সরকার ঘোষিত ‘মুর্জিব শতবর্ষে থাকবে না কেনো গৃহহীন’। এই লক্ষে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২ এর আওতায় এবার ফরিদপুরের ১৫৭২ পরিবারের গৃহহীনের অভাব ঘুচবে। আগামী ২০ জুন সারা দেশের সঙ্গে এক যোগে গৃহগুলো হস্তান্তর করবে সরকার প্রধান।
এই প্রকল্পের অধিনে জেলা নয় উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ১৫৭২টি ঘর। যার অধিকাংশই সম্পন্ন হয়েছে। আর এই কাজ তদারকিতে ব্যস্থ সময় পার করছে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা,স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুনছে সুবিধা ভোগীরা। ইতি মধ্যেই এই সুবিধা ভোগীদের চুড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ‘মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য উপহার স্বরুপ এসকল আশ্রয়স্থল করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন উপজেলাতে উপকার ভোগীদের মাঝে এই ঘর প্রাপ্তির খবরে আনন্দের ঝিলিক দেখতে পেয়েছি, তাদের এই আনন্দ অশ্রæ আমাদের আগামীর পথচলা প্রেরণা হয়ে থাকবে। আমাদের কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে কাজটিকে এগিয়ে নিতে।’
তিনি জানান, ‘প্রথম পর্যায়ে ঘর দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৩৫টি পরিবারকে এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে দেওয়া হবে ১৫শ ৭২টি’।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানায়, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই টাকায় তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২.৮ ফুট প্রস্থের পাকা ঘরে রয়েছে দু’টি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। এছাড়াও রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবারের বিশেষ সংযোজন করা হয়েছে প্রতিটি ঘরে সামনে চারটি করে ফলজ বৃক্ষ রোপন।
ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা সরকারের এই উদ্যোগের বিষয়ে বলেন, ‘গৃহহীন-হতদরিদ্রদের নিয়ে ইতিপূর্বে কোন সরকার এমনি ভাবে ভাবেনি। এই কাজ সারা বিশ্বের জন্য মডেল হব।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যে ভাবে দেশ নিয়ে ভেবেছেন, আজ তার কন্যা সে দেশের দরিদ্র মানুষ গুলোকে নিয়ে ভাবছেন’।
জেলায় আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ৩৩ একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে ‘স্বপ্ন নগর’। এই উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ এলাহী জানান, দেশের মধ্যে অন্যতম মডেল হিসাবে আলফাডাঙ্গার এ আশ্রয়ন প্রকল্পটি ধরা হচ্ছে। ৩৩ একর জমির উপর এ প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বপ্ন নগর’।
তিনি জানান, ‘এটি শুধুমাত্র আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মানই নয়, এখানে থাকছে কমিউনিটি হাসপাতাল, স্কুল,মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির, হাট-বাজার, কবরস্থান, খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্রসহ বসবাসকারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। এ স্বপ্ন নগরে ২৫০টি ঘর নির্মান করা হচ্ছে। যা সারাদেশের মধ্যে মডেল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।’
এই প্রকল্পের ঘর পাওয়া রাসেল-স্বপ্না দম্পত্তি জানান, ‘তিন বার মধুমতি নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ি নদীর গর্ভে চলে গেছে। কোন উপায় না পেয়ে সরকারি রাস্তার পাশে ঘর করে বসবাস করতা। কখনো কল্পনা করিনি আবার নিজেদের ঘর হবে। সরকার প্রধানকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখুক। আমি অনেক খুশি।’
স্বপ্ন নগরের আরেক নতুন বাসিন্দা সুনিল রায় ও যমুনা দম্পত্তি তার ভগবানের কাছে শেখ হাসিনার জন্য আশির্বাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। এখন নিজের ঘর ও জমি পেয়েছি, এর চেয়ে খুশি আর কিভাবে হওয়া যায়।’
এদিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছি কাজে মান ঠিক রাখতে। এ কারেন দৈনন্দিন কাজে মাঝেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে সব সময়।’
তিনি বলেন, ‘এতো কষ্ট করার পরে যখন হতদরিদ্র এই সুবিধাভোগীদের মুখে হাসি দেখি তখন আমাদের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।’
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha