আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দিঘা প্রত্যন্ত গ্রাম । দুপুর থেকেই গ্রামের স্কুল মাঠকে ঘিরে শত শত নানা বয়সী নারী–পুরুষের ভিড়। দুই দল নারী ফুটবলারের প্রীতি ম্যাচ দেখতে এই ভিড়। তাও আবার ৩০ টাকা করে টিকিট কেটে খেলা দেখেছেন দর্শনার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২১নভেম্বর)বিকেলে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা ফুটবল দল ও নারায়ণগঞ্জ মহিলা ফুটবল দল এই ম্যাচে অংশ নেন। দিঘা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে নারী ফুটবলারদের প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করে দিঘা তরুণ সংঘ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কদিন ধরে অটো ভ্যান গাড়ীতে ব্যান্ড দল বাজনা বাজিয়ে মাইকিং করে রঙিন প্রচ্ছদে পোষ্টার সাটিয়ে খেলার খবর প্রচার করা হয়েছে। অজপাড়াগাঁয়ে নারীদের ফুটবল খেলাকে ঘিরে দিঘা ছাড়াও উৎসাহ ছিল আশপাশের অন্তত ১০ গ্রামের মানুষের মধ্যে। দুপুর থেকে ঘেরা স্কুল মাঠের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হতে থাকেন উৎসুক দর্শনার্থীরা।
খেলা শুরুর ১ ঘণ্টা আগে থেকে ৩০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে দর্শনার্থীরা মাঠে ঢোকেন। অনেক দর্শনার্থী মাঠে প্রবেশের টাকা দিয়ে চেয়ার সংগ্রহ করেন। তবে তাঁদের মধ্যে নারী দর্শক ছিলেন। মাঠের বাইরে শত শত মানুষের আনাগোনায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। নানা রকম মুখরোচক খাবারের দোকান বসে। রীতিমতো মেলার আয়োজন।
খেলা চলাকালে দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। খেলা শেষ হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে। খেলায় ঠাকুরগাঁও জেলা ফুটবল দল, নারায়নগঞ্জ নারী ফুটবল দল ২-২ গোলে সমতা।পরে নারায়নগঞ্জ জেলা মহিলা দল ট্রাবেকারে ০৬- ০৫ ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা দল পরাজিত করে। খেলা শেষে উভয় দলকে ট্রফি দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
নারায়নগঞ্জ জেলা ফুটবল দলের অধিনায়ক রাত্রী খাতুন বলেন, ‘এ ধরনের প্রীতি ম্যাচ গ্রামের মধ্যে আয়োজন করায় আমরা উৎসাহবোধ করছি। কারণ, গ্রামের মানুষের কাছে ফুটবল এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। আমাদের খেলা বেশ উপভোগ করেছেন তাঁরা ।’
ঠাকুরগাঁও জেলা ফুটবল নারী দলের অধিনায়ক সোহাগী খাতুন বলেন, উৎকর্ষ সাধনে নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা নিরলসভাবে কাজ করছেন। আজকের ম্যাচ আয়োজন তারই একটা অংশ।
নারী ফুটবলারদের প্রীতি ম্যাচ দেখতে স্কুল মাঠের বাইরে দর্শকদের ভিড়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দিঘা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে নারি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। নারি প্রীতি ফুটবল খেলাটি সাবলীল কন্ঠে অারো বেশী আকর্ষণীয় করতে ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব ছিলেন প্রভাষক সিরাজুল ইসলাম খোকন, কামাল পাশা ও জিন্নাহ সরকার।
প্রাইজমানি ফুটবল টুনামেন্ট কমিটির সভাপতি ও দিঘা তরুণ সংঘের সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও খেলোয়াড়দের খরচের জন্য ৩০ টাকা করে টিকিট নির্ধারণ করা হয়েছিল। এতে কেউ মনঃক্ষুণ্ন হননি। বরং সবাই টিকিট কেটে খেলা দেখেছেন। দর্শনার্থীদের মধ্যে আনন্দ–উচ্ছ্বাস ছিল।
আরও পড়ুনঃ ভেড়ামারায় ভুয়া ডাক্তার গ্রেপ্তার, জেল-জরিমানা
দিঘা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম জানান, তাঁর বিদ্যালয়ের মাঠে নারী ফুটবল দলের খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় তিনি গর্ববোধ করছেন। এ খেলার মধ্য দিয়ে গ্রামের মেয়েরা ফুটবল খেলায় অনুপ্রাণিত হবে আমার বিশ্বাস ।
প্রিন্ট