মোঃ নূর ই আলম (কাজী নূর):
“ন্যায্য ও সম্ভাবনাময় বিশ্বে পছন্দের পরিবার গড়তে প্রয়োজন তারুণ্যের ক্ষমতায়ন” এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে যশোরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ অমিত্রাক্ষরে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান করা হয়।
এবছর উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হয়েছে কেশবপুর উপজেলা
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লিনিক্যাল জন্মনিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সহকারী পরিচালক ডা. চন্দ্র শেখর কুন্ডু। পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাবিহা কবির।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক দিলদার হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ আজাহারুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা এবং প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার চৌগাছার আব্দুল হাই এবং পরিবার পরিকল্পনা সমিতি চৌগাছার আজিজুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিদিন যেসব খবর পড়ি বা দেখি, সেখানে নারী নির্যাতন, ইভটিজিং এবং ধর্ষণের খবর আসে। কিন্তু ধর্ষকের পারিবারিক বা সামাজিক পটভূমি প্রায়শই অনুপস্থিত থাকে। এটি অপরাধের কারণ নির্ণয় করাকে কঠিন করে তোলে। যার কর্মসংস্থান, শিক্ষা এবং নৈতিকতার প্রয়োজন তাকে তাই দিতে হবে। আমাদের সমাজে কেউ কেউ সন্তানের জন্য হাহাকার করছে, আবার কেউ কেউ পরিচয় দিতে পারবে না বলে সন্তানকে হত্যা করছে। একটি সুস্থ দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বর্তমান সমাজের অস্থিরতা প্রসঙ্গে বলেন, আজকাল আমরা প্রায়ই গণবিক্ষোভ তৈরি করে ‘বিচার করো, বিচার করো’ বলে আন্দোলন করছি। অতীতে সন্তান ও পরিবারের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল, যা এখন অনুপস্থিত। এই অস্থিরতা বৃদ্ধির কারণ হলো মানুষে মানুষে সামাজিক ও পারিবারিক দূরত্ব বৃদ্ধি। ভবিষ্যতে পৃথিবীতে আরও অস্থিরতা বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মীরা নতুন দম্পতিদের পাশাপাশি উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েদেরও পরামর্শ দেবেন, এটি তাদের দায়িত্ব। তিনি সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে এবং রাষ্ট্রের অর্থের সংকট আছে। আমাদের নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থেকে তা পালন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে জেলার মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠদের পুরস্কৃত করা হয়। এবছর শ্রেষ্ঠ হয়েছে যশোর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। শ্রেষ্ঠ বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (ক্লিনিক ভিত্তিক) হিসেবে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার মেরী স্টোপস ক্লিনিক নির্বাচিত হয়েছে। শ্রেষ্ঠ বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (কমিউনিটি ভিত্তিক) নির্বাচিত হয়েছে পরিবার পরিকল্পনা সমিতি যশোর। উপজেলা ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ হয়েছে কেশবপুর উপজেলা পরিষদ। ইউনিয়ন পরিষদ ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কেন্দ্রের মধ্যে চৌগাছা উপজেলার কুঠিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কেন্দ্র শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছে।
ব্যক্তিগত ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ সিনিয়র সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন চৌগাছার আব্দুল হাই। শ্রেষ্ঠ পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক নির্বাচিত হয়েছেন বাঘারপাড়ার মনিরুজ্জামান। শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা হয়েছেন চৌগাছার নাছিমা খাতুন এবং শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে একই উপজেলার নার্গিস পারভীন নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রিন্ট