ঢাকা , সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

তানোরে সার সিন্ডিকেট বন্ধের দাবিতে কৃষক সমাবেশ

আলিফ হোসেনঃ

রাজশাহীর তানোরে সার সিন্ডিকেট, সেচের পানির সমস্যা ও আলুর ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণ দাবিতে কৃষক সমাবেশ করেছে কৃষকরা। রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে তানোর উপজেলা চত্বরে বাংলাদেশ কৃষক ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 

বাংলাদেশ কৃষক ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের তানোর পৌরসভার সভাপতি আজহার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক ও স্ব-শিক্ষিত কৃষি বিজ্ঞানী নূর মোহাম্মদ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উপজেলা সভাপতি কাজী আফজাল হোসেন, আদর্শ কৃষক কেফাতুল্লাহসহ আরো অনেকে।
এদিন সমাবেশে বক্তাগণ অভিযোগ করে বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে প্রয়োজন মতো সার পাওয়া যাচ্ছে না।

 

কিন্তু বাজারে বেশি দাম দিলে আবার সারের অভাব দেখা যায় না। কৃষি কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে জানালে তাঁরা বলেন “সার বাইরে থেকে আসে, তাই দাম বেশি” এমন মন্তব্যেরও তীব্র নিন্দা জানান কৃষকরা। তারা দাবি করেন, অবিলম্বে সার সিন্ডিকেট বন্ধ করে সরকার নির্ধারিত দামে সার বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।

 

বক্তাগণ আরও বলেন, একক ব্যক্তিকে সেচ কার্যক্রমের দায়িত্ব দেওয়ায় সেচ খাতে চলছে স্বেচ্ছাচারিতা। ফলে আলু চাষে প্রতি বিঘায় ১,৫০০ টাকা এবং ধান চাষে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত সেচের খরচ গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। একক ব্যক্তির লাভের চিন্তায় প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি দেওয়া হচ্ছে, এতে ফলন কমে যাচ্ছে-কৃষক একদিকে ক্ষতির মুখে, অন্যদিকে খরচও বাড়ছে।তাদের দাবি, সেচ স্কিমের আওতাভুক্ত কৃষকদের নিয়ে সেচ কমিটি গঠন করতে হবে এবং সেচ কার্যক্রম সমিতির মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে, যাতে স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ হয়।

 

এছাড়া, কৃষকরা অভিযোগ করেন কীটনাশকের দাম ও মান দুটিতেই অনিয়ম চলছে। কীটনাশকের প্যাকেটে দাম লেখা থাকে ৯০০ টাকা, কিন্তু বাজারে বিক্রি হয় ৫০০-৬০০ টাকায়। আগের তুলনায় এখন এক মৌসুমে ২-৩ বার নয়, বরং ৬-৭ বার কীটনাশক ব্যবহার করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বোঝা যায়, ভেজাল কীটনাশক কৃষকদের ক্ষতির মুখে ফেলছে।

 

সমাবেশে উপস্থিত কৃষকরা, কীটনাশকের নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ ও ভেজাল প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। পাশাপাশি আলু সংরক্ষণের হিমাগারে ভাড়া আগে ছিল কেজি প্রতি ৪ টাকা, বর্তমানে তা বাড়িয়ে ৬ টাকা করা হয়েছে। এতে ধনী মালিকরা লাভবান হলেও সাধারণ কৃষক আরও অসহায় হয়ে পড়ছেন।

 

কৃষকরা বলেন, যে কোনো মূল্যে আগের ভাড়া বহাল রাখতে হবে, যাতে কৃষকদের দুর্দশা কিছুটা লাঘব হয়। সমাবেশ শেষে কৃষক প্রতিনিধি দল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), কৃষি কর্মকর্তা এবং বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সহকারী প্রকৌশলীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বেগম খালেদা জিয়া নারী অধিকার ও ক্ষমতায়নের পথিকৃৎঃ মিরপুরে নারী সমাবেশে অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম

error: Content is protected !!

তানোরে সার সিন্ডিকেট বন্ধের দাবিতে কৃষক সমাবেশ

আপডেট টাইম : ৬ ঘন্টা আগে
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেনঃ

রাজশাহীর তানোরে সার সিন্ডিকেট, সেচের পানির সমস্যা ও আলুর ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণ দাবিতে কৃষক সমাবেশ করেছে কৃষকরা। রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে তানোর উপজেলা চত্বরে বাংলাদেশ কৃষক ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 

বাংলাদেশ কৃষক ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের তানোর পৌরসভার সভাপতি আজহার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক ও স্ব-শিক্ষিত কৃষি বিজ্ঞানী নূর মোহাম্মদ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উপজেলা সভাপতি কাজী আফজাল হোসেন, আদর্শ কৃষক কেফাতুল্লাহসহ আরো অনেকে।
এদিন সমাবেশে বক্তাগণ অভিযোগ করে বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে প্রয়োজন মতো সার পাওয়া যাচ্ছে না।

 

কিন্তু বাজারে বেশি দাম দিলে আবার সারের অভাব দেখা যায় না। কৃষি কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে জানালে তাঁরা বলেন “সার বাইরে থেকে আসে, তাই দাম বেশি” এমন মন্তব্যেরও তীব্র নিন্দা জানান কৃষকরা। তারা দাবি করেন, অবিলম্বে সার সিন্ডিকেট বন্ধ করে সরকার নির্ধারিত দামে সার বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।

 

বক্তাগণ আরও বলেন, একক ব্যক্তিকে সেচ কার্যক্রমের দায়িত্ব দেওয়ায় সেচ খাতে চলছে স্বেচ্ছাচারিতা। ফলে আলু চাষে প্রতি বিঘায় ১,৫০০ টাকা এবং ধান চাষে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত সেচের খরচ গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। একক ব্যক্তির লাভের চিন্তায় প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি দেওয়া হচ্ছে, এতে ফলন কমে যাচ্ছে-কৃষক একদিকে ক্ষতির মুখে, অন্যদিকে খরচও বাড়ছে।তাদের দাবি, সেচ স্কিমের আওতাভুক্ত কৃষকদের নিয়ে সেচ কমিটি গঠন করতে হবে এবং সেচ কার্যক্রম সমিতির মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে, যাতে স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ হয়।

 

এছাড়া, কৃষকরা অভিযোগ করেন কীটনাশকের দাম ও মান দুটিতেই অনিয়ম চলছে। কীটনাশকের প্যাকেটে দাম লেখা থাকে ৯০০ টাকা, কিন্তু বাজারে বিক্রি হয় ৫০০-৬০০ টাকায়। আগের তুলনায় এখন এক মৌসুমে ২-৩ বার নয়, বরং ৬-৭ বার কীটনাশক ব্যবহার করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বোঝা যায়, ভেজাল কীটনাশক কৃষকদের ক্ষতির মুখে ফেলছে।

 

সমাবেশে উপস্থিত কৃষকরা, কীটনাশকের নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ ও ভেজাল প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। পাশাপাশি আলু সংরক্ষণের হিমাগারে ভাড়া আগে ছিল কেজি প্রতি ৪ টাকা, বর্তমানে তা বাড়িয়ে ৬ টাকা করা হয়েছে। এতে ধনী মালিকরা লাভবান হলেও সাধারণ কৃষক আরও অসহায় হয়ে পড়ছেন।

 

কৃষকরা বলেন, যে কোনো মূল্যে আগের ভাড়া বহাল রাখতে হবে, যাতে কৃষকদের দুর্দশা কিছুটা লাঘব হয়। সমাবেশ শেষে কৃষক প্রতিনিধি দল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), কৃষি কর্মকর্তা এবং বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সহকারী প্রকৌশলীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।


প্রিন্ট