বিএনপির সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে আলোচনা করেছেন নীতিনির্ধারকরা। নেতারা বলেছেন, জামায়াত বিএনপির কৌশলগত মিত্র ছিল। জোট বিলুপ্ত হওয়ার পর সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনেও জামায়াত বিএনপির সঙ্গে ছিল। হাসিনার পতন হয়েছে। দৃশ্যত জামায়াত ও বিএনপির রাজনীতি এখন এক নয়। একটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আরেকটা রাজনৈতিক দলের যে সম্পর্ক থাকে, এখন দল দুটির সম্পর্ক সে রকমই। আগামী সংসদ নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কৌশলগত থাকবে। সম্পর্কের দূরত্ব ঘোচাতে উদ্যোগী হবে না বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করে জানান, ধারণা করা হচ্ছিল ৫ আগস্টে রাজনীতির হিসাবনিকাশ পাল্টে গেছে। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। একটি মহল পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। পাশের একটি দেশ তাদের সহযোগিতা করছে বলে ধারণা। এখন জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্বের কথা প্রকাশ্যে এলে আওয়ামী লীগ ও অন্য মহলগুলো এর সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। বিএনপি সে সুযোগ দিতে চাইছে না। তাই জামায়াতের সঙ্গে একাধিক ইস্যুতে মতানৈক্য হলেও প্রকাশ্যে কিছু না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জামায়াত প্রায় দুই যুগের জোটসঙ্গী। তারা নির্যাতিত নিঃসন্দেহে। তবে তারা এ দেশ স্বাধীন করেনি, আমরা করেছি। তারা যদি মনে করে, রাজনীতির মাঠে একচ্ছত্র আধিপত্য করবে, তারা তা করতেই পারে। আমরা আমাদের রাজনীতি করব।’
বিএনপির এ অবস্থানের ব্যাখ্যায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ মাঠে নেই। রাজনীতির মাঠ প্রায় ফাঁকা। জামায়াত এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়েছে। তারা ফাঁকা জায়গায় বড় শক্তি হিসেবে হাজির হতে চাইছে। কিন্তু এতে ভোটের রাজনীতিতে বড় প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। জামায়াতের ভোটব্যাংক খুব বাড়বে না। বাংলাদেশের ভোট মূলত বিএনপি ও আওয়ামী লীগে বিভক্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে এবং আওয়ামী লীগ অংশ নিলে তারা অল্প আসন পেলেও অনেক ভোট পাবে। আর জামায়াতে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে জোট করলে হয়তো তাদের আসন কিছু বাড়বে। কিন্তু ভোটের শতকরা হারে খুব একটা হেরফের হবে না।