ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শালিখায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে হাইব্রিড ধানের বীজ বিতরণ Logo বাইসাইকেল নিয়ে সেতুর উপরে ঘুরতে গিয়ে প্রাণ গেলাে শুভ’র Logo রাজশাহী-১ আসনে বিএনপি’র গোছানো মাঠ নষ্টের চেষ্টা Logo রাজশাহীতে আনসার ও ভিডিপি’র মতবিনিময় সভা Logo ফরিদপুরে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo শ্যামনগরে নারীদের এবং স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে সংবেদনশীল কর্মশালা Logo বাঘায় আনিসুরকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার রায়হানের Logo কালুখালীতে বিএনপি’র প্রতিবাদ সমাবেশ Logo জুলাই গণঅভুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে বাগাতিপাড়ায় স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত Logo গোয়ালন্দে মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে ফুটবল প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মুজিব বর্ষের আশ্রয়ন প্রকল্প-২ ফরিদপুরে ১৫শ ৭২ পরিবার গৃহের ঠিকানার অপেক্ষায়

সরকার ঘোষিত ‘মুর্জিব শতবর্ষে থাকবে না কেনো গৃহহীন’। এই লক্ষে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২ এর আওতায় এবার ফরিদপুরের ১৫৭২ পরিবারের গৃহহীনের অভাব ঘুচবে। আগামী ২০ জুন সারা দেশের সঙ্গে এক যোগে গৃহগুলো হস্তান্তর করবে সরকার প্রধান।

এই প্রকল্পের অধিনে জেলা নয় উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ১৫৭২টি ঘর। যার অধিকাংশই সম্পন্ন হয়েছে। আর এই কাজ তদারকিতে ব্যস্থ সময় পার করছে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা,স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুনছে সুবিধা ভোগীরা। ইতি মধ্যেই এই সুবিধা ভোগীদের চুড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ‘মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য উপহার স্বরুপ এসকল আশ্রয়স্থল করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন উপজেলাতে উপকার ভোগীদের মাঝে এই ঘর প্রাপ্তির খবরে আনন্দের ঝিলিক দেখতে পেয়েছি, তাদের এই আনন্দ অশ্রæ আমাদের আগামীর পথচলা প্রেরণা হয়ে থাকবে। আমাদের কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে কাজটিকে এগিয়ে নিতে।’
তিনি জানান, ‘প্রথম পর্যায়ে ঘর দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৩৫টি পরিবারকে এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে দেওয়া হবে ১৫শ ৭২টি’।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানায়, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই টাকায় তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২.৮ ফুট প্রস্থের পাকা ঘরে রয়েছে দু’টি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। এছাড়াও রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবারের বিশেষ সংযোজন করা হয়েছে প্রতিটি ঘরে সামনে চারটি করে ফলজ বৃক্ষ রোপন।

ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা সরকারের এই উদ্যোগের বিষয়ে বলেন, ‘গৃহহীন-হতদরিদ্রদের নিয়ে ইতিপূর্বে কোন সরকার এমনি ভাবে ভাবেনি। এই কাজ সারা বিশ্বের জন্য মডেল হব।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যে ভাবে দেশ নিয়ে ভেবেছেন, আজ তার কন্যা সে দেশের দরিদ্র মানুষ গুলোকে নিয়ে ভাবছেন’।

জেলায় আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ৩৩ একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে ‘স্বপ্ন নগর’। এই উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ এলাহী জানান, দেশের মধ্যে অন্যতম মডেল হিসাবে আলফাডাঙ্গার এ আশ্রয়ন প্রকল্পটি ধরা হচ্ছে। ৩৩ একর জমির উপর এ প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বপ্ন নগর’।

তিনি জানান, ‘এটি শুধুমাত্র আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মানই নয়, এখানে থাকছে কমিউনিটি হাসপাতাল, স্কুল,মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির, হাট-বাজার, কবরস্থান, খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্রসহ বসবাসকারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। এ স্বপ্ন নগরে ২৫০টি ঘর নির্মান করা হচ্ছে। যা সারাদেশের মধ্যে মডেল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।’
এই প্রকল্পের ঘর পাওয়া রাসেল-স্বপ্না দম্পত্তি জানান, ‘তিন বার মধুমতি নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ি নদীর গর্ভে চলে গেছে। কোন উপায় না পেয়ে সরকারি রাস্তার পাশে ঘর করে বসবাস করতা। কখনো কল্পনা করিনি আবার নিজেদের ঘর হবে। সরকার প্রধানকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখুক। আমি অনেক খুশি।’

স্বপ্ন নগরের আরেক নতুন বাসিন্দা সুনিল রায় ও যমুনা দম্পত্তি তার ভগবানের কাছে শেখ হাসিনার জন্য আশির্বাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। এখন নিজের ঘর ও জমি পেয়েছি, এর চেয়ে খুশি আর কিভাবে হওয়া যায়।’

এদিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছি কাজে মান ঠিক রাখতে। এ কারেন দৈনন্দিন কাজে মাঝেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে সব সময়।’
তিনি বলেন, ‘এতো কষ্ট করার পরে যখন হতদরিদ্র এই সুবিধাভোগীদের মুখে হাসি দেখি তখন আমাদের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শালিখায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে হাইব্রিড ধানের বীজ বিতরণ

error: Content is protected !!

মুজিব বর্ষের আশ্রয়ন প্রকল্প-২ ফরিদপুরে ১৫শ ৭২ পরিবার গৃহের ঠিকানার অপেক্ষায়

আপডেট টাইম : ০৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
ফরিদপুর অফিসঃ :

সরকার ঘোষিত ‘মুর্জিব শতবর্ষে থাকবে না কেনো গৃহহীন’। এই লক্ষে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২ এর আওতায় এবার ফরিদপুরের ১৫৭২ পরিবারের গৃহহীনের অভাব ঘুচবে। আগামী ২০ জুন সারা দেশের সঙ্গে এক যোগে গৃহগুলো হস্তান্তর করবে সরকার প্রধান।

এই প্রকল্পের অধিনে জেলা নয় উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ১৫৭২টি ঘর। যার অধিকাংশই সম্পন্ন হয়েছে। আর এই কাজ তদারকিতে ব্যস্থ সময় পার করছে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা,স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুনছে সুবিধা ভোগীরা। ইতি মধ্যেই এই সুবিধা ভোগীদের চুড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ‘মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য উপহার স্বরুপ এসকল আশ্রয়স্থল করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন উপজেলাতে উপকার ভোগীদের মাঝে এই ঘর প্রাপ্তির খবরে আনন্দের ঝিলিক দেখতে পেয়েছি, তাদের এই আনন্দ অশ্রæ আমাদের আগামীর পথচলা প্রেরণা হয়ে থাকবে। আমাদের কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে কাজটিকে এগিয়ে নিতে।’
তিনি জানান, ‘প্রথম পর্যায়ে ঘর দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৩৫টি পরিবারকে এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে দেওয়া হবে ১৫শ ৭২টি’।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানায়, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই টাকায় তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২.৮ ফুট প্রস্থের পাকা ঘরে রয়েছে দু’টি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। এছাড়াও রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবারের বিশেষ সংযোজন করা হয়েছে প্রতিটি ঘরে সামনে চারটি করে ফলজ বৃক্ষ রোপন।

ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা সরকারের এই উদ্যোগের বিষয়ে বলেন, ‘গৃহহীন-হতদরিদ্রদের নিয়ে ইতিপূর্বে কোন সরকার এমনি ভাবে ভাবেনি। এই কাজ সারা বিশ্বের জন্য মডেল হব।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যে ভাবে দেশ নিয়ে ভেবেছেন, আজ তার কন্যা সে দেশের দরিদ্র মানুষ গুলোকে নিয়ে ভাবছেন’।

জেলায় আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ৩৩ একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে ‘স্বপ্ন নগর’। এই উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ এলাহী জানান, দেশের মধ্যে অন্যতম মডেল হিসাবে আলফাডাঙ্গার এ আশ্রয়ন প্রকল্পটি ধরা হচ্ছে। ৩৩ একর জমির উপর এ প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বপ্ন নগর’।

তিনি জানান, ‘এটি শুধুমাত্র আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মানই নয়, এখানে থাকছে কমিউনিটি হাসপাতাল, স্কুল,মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির, হাট-বাজার, কবরস্থান, খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্রসহ বসবাসকারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। এ স্বপ্ন নগরে ২৫০টি ঘর নির্মান করা হচ্ছে। যা সারাদেশের মধ্যে মডেল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।’
এই প্রকল্পের ঘর পাওয়া রাসেল-স্বপ্না দম্পত্তি জানান, ‘তিন বার মধুমতি নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ি নদীর গর্ভে চলে গেছে। কোন উপায় না পেয়ে সরকারি রাস্তার পাশে ঘর করে বসবাস করতা। কখনো কল্পনা করিনি আবার নিজেদের ঘর হবে। সরকার প্রধানকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখুক। আমি অনেক খুশি।’

স্বপ্ন নগরের আরেক নতুন বাসিন্দা সুনিল রায় ও যমুনা দম্পত্তি তার ভগবানের কাছে শেখ হাসিনার জন্য আশির্বাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। এখন নিজের ঘর ও জমি পেয়েছি, এর চেয়ে খুশি আর কিভাবে হওয়া যায়।’

এদিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছি কাজে মান ঠিক রাখতে। এ কারেন দৈনন্দিন কাজে মাঝেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে সব সময়।’
তিনি বলেন, ‘এতো কষ্ট করার পরে যখন হতদরিদ্র এই সুবিধাভোগীদের মুখে হাসি দেখি তখন আমাদের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।’


প্রিন্ট