ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার
পাবনার ঈশ্বরদীতে গাজরের ফলন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও আগের চেয়ে ভালো হচ্ছে, এবং গাজরের স্বাদের গুণে এ এলাকার চাহিদা প্রচুর। গাজর চাষে ঈশ্বরদীর অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালাই কম, স্বল্প শ্রম, উৎপাদন বেশি এবং দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে গাজর চাষে আগ্রহ বেড়েছে। কম খরচে গাজর চাষ করে ভালো লাভ পাওয়ায় কৃষকরা বছরে দুইবার গাজর চাষ শুরু করেছেন। চলতি মৌসুমে গাজরের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ৮৪০ টন নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, গাজরের বীজ বপনের ৩ মাসের মধ্যে ফসল তোলা সম্ভব হয়। এক বিঘা জমিতে গাজর চাষের খরচ ৪০-৫০ হাজার টাকা, আর চাষিরা গাজর বিক্রি করে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকাও আয় করতে পারেন। ফলে খরচ বাদে প্রতি বিঘায় কৃষকরা ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছেন।
এবার ঈশ্বরদীতে ৯২০ হেক্টর জমিতে গাজর চাষ হয়েছে। প্রতি বছর গাজরের চাহিদা বাড়ছে এবং দাম ভালো হওয়ায় আবাদও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছর ৯১০ হেক্টর জমিতে গাজরের আবাদ হয়েছিল। ঈশ্বরদীর ৭টি ইউনিয়নে গাজরের আবাদ হলেও, লক্ষিকুন্ডা, সাহাপুর এবং সলিমপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়ে থাকে।
জাতীয় পদকপ্রাপ্ত গাজরচাষি জাহিদুল ইসলাম (গাজর জাহিদ) বছরে দুইবার গাজর চাষ করেন। এবারে তিনি ৯০ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছেন। তিনি জানান, “আগে এক বিঘা জমিতে খরচ হতো ৪০-৫০ হাজার টাকা, তবে এবার খরচ বেড়ে প্রায় ৬০ হাজার টাকা হয়েছে। বীজ, সারসহ সব খরচ বেড়েছে, তবে লাভ অনেক বেশি। কৃষকরা জমিতে থাকতেই গাজর বিক্রি করতে পারেন।”
বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ জানান, “ঈশ্বরদীর গাজরের চাহিদা বেশি এবং পানির পরিমাণ কম হওয়ায় ১০-১২ দিন পর্যন্ত দোকানে রেখে বিক্রি করা যায়। তবে, সারা দেশে গাজর সংরক্ষণাগারের অভাব থাকায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।”
আরও পড়ুনঃ ভুল ও সরল মনকে দায়ী করে ২০ লাখ টাকাসহ বিমান বন্দরে আটকের ব্যাখা দিলেন যমেক অধ্যক্ষ
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, ঈশ্বরদীর মাটি ও আবহাওয়া গাজর চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বেলে, দোঁ-আশ মাটি ও সমতল জমিতে গাজর চাষ ভালো হয়। এখানকার কৃষকরা এবার জাপানি জাতের গাজরও চাষ করছেন। পুষ্টিকর এবং লাভজনক এই সবজি প্রতিবছর কৃষকদের আয়ের অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রিন্ট