ঢাকা , বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তানোর বিএনপির নেতৃত্বে হযরতকে দেখতে চাই তৃণমুল Logo মোহনপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা Logo ফরিদপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত Logo রূপগঞ্জে দুই সাংবাদিকের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ Logo আজ খোকসা হানাদার মুক্ত দিবসঃ পালিত হবে যথাযজ্ঞ মর্যাদা Logo দৌলতপুরে জাল নোট প্রচলন প্রতিরোধে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত Logo মধুখালীতে নবাগত ইউএনও’র যোগদান Logo বহুলীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বন্যা পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে করনীয় শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo শালিখায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত Logo প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৬ দিনব্যাপী বিষয়ভিত্তিক বাংলা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

গল্পঃ অসচেতন

  • মেহেদী হাসান
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুলাই ২০২১
  • ৩৩৯ বার পঠিত

রুমার আব্বা ঘরে চাল শেষ। সকালে রান্নার পরে চালের ডিব্বা একবারে খালি হইয়া যাইবো। জলিল মিয়া ভারী গলায় বললো, “কয়দিন ধরে শরীরটা খুব খারাপ। তিন দিন আগে মেম্বারের কাছে ভোটার আইডি জমা দিলাম সরকারি ত্রাণের লাইগে তারও কোনো খবর নাই।

এদিকে কামেও যাইতে পারছি না। কাল সকালে রিক্সা লইয়া বাইরামু। ” জলিল মিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বললো, “পোলা, মাইয়া দুইডা ঘুমায় পড়ছে?” হামিদা ভারী গলায় বললো, “হুম,চলেন আমরাও ঘুমাই। সকালে যদি আপনি আবার কাজে যাও। “হুম চলো।” হামিদা বিছানায় শুয়ে পড়লো।

হঠাৎ জলিল মিয়ার হাতের সাথে হামিদার হাতের স্পর্শ লাগলো। হামিদা সঙ্গে সঙ্গে চমকে উঠলো। থতমত খেয়ে হামিদা বললো, “জ্বরে দেখি তুমার শরীর পুড়ে যাচ্ছে।” জলিল মিয়া কাতর গলায় বললো, “হুম, কয়দিন ধরে গলাও বেশ ব্যাথা।

” কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে জলিল মিয়া আবার বললো, “রুমার মা,তুমি কাল সকালে একটু মেম্বারে বাড়ি যাইওতো।” “আচ্ছা যামুনি। আপনি ঘুমান ওহন” ভোর হয়ে গেছে।

চারপাশে পাখি ডাকছে। জলিল মিয়া তখনো ঘুমিয়ে আছে। গায়ে জ্বর। জলিল মিয়াকে না ডেকেই হাতের কাজ শেষ করে মেম্বারের বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলো হামিদা।

রাস্তায় মানুষ বলা বলি করছে মেম্বারের বাড়ি পুলিশ। হামিদা মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে শুনতে পেলো সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ করার কারনে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে মেম্বারকে।

তাড়াহুড়ো করে বাড়িতে আসলো হামিদা। ঘরে ঢুকেই হামিদা দেখলো, জলিল মিয়া রক্ত বমি করতেছে। শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। হামিদা কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। স্বামীকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে মানুষ ডাকছে। কেউ তাঁদের কাছে যাচ্ছে না। সবাই দূরে দাঁড়িয়ে আছে।

জলিল মিয়া বারবার শুধু বলছে, “আমার শ্বাস নিতি খুব কষ্ট হইতেছে হামিদা। আমারে একটু অক্সিজেন দে।” কয়েকবার বলার পরে হঠাৎ করে জলিল মিয়ার নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলো। মুহুর্তে যেন জলিল মিয়ার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলো। হামিদা তখন চিৎকার দিয়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো। জলিল মিয়ার নিথর দেহ জড়ায় ধরে হাউ মাউ করে কান্না করে বলছে, “আমার এখন কি হবে? আমার তো আর কিছুই রইলো না!”


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোর বিএনপির নেতৃত্বে হযরতকে দেখতে চাই তৃণমুল

error: Content is protected !!

গল্পঃ অসচেতন

আপডেট টাইম : ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুলাই ২০২১
মেহেদী হাসান :

রুমার আব্বা ঘরে চাল শেষ। সকালে রান্নার পরে চালের ডিব্বা একবারে খালি হইয়া যাইবো। জলিল মিয়া ভারী গলায় বললো, “কয়দিন ধরে শরীরটা খুব খারাপ। তিন দিন আগে মেম্বারের কাছে ভোটার আইডি জমা দিলাম সরকারি ত্রাণের লাইগে তারও কোনো খবর নাই।

এদিকে কামেও যাইতে পারছি না। কাল সকালে রিক্সা লইয়া বাইরামু। ” জলিল মিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বললো, “পোলা, মাইয়া দুইডা ঘুমায় পড়ছে?” হামিদা ভারী গলায় বললো, “হুম,চলেন আমরাও ঘুমাই। সকালে যদি আপনি আবার কাজে যাও। “হুম চলো।” হামিদা বিছানায় শুয়ে পড়লো।

হঠাৎ জলিল মিয়ার হাতের সাথে হামিদার হাতের স্পর্শ লাগলো। হামিদা সঙ্গে সঙ্গে চমকে উঠলো। থতমত খেয়ে হামিদা বললো, “জ্বরে দেখি তুমার শরীর পুড়ে যাচ্ছে।” জলিল মিয়া কাতর গলায় বললো, “হুম, কয়দিন ধরে গলাও বেশ ব্যাথা।

” কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে জলিল মিয়া আবার বললো, “রুমার মা,তুমি কাল সকালে একটু মেম্বারে বাড়ি যাইওতো।” “আচ্ছা যামুনি। আপনি ঘুমান ওহন” ভোর হয়ে গেছে।

চারপাশে পাখি ডাকছে। জলিল মিয়া তখনো ঘুমিয়ে আছে। গায়ে জ্বর। জলিল মিয়াকে না ডেকেই হাতের কাজ শেষ করে মেম্বারের বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলো হামিদা।

রাস্তায় মানুষ বলা বলি করছে মেম্বারের বাড়ি পুলিশ। হামিদা মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে শুনতে পেলো সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ করার কারনে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে মেম্বারকে।

তাড়াহুড়ো করে বাড়িতে আসলো হামিদা। ঘরে ঢুকেই হামিদা দেখলো, জলিল মিয়া রক্ত বমি করতেছে। শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। হামিদা কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। স্বামীকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে মানুষ ডাকছে। কেউ তাঁদের কাছে যাচ্ছে না। সবাই দূরে দাঁড়িয়ে আছে।

জলিল মিয়া বারবার শুধু বলছে, “আমার শ্বাস নিতি খুব কষ্ট হইতেছে হামিদা। আমারে একটু অক্সিজেন দে।” কয়েকবার বলার পরে হঠাৎ করে জলিল মিয়ার নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলো। মুহুর্তে যেন জলিল মিয়ার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলো। হামিদা তখন চিৎকার দিয়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো। জলিল মিয়ার নিথর দেহ জড়ায় ধরে হাউ মাউ করে কান্না করে বলছে, “আমার এখন কি হবে? আমার তো আর কিছুই রইলো না!”


প্রিন্ট