ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামের আওয়ামীলীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে এক জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক লোক, আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মকসুদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তি খারদিয়া গ্রামের মৃত্যু তোরাপ সিকদারের ছেলে মারিজ সিকদার (৩২)।
সংঘর্ষ চলাকালিন সময়ে সংঘর্ষকারীরা কমপক্ষে ৪০ টি বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজন কে আটক করে পুলিশ। শনিবার ২৩ অক্টোম্বর বিকালে খারদিয়া গ্রামের এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার উৎপত্তি। আগামী ১১ নভেম্বর দ্বীতীয় ধাপে যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী দুই প্রার্থীর বাড়ি খারদিয়া একই গ্রামের । একজন সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও অবিভক্ত নগরকান্দা (সালথা) উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নুরুজ্জামান ঠাকুর (টুকু) অপর প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা রফিক মোল্যা। এরা দুজই আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাদের বায়োডাটা জমা দিয়েছিলো। মনোনয়ন না পাওয়াতে এলাকায় এরা দুজনই চেয়ারম্যান প্রার্থীতার ঘোষনা দেন।
ঘটনার বেশ কিছুদিন আগে নুরুজ্জামান ঠাকুর (টুকু) এর সমর্থক ২ ওয়ার্ডের মেম্বর পদপ্রার্থী ইমরুল খাঁন যেন নির্বাচন না করে সেজন্য চাপ সৃষ্টি করে রফিক মোল্যার সমর্থক ২ ওয়ার্ডের প্রতিদন্ধী মেম্বার প্রার্থী ইরন খন্দকার। গত ১৫ দিন আগে ইরন খন্দকার ও তার ভাই রাজন খন্দকারসহ তাদের দলের লোক মিলে ইমরুল খাঁন কে মেরে হাসপাতালে পাঠায়। সেই ঘটনায় ইমরুল হাসপাতালে চিসিৎাধীন রয়েছে। দুই দলের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও মেম্বর প্রার্থী নিয়ে সংঘর্ষ হয় বলে জানান স্থানীয় অনেকেই।
ইমরুল মেম্বার প্রার্থী হওয়াতে পূর্বের ঘটনার জের ধরে শনিবার সকাল ও বিকালে কয়েক দফায় আবারও ইমরুল এর বাড়িতে হামলা করে রফিক মোল্যার সমর্থক প্রতিদন্ধী মেম্বর প্রার্থী ইরন খন্দকার ও তার সমর্থকরা। সেখানেই ভেলার কোপ খায় নিহত মারিজ সিকদার। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই সে মারা যায়। পরে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।
পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকা শান্ত রয়েছে।
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ আশিকুজ্জামান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। উৎতপ্ত এলাকা শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রিন্ট