ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কাশিয়ানী নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানীর অভিযোগ

লিয়াকত হোসেন লিংকন, স্টাফ রিপোর্টার

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্ব্যবহার, কটুক্তি ও হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউএনও সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সাকিব সরদার নামে এক ভূক্তভোগী অভিযোগ দিয়েছেন।

 

ওই  লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ফুকরা গ্রামের বাসিন্দা সাকিব সৌদি আরব যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে ভোটার হওয়ার জন্য গত এক মাস আগে অনলাইনে আবেদন করেন। সেই আবেদন ফরম, ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন সনদ, অঙ্গীকারনামা, পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট, ট্যাক্স পরিশোধের ডকুমেন্ট, বিদ্যুৎ বিলের কপি ও চেয়ারম্যানের নাগরিকত্বের সনদ সহ নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসুর কাছে জমা দেন।

 

এ সময় নির্বাচন কর্মকর্তা যাচাইয়ের জন্য সাকিবের কাছে তার নাম ও বয়স জেনে আবেদন ফাইলে ‘লাল দাগ’ দিয়ে বাতিল করে দেন। পরবর্তীতে গত ১৩ নভেম্বর সাকিব পুনরায় আবেদন ফরম সহ একই কাগজ পত্র নতুন করে নিয়ে ওই কর্মকর্তার কাছে যান। তিনি সাকিবকে দেখেই বলেন, ‘তোমার বয়স হয়নি। তুমি কম্পিউটারে জাল কাগজ পত্র তৈরী করে নিয়ে এসেছো। আমি শুধু কাগজ পত্র দেখে যাচাই করি না। ফেস দেখেও বয়স যাচাই করি।’ এক পর্যায় তিনি সাকিবকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে অসদাচরণ করেন ও ধমক দিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।

 

শুধু সাকিব সরদারই নয়, কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাচন অফিসে সেবা নিতে গিয়ে এমন হয়রানীর শিকার হয়েছেন অনেক সেবা প্রত্যাশী। প্রতিদিনই নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসুর সাথে সেবা প্রত্যাশীদের ঘটছে বাক-বিতন্ডা।

 

ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয় পত্রের ভুল সংশোধন, ভোটার স্থানান্তর, নতুন ভোটার হওয়া সহ অন্যান্য সেবা প্রত্যাশীদের অহেতুক হয়রানী করেন নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসু। নিজেকে সৎ ও নীতিবান কর্মকর্তা দাবি করে ‘বৈধ ’কাগজ পত্রকে অবৈধ বলে বাতিল করে দেন। তিনি নিজের ইচ্ছা মতো নতুন ভোটারের আবেদন পত্র সপ্তাহে একদিন জমা নেন। এতে দুর-দুরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বছরের পর বছর অভিযোগ পড়ে  থাকলেও, সেবাপ্রত্যাশীরা অফিসে গিয়ে খোঁজ না নিলে তিনি ওই বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তে যান না।

 

এভাবে অফিসে দীর্ঘদিন ধরে অসংখ্য তদন্ত পড়ে আছে। নির্বাচন কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতায় সময় মতো আবেদন করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্তি হতেনা পেরে বিদেশ যেতে পারছেন না অনেক যুবক। নির্বাচন কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ সেবা প্রত্যাশীরা।

 

এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে বিগত সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীদের নির্দেশে প্রিজাইডিং, সহকারি প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া ও এসব কর্মকর্তাদের সাথে খারাপ আচরণের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

 

আরও পড়ুনঃ সাড়ে তিনশ কোটি টাকা খেলাপির দায়ে বোয়ালমারীর গোল্ডেন জুট মিল নিলামে

 

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার কার্যালয় গেলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় দিতেই রেগে যান। তিনি বলেন, ‘আমার এখানে এসে সাংবাদিক পরিচয়  দিবেন না। আমি অনিয়ম-দুর্নীতি করি না। আমি সাংবাদিকদের ভয় পাইনা। আমি আপনাদের কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজিনা। আমি আমার কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করবো।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরের গোল্লাপাড়া বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন

error: Content is protected !!

কাশিয়ানী নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানীর অভিযোগ

আপডেট টাইম : ১৬ ঘন্টা আগে
লিয়াকত হোসেন লিংকন, স্টাফ রিপোর্টার :

লিয়াকত হোসেন লিংকন, স্টাফ রিপোর্টার

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্ব্যবহার, কটুক্তি ও হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউএনও সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সাকিব সরদার নামে এক ভূক্তভোগী অভিযোগ দিয়েছেন।

 

ওই  লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ফুকরা গ্রামের বাসিন্দা সাকিব সৌদি আরব যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে ভোটার হওয়ার জন্য গত এক মাস আগে অনলাইনে আবেদন করেন। সেই আবেদন ফরম, ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন সনদ, অঙ্গীকারনামা, পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট, ট্যাক্স পরিশোধের ডকুমেন্ট, বিদ্যুৎ বিলের কপি ও চেয়ারম্যানের নাগরিকত্বের সনদ সহ নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসুর কাছে জমা দেন।

 

এ সময় নির্বাচন কর্মকর্তা যাচাইয়ের জন্য সাকিবের কাছে তার নাম ও বয়স জেনে আবেদন ফাইলে ‘লাল দাগ’ দিয়ে বাতিল করে দেন। পরবর্তীতে গত ১৩ নভেম্বর সাকিব পুনরায় আবেদন ফরম সহ একই কাগজ পত্র নতুন করে নিয়ে ওই কর্মকর্তার কাছে যান। তিনি সাকিবকে দেখেই বলেন, ‘তোমার বয়স হয়নি। তুমি কম্পিউটারে জাল কাগজ পত্র তৈরী করে নিয়ে এসেছো। আমি শুধু কাগজ পত্র দেখে যাচাই করি না। ফেস দেখেও বয়স যাচাই করি।’ এক পর্যায় তিনি সাকিবকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে অসদাচরণ করেন ও ধমক দিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।

 

শুধু সাকিব সরদারই নয়, কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাচন অফিসে সেবা নিতে গিয়ে এমন হয়রানীর শিকার হয়েছেন অনেক সেবা প্রত্যাশী। প্রতিদিনই নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসুর সাথে সেবা প্রত্যাশীদের ঘটছে বাক-বিতন্ডা।

 

ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয় পত্রের ভুল সংশোধন, ভোটার স্থানান্তর, নতুন ভোটার হওয়া সহ অন্যান্য সেবা প্রত্যাশীদের অহেতুক হয়রানী করেন নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসু। নিজেকে সৎ ও নীতিবান কর্মকর্তা দাবি করে ‘বৈধ ’কাগজ পত্রকে অবৈধ বলে বাতিল করে দেন। তিনি নিজের ইচ্ছা মতো নতুন ভোটারের আবেদন পত্র সপ্তাহে একদিন জমা নেন। এতে দুর-দুরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বছরের পর বছর অভিযোগ পড়ে  থাকলেও, সেবাপ্রত্যাশীরা অফিসে গিয়ে খোঁজ না নিলে তিনি ওই বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তে যান না।

 

এভাবে অফিসে দীর্ঘদিন ধরে অসংখ্য তদন্ত পড়ে আছে। নির্বাচন কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতায় সময় মতো আবেদন করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্তি হতেনা পেরে বিদেশ যেতে পারছেন না অনেক যুবক। নির্বাচন কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ সেবা প্রত্যাশীরা।

 

এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে বিগত সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীদের নির্দেশে প্রিজাইডিং, সহকারি প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া ও এসব কর্মকর্তাদের সাথে খারাপ আচরণের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

 

আরও পড়ুনঃ সাড়ে তিনশ কোটি টাকা খেলাপির দায়ে বোয়ালমারীর গোল্ডেন জুট মিল নিলামে

 

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার কার্যালয় গেলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় দিতেই রেগে যান। তিনি বলেন, ‘আমার এখানে এসে সাংবাদিক পরিচয়  দিবেন না। আমি অনিয়ম-দুর্নীতি করি না। আমি সাংবাদিকদের ভয় পাইনা। আমি আপনাদের কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজিনা। আমি আমার কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করবো।’


প্রিন্ট