বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
অসহায় ও অস্বচ্ছল মৎস্যজীবীদের বিনামূল্যে গরু বিতরণের কথা থাকলেও ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সেই প্রকল্পে উঠেছে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে, প্রত্যেকটি গরুর জন্য উপকারভোগীদের কাছ থেকে ২ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে।
.
জানা গেছে, গত ১৪ মে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে “দেশীয় প্রজাতির মাছ ও শামুক সংরক্ষণ-উন্নয়ন প্রকল্প” এর আওতায় এসব গরু বিতরণ করা হয়। প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল দরিদ্র জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।
.
সোতাশী গ্রামের মৎস্যজীবী অনিল মালো অভিযোগ করেন, তার মৎস্যজীবী কার্ড থাকা সত্ত্বেও তিনি এবং তার ছেলে নির্মল মালোর মাধ্যমে দুটি গরু পেতে ৩০ হাজার টাকা দেন। নির্মল প্রথমে প্রতিশ্রুতি দেন, উন্নত জাতের ৮০ কেজি ওজনের ফ্রিজিয়ান গরু দেবেন, কিন্তু পরবর্তীতে দেওয়া হয় কম ওজনের এবং নিম্নমানের গরু। এদিকে মঙ্গলবার (২০ মে) গরুর চিকিৎসা বাবদ তাকে আরও প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে।
.
অজিত মালোর স্ত্রী যমুনা অভিযোগ করেন, তারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তার স্বামীর নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তার দাবি, নির্মল মালো পুরো সোতাশী গ্রামে প্রতিটি গরুর জন্য ১৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন।
.
নির্মল মালোকে তার বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি এবং একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া মেলেনি।
.
এছাড়া আরও অভিযোগ পাওয়া গেছে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। উপকারভোগী অঞ্জনা মালো বলেন, তিনি ১৫ হাজার টাকা দিয়েছেন নাজিম উদ্দিনকে। বিকাশ মালো জানান, টাকা দিতে না পারায় তার নাম তালিকায় ওঠেনি। তবে নাজিম উদ্দিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি কেবল স্টাম্প ও যাতায়াত খরচ বাবদ কিছু টাকা নিয়েছেন।
.
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, “আমরা যাচাই-বাছাই করে গরু বিতরণ করেছি। তবে যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে, সে বিষয়ে আমাদের কাছে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে কিছু অসঙ্গতি শুনেছি, তাই অফিসের লোকদের মাঠে পাঠানো হয়েছে।”
.
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, “আমার দায়িত্ব ছিল শুধু উদ্বোধন করা। বিতরণের সময় ১০টি অনিয়মিত নাম বাদ দিয়ে প্রকৃত উপকারভোগীদের মাঝে গরু বিতরণ করা হয়েছে।”
প্রিন্ট