ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তুচ্ছ ঘটনায় মা-বাবা হারা কলেজ ছাত্রের গলায় ফাঁস Logo ইবি উপাচার্যকে ১০ লাখ টাকা ঘুষের প্রস্তাব, থানায় জিডি Logo কুষ্টিয়ায় হাসপাতাল কর্মচারীর বিরুদ্ধে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ Logo সাবেক ছাত্রদল অর্গানাইজেশন পর্তুগালের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ও ইফতার অনুষ্ঠিত Logo রমজানে পণ্য মূল্য সহনীয় রাখতে চরভদ্রাসনে বাজার মনিটরিং Logo বোয়ালমারীতে ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেল শান্তা Logo গোমস্তাপুরে মেসার্স নজরুল অটো রাইস মিলের উদ্যোগে ইফতার অনুষ্ঠিত Logo নোয়াখালীতে পুকুরে মিলল ১০ কেজি ইলিশ Logo হাতিয়ায় আর্থিক স্বাক্ষরতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo রাস্তায় ঘুরে ঘুরে নিম্ন আয়ের লোকেদের ইফতার সামগ্রী দিচ্ছেন সুমন রাফি
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

গল্পঃ অসচেতন

  • মেহেদী হাসান
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুলাই ২০২১
  • ২৮৬ বার পঠিত

রুমার আব্বা ঘরে চাল শেষ। সকালে রান্নার পরে চালের ডিব্বা একবারে খালি হইয়া যাইবো। জলিল মিয়া ভারী গলায় বললো, “কয়দিন ধরে শরীরটা খুব খারাপ। তিন দিন আগে মেম্বারের কাছে ভোটার আইডি জমা দিলাম সরকারি ত্রাণের লাইগে তারও কোনো খবর নাই।

এদিকে কামেও যাইতে পারছি না। কাল সকালে রিক্সা লইয়া বাইরামু। ” জলিল মিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বললো, “পোলা, মাইয়া দুইডা ঘুমায় পড়ছে?” হামিদা ভারী গলায় বললো, “হুম,চলেন আমরাও ঘুমাই। সকালে যদি আপনি আবার কাজে যাও। “হুম চলো।” হামিদা বিছানায় শুয়ে পড়লো।

হঠাৎ জলিল মিয়ার হাতের সাথে হামিদার হাতের স্পর্শ লাগলো। হামিদা সঙ্গে সঙ্গে চমকে উঠলো। থতমত খেয়ে হামিদা বললো, “জ্বরে দেখি তুমার শরীর পুড়ে যাচ্ছে।” জলিল মিয়া কাতর গলায় বললো, “হুম, কয়দিন ধরে গলাও বেশ ব্যাথা।

” কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে জলিল মিয়া আবার বললো, “রুমার মা,তুমি কাল সকালে একটু মেম্বারে বাড়ি যাইওতো।” “আচ্ছা যামুনি। আপনি ঘুমান ওহন” ভোর হয়ে গেছে।

চারপাশে পাখি ডাকছে। জলিল মিয়া তখনো ঘুমিয়ে আছে। গায়ে জ্বর। জলিল মিয়াকে না ডেকেই হাতের কাজ শেষ করে মেম্বারের বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলো হামিদা।

রাস্তায় মানুষ বলা বলি করছে মেম্বারের বাড়ি পুলিশ। হামিদা মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে শুনতে পেলো সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ করার কারনে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে মেম্বারকে।

তাড়াহুড়ো করে বাড়িতে আসলো হামিদা। ঘরে ঢুকেই হামিদা দেখলো, জলিল মিয়া রক্ত বমি করতেছে। শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। হামিদা কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। স্বামীকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে মানুষ ডাকছে। কেউ তাঁদের কাছে যাচ্ছে না। সবাই দূরে দাঁড়িয়ে আছে।

জলিল মিয়া বারবার শুধু বলছে, “আমার শ্বাস নিতি খুব কষ্ট হইতেছে হামিদা। আমারে একটু অক্সিজেন দে।” কয়েকবার বলার পরে হঠাৎ করে জলিল মিয়ার নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলো। মুহুর্তে যেন জলিল মিয়ার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলো। হামিদা তখন চিৎকার দিয়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো। জলিল মিয়ার নিথর দেহ জড়ায় ধরে হাউ মাউ করে কান্না করে বলছে, “আমার এখন কি হবে? আমার তো আর কিছুই রইলো না!”

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তুচ্ছ ঘটনায় মা-বাবা হারা কলেজ ছাত্রের গলায় ফাঁস

error: Content is protected !!

গল্পঃ অসচেতন

আপডেট টাইম : ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুলাই ২০২১

রুমার আব্বা ঘরে চাল শেষ। সকালে রান্নার পরে চালের ডিব্বা একবারে খালি হইয়া যাইবো। জলিল মিয়া ভারী গলায় বললো, “কয়দিন ধরে শরীরটা খুব খারাপ। তিন দিন আগে মেম্বারের কাছে ভোটার আইডি জমা দিলাম সরকারি ত্রাণের লাইগে তারও কোনো খবর নাই।

এদিকে কামেও যাইতে পারছি না। কাল সকালে রিক্সা লইয়া বাইরামু। ” জলিল মিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বললো, “পোলা, মাইয়া দুইডা ঘুমায় পড়ছে?” হামিদা ভারী গলায় বললো, “হুম,চলেন আমরাও ঘুমাই। সকালে যদি আপনি আবার কাজে যাও। “হুম চলো।” হামিদা বিছানায় শুয়ে পড়লো।

হঠাৎ জলিল মিয়ার হাতের সাথে হামিদার হাতের স্পর্শ লাগলো। হামিদা সঙ্গে সঙ্গে চমকে উঠলো। থতমত খেয়ে হামিদা বললো, “জ্বরে দেখি তুমার শরীর পুড়ে যাচ্ছে।” জলিল মিয়া কাতর গলায় বললো, “হুম, কয়দিন ধরে গলাও বেশ ব্যাথা।

” কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে জলিল মিয়া আবার বললো, “রুমার মা,তুমি কাল সকালে একটু মেম্বারে বাড়ি যাইওতো।” “আচ্ছা যামুনি। আপনি ঘুমান ওহন” ভোর হয়ে গেছে।

চারপাশে পাখি ডাকছে। জলিল মিয়া তখনো ঘুমিয়ে আছে। গায়ে জ্বর। জলিল মিয়াকে না ডেকেই হাতের কাজ শেষ করে মেম্বারের বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলো হামিদা।

রাস্তায় মানুষ বলা বলি করছে মেম্বারের বাড়ি পুলিশ। হামিদা মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে শুনতে পেলো সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ করার কারনে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে মেম্বারকে।

তাড়াহুড়ো করে বাড়িতে আসলো হামিদা। ঘরে ঢুকেই হামিদা দেখলো, জলিল মিয়া রক্ত বমি করতেছে। শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। হামিদা কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। স্বামীকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে মানুষ ডাকছে। কেউ তাঁদের কাছে যাচ্ছে না। সবাই দূরে দাঁড়িয়ে আছে।

জলিল মিয়া বারবার শুধু বলছে, “আমার শ্বাস নিতি খুব কষ্ট হইতেছে হামিদা। আমারে একটু অক্সিজেন দে।” কয়েকবার বলার পরে হঠাৎ করে জলিল মিয়ার নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলো। মুহুর্তে যেন জলিল মিয়ার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলো। হামিদা তখন চিৎকার দিয়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো। জলিল মিয়ার নিথর দেহ জড়ায় ধরে হাউ মাউ করে কান্না করে বলছে, “আমার এখন কি হবে? আমার তো আর কিছুই রইলো না!”