জেলাল আহম্মদ রানা, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি’র স্বেচ্ছাচারিতা সহ ব্যাপক অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতির কারণে পরিষদের সদস্যসহ ইউনিয়নবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে WFP অর্থায়নে RDRS-এর তত্ত্বাবধানে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ২০৬০ মিটার নতুন রাস্তা নির্মাণে ১ কোটি ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল।
স্থানীয়দের দাবি, প্রকল্পের কাজ খুবই নিম্নমানের এবং নামমাত্র বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা RDRS-এর আরিফুল ইসলামসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানকে এই দুর্নীতিতে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি জনগণের অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যা পারেন করেন। অফিস ম্যানেজ মানেই সব ম্যানেজ।”
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, চেয়ারম্যানের একনায়কতান্ত্রিক আচরণ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। তারা বলেন, “দেশের ফ্যাসিস্ট শাসন শেষ হলেও আমাদের ইউনিয়নে এখনো ফ্যাসিস্ট শাসন চলমান। WFP প্রকল্পের নামে জনগণের প্রাপ্য সুবিধা লুটপাট করা হয়েছে।”
বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন বলেন, “আমি গত টার্মে চেয়ারম্যান ছিলাম। এবার নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর আসাদুজ্জামান রনি আমার পরিবারের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। তার লোকজনের হামলায় আমার পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আছে। এমনকি আমার ছোট ভাইকে হারিয়েছি। কিন্তু কোথাও সুবিচার পাইনি।”
এলাকার সচেতন মহলের লোকজন জানান, তার আমলে টিআর, কাবিখা/কাবিটা, জি আর, ভিজিডি, এডিবি, এলজিএসপি, ননওয়েজ, লজিক, ইজিপিপি, পরিষদের রাজস্ব খোযাড়-খেয়া ইজারার অর্থ, ইউপি ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ফি নিজের খেয়ালখুশি মতো ব্যবহার করে থাকেন।
চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি’র বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা চান, ইউনিয়ন পরিষদে সুশাসন ফিরিয়ে আনা হোক এবং প্রকল্পগুলোতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হোক। এই বিষয়ে চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি’র সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা ও জেলা প্রশাসন দ্রুত তদন্ত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে প্রত্যাশা করছেন বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের জনগণ।
প্রিন্ট