ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ঠাকুরগাঁওয়ে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে কৃষকদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে ঠাকুরগাঁওয়ে আমনের পাকা ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য। ঘরে তোলার সময় ধানগাছ নুয়ে পড়ায় কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

 

আজ শুক্রবার সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে অনেক খেতে পাকা ও আধা পাকা ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। খেত থেকে পানি সরে না যাওয়ায় কেটে রাখা ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া শীতকালীন আগাম সবজির খেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

সদর উপজেলার সালান্দর এলাকার কৃষক আলী হোসেন বলেন, “আকাশ ভালো থাকায় জমিতে পাকা ধান কেটে রেখেছিলাম শুকানোর জন্য। কিন্তু গত দুই দিন বৃষ্টি হওয়ায় এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছি।”

 

অন্যদিকে, সালান্দর এলাকার কৃষক সামিউল ইসলাম জানান, “গত বছর ধানের ভালো দাম পাননি। এ নিয়ে হতাশায় ছিলেন। গত সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু এখন ঝড়-বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।”

 

সদরের রায়পুর এলাকার কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, “বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে ইতিমধ্যে চরম ক্ষতি হয়ে গেছে। এক একর জমিতে আগে প্রায় ৪০ মণ ধান পাওয়া যেত, এখন সেখানে ৩০ মণও আসতে পারে।”

 

নতুনপাড়া এলাকার কৃষক মনসুর আলী জানিয়েছেন, তিনি ১২ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। ইতিমধ্যে চার বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছেন, কিন্তু আট বিঘার অধিকাংশ খেতের ধানগাছ নুয়ে পড়েছে।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় চলতি বছর আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে, যার মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে।

 

 

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে যেসব খেতের ধানগাছ নুয়ে পড়েছে, সেসব ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। বৃষ্টি আর না হলে ধানের বেশি ক্ষতি হবে না।”


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

ঠাকুরগাঁওয়ে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে কৃষকদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

আপডেট টাইম : ০৪:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
মোঃ জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি :

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে ঠাকুরগাঁওয়ে আমনের পাকা ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য। ঘরে তোলার সময় ধানগাছ নুয়ে পড়ায় কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

 

আজ শুক্রবার সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে অনেক খেতে পাকা ও আধা পাকা ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। খেত থেকে পানি সরে না যাওয়ায় কেটে রাখা ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া শীতকালীন আগাম সবজির খেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

সদর উপজেলার সালান্দর এলাকার কৃষক আলী হোসেন বলেন, “আকাশ ভালো থাকায় জমিতে পাকা ধান কেটে রেখেছিলাম শুকানোর জন্য। কিন্তু গত দুই দিন বৃষ্টি হওয়ায় এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছি।”

 

অন্যদিকে, সালান্দর এলাকার কৃষক সামিউল ইসলাম জানান, “গত বছর ধানের ভালো দাম পাননি। এ নিয়ে হতাশায় ছিলেন। গত সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু এখন ঝড়-বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।”

 

সদরের রায়পুর এলাকার কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, “বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে ইতিমধ্যে চরম ক্ষতি হয়ে গেছে। এক একর জমিতে আগে প্রায় ৪০ মণ ধান পাওয়া যেত, এখন সেখানে ৩০ মণও আসতে পারে।”

 

নতুনপাড়া এলাকার কৃষক মনসুর আলী জানিয়েছেন, তিনি ১২ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। ইতিমধ্যে চার বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছেন, কিন্তু আট বিঘার অধিকাংশ খেতের ধানগাছ নুয়ে পড়েছে।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় চলতি বছর আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে, যার মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে।

 

 

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে যেসব খেতের ধানগাছ নুয়ে পড়েছে, সেসব ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। বৃষ্টি আর না হলে ধানের বেশি ক্ষতি হবে না।”


প্রিন্ট