ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন Logo কুষ্টিয়ায় চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের মামলায় সাবেক এমপিসহ ৫৪ জন বেকসুর খালাস Logo ফরিদপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত Logo তানোরে আটক আলুবীজ: ইঁদুর-বিড়াল খেলা? Logo শহিদ ও আহতদের স্মরণে বাঘায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত Logo কালুখালীতে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তির প্রদর্শনী উদ্বোধন Logo কালুখালীতে গনঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরনসভা Logo কুষ্টিয়ায় আসামিদের ধরতে সাংবাদিক ইউনিয়নের মানববন্ধন Logo সদরপুরে বিএডিসি’র নকল লোগোযুক্ত ধানের বীজ বিক্রয়ের দায়ে জরিমানা Logo আলফডাঙ্গায় বাড়িতে ঢুকে স্বামী-স্ত্রীসহ ৩ জনকে কুপিয়ে জখম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মধুমতির তীব্র ভাঙনে বসতঘর

আলফাডাঙ্গা উপজেলার বাজড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী থেকে মাত্র ৫ ফিট দুরুত্ব রয়েছে।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদী ভয়াবহ ভাঙনের রূপ নিয়েছে। গত এক মাসে এই নদীর তীব্র ভাঙনে উপজেলার পাঁচুড়িয়া, গোপালপুর, বুড়াইচ ও টগরবন্দ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বসতি হুমকির মুখে পড়েছে। এখনো ঝুঁকির মুখে রয়েছে চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কয়েকশ বাড়িঘর। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলছে, কিন্তু ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ বর্ষার সময় তীব্র ভাঙন শুরু হলে সেই সময় জিও ব্যাগ ফেলানো হয়। কিন্তু বর্ষার আগে পদক্ষেপ নিলে হইতো তারা ভাঙন থেকে রক্ষা পেত।

গত শনিবার ও রবিবার সরেজমিনে দুই সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁচুড়িয়া গ্রামের উত্তর পাশ দিয়ে মধুমতি নদী চলে গেছে। বন্যার পর থেকে নদীতে প্রবল স্রোত বইছে। গ্রামের বাঁশতলা বাজারের কাছে পাকা সড়ক, বাড়িঘর, ঈদগাহ, মসজিদ সবই গিলছে খেয়েছে নদী। ইতিমধ্যে গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটারের বেশি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণে হুমকিতে রয়েছে গ্রামের দুইশ বসতভিটা। দক্ষিণ পাঁচুড়িয়া গ্রামের বসতি মো. বাচ্চু মিয়া একজন চায়ের দোকানদার। মধুমতি নদীতে বাড়িঘর খুইয়ে পনের দিন ধরে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে স্কুলের বারান্দায় থাকছেন। নদীতে ভেঙে জায়গা-জমি, বাড়িঘর চলে যাওয়ায় তিনি এখন পরিবার নিয়ে নিঃস্ব জীবনযাপন করছেন।

ওই গ্রামের গৃহবধু তানজিরা বেগম জানান, নদী ভাঙনের কারণে তাঁর শ্বশুর মোট ৮-৯ বার বাড়ি বদল করেছেন। এবারও ভাঙন তাঁদের বাড়ির খুব নিকটে।

আলফাডাঙ্গার দক্ষিণ পাচুড়িয়া গ্রামের এক বসতি ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেতে বসতঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।

সত্তুর বছর বয়সের বৃদ্ধ আজিজার মল্লিক ও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ মিকাইল জানান, গত দুই বছরে পাঁচুড়িয়া ফুল মিয়ার বাড়ি থেকে নেছার খাঁর বাড়ি পর্যন্তু দেড় কিলোমিটার পাকা সড়ক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ৩৭ নম্বর পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীর ভাঙনের মুখ থেকে মাত্র ৪০ ফুট দূরত্বে রয়েছে। আর একটি জোয়াল ভাঙলেই নদীতে চলে যাবে স্কুলটি।

তিনি আরও বলেন, আগের দুই বছর অসময়ে ও পরিকল্পনা ছাড়া বালুর বস্তা ফেলাতে আমরা গ্রামবাসি মিলে বাধা দিয়েছি। কিন্তু আগামীতে স্থায়ী বাঁধের আশ্বাস দিয়ে এবার আবার বালুর বস্তা ফেলানো হচ্ছে।

পাঁচুড়িয়া গ্রামের রাজু খান তিনি চট্টগ্রামে গার্মেন্টেসে চাকরি করেন। ভাঙনের খবর শুনে পনের দিন আগে বাড়িঘর দূরে কোথাও সরিয়ে নিতে বাড়ি এসেছেন। তিনি জানান, এগারো বছর আগে করা তিনকক্ষের সেমিপাকা থাকার ঘরটি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু ভিটার ১২ শতাংশ জমিটুকু ছাড়া রাজু খানের পরিবারের আর কোন জমি নেই। তাই ঘর সরিয়ে কোথায় তুলবেন তা অনিশ্চিত। বাড়ি তৈরির সময় নদী প্রায় দুই-তিন কিলোমিটার দূরে ছিল, এখন বসতঘর থেকে মাত্র আট-দশ হাত দূরে।

কৃষক মো. সহিদ মোল্যা (৬০) বলেন, এ বছরই নদী ৬০-৭০ হাত ভেঙেছে। এতে গ্রামের প্রধান ঈদগাহ, তিনটি মসজিদ, ৩০টি পরিবারের অর্ধশতাধিক বাড়িঘর সব নদীতে চলে গেছে। গেল চার বছরে প্রায় ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে আর বর্তমানে ঝুঁকিতে আছে প্রায় দুইশ পরিবারের বসতঘর। বছরের পর বছর ভাঙন শুরু হলে নদীতে যে বালুর বস্তা ফেলা হয় তা ভরা বর্ষায় এবং বালু অর্ধেকেরও কম ভরে ফেলানোতে কোনো কাজেই আসে না । এতে সরকারি টাকা সব জলে যাচ্ছে। তাই স্থায়ী বাঁধ না হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো।

পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের ৪৬ নম্বর পশ্চিম চরনারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র টিনের ঘরটি নদী থেকে পাঁচ-ছয় ফুট দূরে আছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক মিস জয়নাব খাতুন। আর ৫৭ নম্বর চর পাঁচুড়িয়া-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ কুমার ভদ্র বললেন, তাঁদের স্কুল ভবন ভাঙনের মুখ থেকে ২০-২২ হাত দূরত্বে রয়েছে।

গোপালপুর ইউনিয়নের ৫৮ নম্বর বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন জানান, বিদ্যালয় থেকে নদী মাত্র পাঁচ-সাত হাত দূরে। তাই এবারের ভাঙন নিয়ে আমরা চিন্তিত। ২০১২ সালে করা বিদ্যালয়ের তিন কক্ষের একমাত্র ভবনটি নদীতে গেলে পাঠদানের আর কোন জায়গা অবশিষ্ট থাকবে না।

গতকাল সোমবার সকালে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, বর্ষা মৌসুম ছাড়া নদীতে জিও ব্যাগ ফেলানোর জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরও ভাঙনের সময় জরুরি কাজ সারতে হয়। তবে কোন এলাকার লোক জিও ব্যাগ না চাইলে লিখিতভাবে জানাতে হবে। আর বালু ভর্তি অবস্থায় প্রতিটি বস্তার ওজন ১৭৫ কেজির কম হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো জানান, কামারখালী থেকে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্তু মধুমতি নদীর ভাঙন কবলিত বিভিন্ন অংশে মোট সাড়ে সাত কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধের জন্য প্রায় ৪৮১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব এখন একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। এরমধ্যে আলফাডাঙ্গা অংশে প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার বাঁধের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

 

পাচুড়িয়া এলাকার এক গৃহবধু নদীর পাড় দিয়ে হাটার সময় নদীতে পড়ে যায়। পরে পাশের লোকজন তাকে নদী থেকে উপরে টেনে তুলছে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

error: Content is protected !!

মধুমতির তীব্র ভাঙনে বসতঘর

আপডেট টাইম : ০৩:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
মোঃ ইকবাল হোসেন, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ :

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদী ভয়াবহ ভাঙনের রূপ নিয়েছে। গত এক মাসে এই নদীর তীব্র ভাঙনে উপজেলার পাঁচুড়িয়া, গোপালপুর, বুড়াইচ ও টগরবন্দ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বসতি হুমকির মুখে পড়েছে। এখনো ঝুঁকির মুখে রয়েছে চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কয়েকশ বাড়িঘর। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলছে, কিন্তু ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ বর্ষার সময় তীব্র ভাঙন শুরু হলে সেই সময় জিও ব্যাগ ফেলানো হয়। কিন্তু বর্ষার আগে পদক্ষেপ নিলে হইতো তারা ভাঙন থেকে রক্ষা পেত।

গত শনিবার ও রবিবার সরেজমিনে দুই সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁচুড়িয়া গ্রামের উত্তর পাশ দিয়ে মধুমতি নদী চলে গেছে। বন্যার পর থেকে নদীতে প্রবল স্রোত বইছে। গ্রামের বাঁশতলা বাজারের কাছে পাকা সড়ক, বাড়িঘর, ঈদগাহ, মসজিদ সবই গিলছে খেয়েছে নদী। ইতিমধ্যে গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটারের বেশি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণে হুমকিতে রয়েছে গ্রামের দুইশ বসতভিটা। দক্ষিণ পাঁচুড়িয়া গ্রামের বসতি মো. বাচ্চু মিয়া একজন চায়ের দোকানদার। মধুমতি নদীতে বাড়িঘর খুইয়ে পনের দিন ধরে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে স্কুলের বারান্দায় থাকছেন। নদীতে ভেঙে জায়গা-জমি, বাড়িঘর চলে যাওয়ায় তিনি এখন পরিবার নিয়ে নিঃস্ব জীবনযাপন করছেন।

ওই গ্রামের গৃহবধু তানজিরা বেগম জানান, নদী ভাঙনের কারণে তাঁর শ্বশুর মোট ৮-৯ বার বাড়ি বদল করেছেন। এবারও ভাঙন তাঁদের বাড়ির খুব নিকটে।

আলফাডাঙ্গার দক্ষিণ পাচুড়িয়া গ্রামের এক বসতি ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেতে বসতঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।

সত্তুর বছর বয়সের বৃদ্ধ আজিজার মল্লিক ও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ মিকাইল জানান, গত দুই বছরে পাঁচুড়িয়া ফুল মিয়ার বাড়ি থেকে নেছার খাঁর বাড়ি পর্যন্তু দেড় কিলোমিটার পাকা সড়ক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ৩৭ নম্বর পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীর ভাঙনের মুখ থেকে মাত্র ৪০ ফুট দূরত্বে রয়েছে। আর একটি জোয়াল ভাঙলেই নদীতে চলে যাবে স্কুলটি।

তিনি আরও বলেন, আগের দুই বছর অসময়ে ও পরিকল্পনা ছাড়া বালুর বস্তা ফেলাতে আমরা গ্রামবাসি মিলে বাধা দিয়েছি। কিন্তু আগামীতে স্থায়ী বাঁধের আশ্বাস দিয়ে এবার আবার বালুর বস্তা ফেলানো হচ্ছে।

পাঁচুড়িয়া গ্রামের রাজু খান তিনি চট্টগ্রামে গার্মেন্টেসে চাকরি করেন। ভাঙনের খবর শুনে পনের দিন আগে বাড়িঘর দূরে কোথাও সরিয়ে নিতে বাড়ি এসেছেন। তিনি জানান, এগারো বছর আগে করা তিনকক্ষের সেমিপাকা থাকার ঘরটি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু ভিটার ১২ শতাংশ জমিটুকু ছাড়া রাজু খানের পরিবারের আর কোন জমি নেই। তাই ঘর সরিয়ে কোথায় তুলবেন তা অনিশ্চিত। বাড়ি তৈরির সময় নদী প্রায় দুই-তিন কিলোমিটার দূরে ছিল, এখন বসতঘর থেকে মাত্র আট-দশ হাত দূরে।

কৃষক মো. সহিদ মোল্যা (৬০) বলেন, এ বছরই নদী ৬০-৭০ হাত ভেঙেছে। এতে গ্রামের প্রধান ঈদগাহ, তিনটি মসজিদ, ৩০টি পরিবারের অর্ধশতাধিক বাড়িঘর সব নদীতে চলে গেছে। গেল চার বছরে প্রায় ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে আর বর্তমানে ঝুঁকিতে আছে প্রায় দুইশ পরিবারের বসতঘর। বছরের পর বছর ভাঙন শুরু হলে নদীতে যে বালুর বস্তা ফেলা হয় তা ভরা বর্ষায় এবং বালু অর্ধেকেরও কম ভরে ফেলানোতে কোনো কাজেই আসে না । এতে সরকারি টাকা সব জলে যাচ্ছে। তাই স্থায়ী বাঁধ না হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো।

পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের ৪৬ নম্বর পশ্চিম চরনারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র টিনের ঘরটি নদী থেকে পাঁচ-ছয় ফুট দূরে আছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক মিস জয়নাব খাতুন। আর ৫৭ নম্বর চর পাঁচুড়িয়া-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ কুমার ভদ্র বললেন, তাঁদের স্কুল ভবন ভাঙনের মুখ থেকে ২০-২২ হাত দূরত্বে রয়েছে।

গোপালপুর ইউনিয়নের ৫৮ নম্বর বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন জানান, বিদ্যালয় থেকে নদী মাত্র পাঁচ-সাত হাত দূরে। তাই এবারের ভাঙন নিয়ে আমরা চিন্তিত। ২০১২ সালে করা বিদ্যালয়ের তিন কক্ষের একমাত্র ভবনটি নদীতে গেলে পাঠদানের আর কোন জায়গা অবশিষ্ট থাকবে না।

গতকাল সোমবার সকালে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, বর্ষা মৌসুম ছাড়া নদীতে জিও ব্যাগ ফেলানোর জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরও ভাঙনের সময় জরুরি কাজ সারতে হয়। তবে কোন এলাকার লোক জিও ব্যাগ না চাইলে লিখিতভাবে জানাতে হবে। আর বালু ভর্তি অবস্থায় প্রতিটি বস্তার ওজন ১৭৫ কেজির কম হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো জানান, কামারখালী থেকে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্তু মধুমতি নদীর ভাঙন কবলিত বিভিন্ন অংশে মোট সাড়ে সাত কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধের জন্য প্রায় ৪৮১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব এখন একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। এরমধ্যে আলফাডাঙ্গা অংশে প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার বাঁধের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

 

পাচুড়িয়া এলাকার এক গৃহবধু নদীর পাড় দিয়ে হাটার সময় নদীতে পড়ে যায়। পরে পাশের লোকজন তাকে নদী থেকে উপরে টেনে তুলছে।

প্রিন্ট