ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কাশিয়ানীতে বিএডিসির পেঁয়াজ বীজে কৃষকের সর্বনাশ Logo শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়ার ভেড়ামারা শিক্ষা অফিসারকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo ফরিদপুরে ৩৩ তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৬ তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালিত Logo চট্টগ্রামের পটিয়ায় গভীর রাতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি Logo কৃষকের জমিতে বেড়া দিতে আ.লীগ নেতার ‘বাঁধা ও মারধর’ Logo যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ২০ লাখ টাকাসহ ঢাকা বিমানবন্দরে আটক, অতঃপর মুক্ত Logo তানোরে মামলাবাজ হিটলুর দৌরাত্ম্যে গ্রামবাসি অতিষ্ঠ Logo আলমডাঙ্গায় মাদকবিরোধী ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত Logo নাজির শাহীনের হাতে আলাদিনের চেরাগ ! Logo গোপালগঞ্জে অবৈধভাবে বালু কাটা বন্ধ হওয়ায় প্রতিবেশীর বাড়িতে হামলা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

এলাকায় ভদ্র জনপ্রতিনিধি, বাইরে ভয়ঙ্কর ডাকাত

লিটন শেখ। বয়স ৩৬ বছর। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। দানবীর ও পরিপাটি পোশাকে চলাফেরা করা ভালো মানুষ হিসেবেই তাকে চেনে এলাকার লোকজন।

এই ভালো মানুষ চেহারার আড়ালে ঢাকার পাশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে

সবর্শেষ মানিকগঞ্জের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাটুরিয়া থানার নয়াডিঙ্গী ‘রাইজিং নিট টেক্সটাইলস থেকে বিদেশ থেকে আমদানি করা ৪৩ লাখ টাকার মূল্যবান সুতা লুটের মালামালসহ মূল হোতা লিটনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই আটকের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসায় আবার এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন লিটন মেম্বার।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহম্মদপুর উপজেলা সদরের মধুমতি পাড়ে জাঙ্গালিয়া গ্রামে বাস করেন লিটন শেখ। তার বাবা রোস্তম শেখ অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করতেন। আট বছর আগে মারা যান। দুই ভাই পাঁচ বোনের মধ্যে লিটন তিন নম্বর।

লিটনের গ্রাম ও পাঁচজন প্রতিবেশির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভাবের তাড়নায় লিটন ২০০৬ সালে এলাকায় ছোটখাটো চুরিতে জড়িয়ে পড়ে। চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে একাধিকবার জেলও খেটেছেন।এরপর লিটন নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। ২০১৫ সালে বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে। লিটন এলাকায় জমি কিনে নতুন ঘর তৈরি করে। পড়ালেখা না জানা লিটন কোর্ট টাইসহ  পরিপাটি পোশাক পরে দামি মোটরসাইকেলে চড়ে ঘুরতে থাকেন। ঢাকায় ব্যবসা করেন বলে জানান সবাইকে। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এলাকার মানুষের মধ্যে সাহায‌্য সহযোগীতা করতে শুরু করেন।

২০১৬ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মহম্মদপুর উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বর) নির্বাচিত হন। ইউপি সদস্য হওয়ার পরও লিটন ঢাকার পাশে গাজীপুর, সাভার, আশুরিয়া ও মানিকগঞ্জ এলাকার গার্মেন্টসের ঝুট, তৈরি পোশাক ও নিট টেক্সটাইলস লি. কোম্পানির সুতা ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গত ১ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার নয়াডিঙ্গী ‘রাইজিং নিট টেক্সটাইলস লি.’ এর পূর্ব পাশের বাউন্ডারি দেয়ালের নিচের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ১২-১৩ জন ডাকাত ভিতরে প্রবেশ করে সিকিউরিটি গার্ডদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মারপিট করে হাত ও পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ডাকাতরা মূল ফটকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।পরে ডাকাতরা গেট খুলে একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন কাভার্ড ভ্যান ঢুকিয়ে কোম্পানির ভিতরের পূর্ব পাশের গোডাউনের সামনে রেখে গোডাউন থাকা ভিয়েতনাম থেকে আমদানীকৃত ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ২৪৮ টাকা মূল্যমানের ৩৬৩৪.৯৯ কেজি সুতা ডাকাতি করে ঢাকার দিকে চলে যায়।

ডাকাতি হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ আমদানি করা ৪৩ লাখ টাকা মূল্যবান সুতা লুটের মালামাল সাভারের আশুলিয়ার জামগড়া এলাকা থেকে একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন কাভার্ডভ্যান হতে সেগুলো উদ্ধার করে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানা পুলিশ।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে ডাকাত দলের মূল হোতা লিটন শেখসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের সবাইকে বুধবার (৪ আগস্ট) আদালতে সোপর্দ করা হয় মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ভাস্কর সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী অফিসার পুলিশ পরিদর্শক (নি:) মো. হাবিবুর রহমান ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ডাকাতের মূল হোতা লিটন শেখ (৩৬), সহযোগী আব্দুল করিম (৩৮), মো. রেজাউল (৩২) ও গাড়ির চালক ওবায়দুলকে (৪২) গ্রেপ্তার করা হয়।

ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত কাভার্ডভ্যানটিও উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ডাকাতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এদের বিরুদ্ধে চুরি-ডাকাতিসহ আরও নানা অভিযোগ রয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায়।

এ ঘটনায় রাইজিং নিট টেক্সটাইলস লি. কোম্পানির ডিজিএম অ্যাডমিন মো. মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

মহম্মদপুরের সদরের জাঙ্গালিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাঁশি মিয়া জানান, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় রাইজিং নিট টেক্সটাইলস লি. কোম্পানিতে ডাকাতি করে ধরা পড়া লিটনই মহম্মদপুর উপজেলা সদরের মেম্বর লিটন শেখ। গণমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও দেখে তারা শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে। লিটন এর আগেও চুরি ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধে আটক হয় জেল খাটে আবার বের হয়ে আসে। বছরের বেশিরভাগ সময় এলাকায় না থাকায় আমাদের ওয়ার্ডের লোকজন নানা সমস্যায় পড়ছেন বলে তিনি জানান। তাকে শুধু ঈদের সময় দুই-তিন দিন বাড়িতে দেখা যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জাঙ্গালিয়া গ্রামে লিটনের বাড়িতে মা, স্ত্রী পান্না তার দুই ছেলে মেয়ে ও  ছোটভাই রিপনকে নিয়ে বাস করেন।

রিপন জানান, তার ভাই লিটন শেখ ঢাকায় ব্যবসা করেন। অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি তারা জানেন না বলে জানান।

মহম্মদপুরের সদর ইউনিয়ন পরিষদের দুজন সদস্য নাম প্রকাশ না করে জানান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য লিটন শেখ পরিষদের কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নাই। তিনি বছরের অধিকাংশ সময় এলাকার বাইরে থাকেন। পরিষদের মিটিংয়ে তিনি অনুপস্থিত থাকেন।

মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, লিটনের আটকের বিষয়টি গণমাধ্যমে দেখেছেন। তার বিষয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানান।

মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রামানন্দপাল জানান, কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কোনো ইউপি সদস্যের বছরের পর বছর এলাকায় অনুপস্থিত থাকার সুযোগ নেই। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কাশিয়ানীতে বিএডিসির পেঁয়াজ বীজে কৃষকের সর্বনাশ

error: Content is protected !!

এলাকায় ভদ্র জনপ্রতিনিধি, বাইরে ভয়ঙ্কর ডাকাত

আপডেট টাইম : ০৮:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অগাস্ট ২০২১
মোঃ শফিকুল ইসলাম জীবন, মহম্মদপুর, মাগুরা প্রতিনিধিঃ :

লিটন শেখ। বয়স ৩৬ বছর। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। দানবীর ও পরিপাটি পোশাকে চলাফেরা করা ভালো মানুষ হিসেবেই তাকে চেনে এলাকার লোকজন।

এই ভালো মানুষ চেহারার আড়ালে ঢাকার পাশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে

সবর্শেষ মানিকগঞ্জের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাটুরিয়া থানার নয়াডিঙ্গী ‘রাইজিং নিট টেক্সটাইলস থেকে বিদেশ থেকে আমদানি করা ৪৩ লাখ টাকার মূল্যবান সুতা লুটের মালামালসহ মূল হোতা লিটনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই আটকের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসায় আবার এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন লিটন মেম্বার।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহম্মদপুর উপজেলা সদরের মধুমতি পাড়ে জাঙ্গালিয়া গ্রামে বাস করেন লিটন শেখ। তার বাবা রোস্তম শেখ অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করতেন। আট বছর আগে মারা যান। দুই ভাই পাঁচ বোনের মধ্যে লিটন তিন নম্বর।

লিটনের গ্রাম ও পাঁচজন প্রতিবেশির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভাবের তাড়নায় লিটন ২০০৬ সালে এলাকায় ছোটখাটো চুরিতে জড়িয়ে পড়ে। চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে একাধিকবার জেলও খেটেছেন।এরপর লিটন নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। ২০১৫ সালে বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে। লিটন এলাকায় জমি কিনে নতুন ঘর তৈরি করে। পড়ালেখা না জানা লিটন কোর্ট টাইসহ  পরিপাটি পোশাক পরে দামি মোটরসাইকেলে চড়ে ঘুরতে থাকেন। ঢাকায় ব্যবসা করেন বলে জানান সবাইকে। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এলাকার মানুষের মধ্যে সাহায‌্য সহযোগীতা করতে শুরু করেন।

২০১৬ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মহম্মদপুর উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বর) নির্বাচিত হন। ইউপি সদস্য হওয়ার পরও লিটন ঢাকার পাশে গাজীপুর, সাভার, আশুরিয়া ও মানিকগঞ্জ এলাকার গার্মেন্টসের ঝুট, তৈরি পোশাক ও নিট টেক্সটাইলস লি. কোম্পানির সুতা ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গত ১ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার নয়াডিঙ্গী ‘রাইজিং নিট টেক্সটাইলস লি.’ এর পূর্ব পাশের বাউন্ডারি দেয়ালের নিচের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ১২-১৩ জন ডাকাত ভিতরে প্রবেশ করে সিকিউরিটি গার্ডদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মারপিট করে হাত ও পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ডাকাতরা মূল ফটকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।পরে ডাকাতরা গেট খুলে একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন কাভার্ড ভ্যান ঢুকিয়ে কোম্পানির ভিতরের পূর্ব পাশের গোডাউনের সামনে রেখে গোডাউন থাকা ভিয়েতনাম থেকে আমদানীকৃত ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ২৪৮ টাকা মূল্যমানের ৩৬৩৪.৯৯ কেজি সুতা ডাকাতি করে ঢাকার দিকে চলে যায়।

ডাকাতি হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ আমদানি করা ৪৩ লাখ টাকা মূল্যবান সুতা লুটের মালামাল সাভারের আশুলিয়ার জামগড়া এলাকা থেকে একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন কাভার্ডভ্যান হতে সেগুলো উদ্ধার করে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানা পুলিশ।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে ডাকাত দলের মূল হোতা লিটন শেখসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের সবাইকে বুধবার (৪ আগস্ট) আদালতে সোপর্দ করা হয় মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ভাস্কর সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী অফিসার পুলিশ পরিদর্শক (নি:) মো. হাবিবুর রহমান ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ডাকাতের মূল হোতা লিটন শেখ (৩৬), সহযোগী আব্দুল করিম (৩৮), মো. রেজাউল (৩২) ও গাড়ির চালক ওবায়দুলকে (৪২) গ্রেপ্তার করা হয়।

ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত কাভার্ডভ্যানটিও উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ডাকাতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এদের বিরুদ্ধে চুরি-ডাকাতিসহ আরও নানা অভিযোগ রয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায়।

এ ঘটনায় রাইজিং নিট টেক্সটাইলস লি. কোম্পানির ডিজিএম অ্যাডমিন মো. মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

মহম্মদপুরের সদরের জাঙ্গালিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাঁশি মিয়া জানান, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় রাইজিং নিট টেক্সটাইলস লি. কোম্পানিতে ডাকাতি করে ধরা পড়া লিটনই মহম্মদপুর উপজেলা সদরের মেম্বর লিটন শেখ। গণমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও দেখে তারা শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে। লিটন এর আগেও চুরি ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধে আটক হয় জেল খাটে আবার বের হয়ে আসে। বছরের বেশিরভাগ সময় এলাকায় না থাকায় আমাদের ওয়ার্ডের লোকজন নানা সমস্যায় পড়ছেন বলে তিনি জানান। তাকে শুধু ঈদের সময় দুই-তিন দিন বাড়িতে দেখা যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জাঙ্গালিয়া গ্রামে লিটনের বাড়িতে মা, স্ত্রী পান্না তার দুই ছেলে মেয়ে ও  ছোটভাই রিপনকে নিয়ে বাস করেন।

রিপন জানান, তার ভাই লিটন শেখ ঢাকায় ব্যবসা করেন। অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি তারা জানেন না বলে জানান।

মহম্মদপুরের সদর ইউনিয়ন পরিষদের দুজন সদস্য নাম প্রকাশ না করে জানান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য লিটন শেখ পরিষদের কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নাই। তিনি বছরের অধিকাংশ সময় এলাকার বাইরে থাকেন। পরিষদের মিটিংয়ে তিনি অনুপস্থিত থাকেন।

মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, লিটনের আটকের বিষয়টি গণমাধ্যমে দেখেছেন। তার বিষয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানান।

মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রামানন্দপাল জানান, কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কোনো ইউপি সদস্যের বছরের পর বছর এলাকায় অনুপস্থিত থাকার সুযোগ নেই। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।


প্রিন্ট