ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

নগরকান্দায় ছাত্রদল নেতা এখন ছাত্রলীগের সভাপতি

ফরিদপুরের নগরকান্দায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চয়ন কুমার মণ্ডলকে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ছাত্রদল নেতা থেকে এক লাফে ছাত্রলীগের সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় তাকে নিয়ে চলছে তর্ক-বিতর্ক। ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় একজনকে ছাত্রলীগের মতো সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ায় জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়েও চলছে নানা সমালোচনা।

চয়নের সঙ্গে রাজনীতি করা অনেকেই বলেছেন, পড়াশোনার সূত্র ধরে চয়ন পাশের ভাঙ্গা কলেজ শাখা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। হঠাৎ করেই নিজ এলাকা নগরকান্দায় ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ায় সবাই অবাক হয়েছেন।

জানা গেছে, চয়ন কুমার মণ্ডল ভাঙ্গা সরকারি কে এম কলেজের ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের অনার্সের শিক্ষার্থী। সে কে এম কলেজের ছাত্রদলের কমিটির যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বিএনপি ও ছাত্রদলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে চয়ন ছিলেন প্রথম সারিতে। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটিতে ১২নং যুগ্ম আহবায়ক করা হয় চয়ন কুমার মন্ডলকে। অভিযোগ রয়েছে, কলেজ ছাত্রদলের কমিটিতে থাকার তথ্য গোপন করে জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের বিভ্রান্ত করে সে নগরকান্দা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন। চয়নকে সভাপতি করায় নগরকান্দা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
শুধু তথ্য গোপনই নয়, চয়নের নামে নগরকান্দা থানায় চুরি, মারধর, হত্যাচেষ্টা, নাশকতাসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু ও সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েস ২১ সদস্য বিশিষ্ট ভাঙ্গা কে এম কলেজ ছাত্রদলের একটি আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। সেই কমিটিতে ১২নং যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে চয়ন কুমার মণ্ডলের নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গা কে এম কলেজ ছাত্রদলের ১নং যুগ্ম আহবায়ক হামিদুর রহমান জানান, চয়ন ভাঙ্গা কলেজের প্রভাষক রঞ্জিত কুমার মণ্ডলের ভাতিজা। সেই সুবাদে তাকে রাজনীতিতে এনেছি। সে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ও সরব ছিল। হঠাৎ জানতে পারলাম চয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছে। এতে আমরা বিস্মিত হয়েছি। চয়ন ছাত্রদল থেকে পদত্যাগ করেনি কিংবা তাকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়নি।

এদিকে, গত ৩১ জুলাই নগরকান্দা উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেন ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সেই কমিটিতে সভাপতি হিসাবে চয়ন কুমার মণ্ডলের নাম ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে চয়ন কুমার মণ্ডল বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি আজীবন ছাত্রলীগ করেছি। আমি ও ছাত্রদলের চয়ন এক ব্যক্তি নই। আমি ভাঙ্গা কে এম কলেজে পড়ালেখা করি। সেখানে ছাত্রদলের চয়ন কুমার মণ্ডল নামে কেউ আছে তা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েস বলেন, চয়ন কুমার মণ্ডল ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে যদি ছাত্রলীগের পদ পেয়ে থাকে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানজিমুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, চয়ন ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলো না। তবে তাকে সভাপতি করার বিষয়ে উপরের নির্দেশ ছিল বলেই তাকে সভাপতি করা হয়েছে। তবে সে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা তা আমার জানা নেই।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

নগরকান্দায় ছাত্রদল নেতা এখন ছাত্রলীগের সভাপতি

আপডেট টাইম : ১০:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অগাস্ট ২০২১
স্টাফ রিপোর্টারঃ :

ফরিদপুরের নগরকান্দায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চয়ন কুমার মণ্ডলকে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ছাত্রদল নেতা থেকে এক লাফে ছাত্রলীগের সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় তাকে নিয়ে চলছে তর্ক-বিতর্ক। ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় একজনকে ছাত্রলীগের মতো সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ায় জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়েও চলছে নানা সমালোচনা।

চয়নের সঙ্গে রাজনীতি করা অনেকেই বলেছেন, পড়াশোনার সূত্র ধরে চয়ন পাশের ভাঙ্গা কলেজ শাখা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। হঠাৎ করেই নিজ এলাকা নগরকান্দায় ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ায় সবাই অবাক হয়েছেন।

জানা গেছে, চয়ন কুমার মণ্ডল ভাঙ্গা সরকারি কে এম কলেজের ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের অনার্সের শিক্ষার্থী। সে কে এম কলেজের ছাত্রদলের কমিটির যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বিএনপি ও ছাত্রদলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে চয়ন ছিলেন প্রথম সারিতে। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটিতে ১২নং যুগ্ম আহবায়ক করা হয় চয়ন কুমার মন্ডলকে। অভিযোগ রয়েছে, কলেজ ছাত্রদলের কমিটিতে থাকার তথ্য গোপন করে জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের বিভ্রান্ত করে সে নগরকান্দা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন। চয়নকে সভাপতি করায় নগরকান্দা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
শুধু তথ্য গোপনই নয়, চয়নের নামে নগরকান্দা থানায় চুরি, মারধর, হত্যাচেষ্টা, নাশকতাসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু ও সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েস ২১ সদস্য বিশিষ্ট ভাঙ্গা কে এম কলেজ ছাত্রদলের একটি আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। সেই কমিটিতে ১২নং যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে চয়ন কুমার মণ্ডলের নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গা কে এম কলেজ ছাত্রদলের ১নং যুগ্ম আহবায়ক হামিদুর রহমান জানান, চয়ন ভাঙ্গা কলেজের প্রভাষক রঞ্জিত কুমার মণ্ডলের ভাতিজা। সেই সুবাদে তাকে রাজনীতিতে এনেছি। সে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ও সরব ছিল। হঠাৎ জানতে পারলাম চয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছে। এতে আমরা বিস্মিত হয়েছি। চয়ন ছাত্রদল থেকে পদত্যাগ করেনি কিংবা তাকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়নি।

এদিকে, গত ৩১ জুলাই নগরকান্দা উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেন ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সেই কমিটিতে সভাপতি হিসাবে চয়ন কুমার মণ্ডলের নাম ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে চয়ন কুমার মণ্ডল বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি আজীবন ছাত্রলীগ করেছি। আমি ও ছাত্রদলের চয়ন এক ব্যক্তি নই। আমি ভাঙ্গা কে এম কলেজে পড়ালেখা করি। সেখানে ছাত্রদলের চয়ন কুমার মণ্ডল নামে কেউ আছে তা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েস বলেন, চয়ন কুমার মণ্ডল ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে যদি ছাত্রলীগের পদ পেয়ে থাকে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানজিমুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, চয়ন ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলো না। তবে তাকে সভাপতি করার বিষয়ে উপরের নির্দেশ ছিল বলেই তাকে সভাপতি করা হয়েছে। তবে সে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা তা আমার জানা নেই।

প্রিন্ট