান,লালন সাঁইজির দর্শন পাওয়া ও অচেনাকে চেনা, আত্মার শুদ্ধি, মুক্তি, জ্ঞাণ আহরনসহ ভক্তরা মনের বাসনা পূরণ করতে এবারও সাঁইজির ধামে ছুটে আসছেন হাজার হাজার মানুষ। লালনের বানী মনের ভিতর সঠিক ভাবে ধারণ করতে পারলেই মানুষ নিজেকে চিনতে পারবে বলে মনে করেন লালন ভক্ত অনুসারীরা। তাইতো এখানে আসা ভক্তরা গানের মধ্যে দিয়ে ফকির লালন সাইয়ের বাণি লক্ষ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছেন।

লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম বলছেন, এবারের ৩ দিনের উৎসবে সর্বোচ্চ সংখ্যক লোক সমাগম হয়েছে । তবে এসব নিয়ে চিন্তা নেই লালন ভক্ত-অনুসারীদের। লালনের প্রতি এক উদাসী টান ও আত্মার শান্তির জন্যই নিজেরাই দিনক্ষন ঠিক রেখে প্রতি বছর এ উৎসবে ছুটে আসেন ভক্তরা। সেই টানেই উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পরও অনেক বাউল-ভক্ত-অনুসারীরা আরো কয়েকদিন থেকে যান লালনের এই ধামে।

লালন ভক্ত-অনুসারীরা তাদের সাইজিকে খুজে পেতে ছুটে এসেছে লালনের আখড়া বাড়ীতে বললেন দিনাজপুর ফুলবাড়ীয়া থেকে আসা সাধু আলতাফ হোসেন। লালন সাঁইজীর নিকট থেকে আল্লাহর রছুলকে চেনা বা জানার জন্যই এখানে এসেছেন সাধুরা। প্রায় ৪০ বছর ধরে লালনের সানিধ্য পাবার জন্যই এই আখড়া বাড়িতে আসেন। এমনটি জানালেন ঢাকা নারায়ন গঞ্জ থেকে আসা সাধু সাফায়েত উল্লা।

আধ্যাতিক বাউল সাধক ফকির লালন সাইয়ের ১৩২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার বাউল সম্্রাট ফকির লালন শাহের আখড়ায় বসেছে এমন সাধুরহাট।

লালন ভক্ত অনুসারী হৃদয় সাঁই বলেন, প্রতি বছর ফকির লালন সাইজির এই পুনর্ধাম আখড়া বাড়িতে দুটি উৎসব হয়, একটি হলো দোলপূর্ণিমা যা শিষ্য প্রোশিষ্য হয়ে এখনো চলমান, আরেকটি হলো লালন সাইজীর তিরোধান দিবস উপলক্ষে স্মরোণৎসব।

এখানে শুধু সাধু গুরুদের নিয়েই সাধুসংঘ নয়, লালন অনুরাগী লালন প্রেমীসহ আজ আমরা দেখছি ভিন্ন ভাষাভাষির মানুষও আজ এই সাইজীর আখড়ায় তাদের পদধুলি দিচ্ছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য পুরো এলাকা জুড়ে সিসি ক্যামেরাসহ রাখা হয়েছে ওয়াস টাওয়ারের মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টুনি গড়ে তোলা হয়েছে।


প্রিন্ট