ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বালিয়াকান্দিতে যৌথ বাহিনীর অপারেশন ডেভিল হান্টে ইউপি সদস্য গ্রেফতার Logo ৩ লাখ টাকার দাবি, না দিলে ২ নাতিকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি Logo পাংশার সাঁজুরিয়া জেহরা জেরীন উচ্চ বিদ্যালয়ে দু’দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি সম্পন্ন Logo ভূরুঙ্গামারীতে অপারেশন ডেভিল হান্টে গত ২৪ ঘন্টায় ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ Logo শেখ রাসেল সেতুর নামফলক পরিবর্তন Logo ফরিদপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ওয়ার্ড কমিটি গঠনের লক্ষে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু Logo হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে বিএনপি নেতা অমিত Logo নোয়াখালীতে ১৩টি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন, ১১ লাখ টাকা জরিমানা Logo আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে ফরিদপুরে খাটিয়া মিছিল Logo লালপুরে বন্ধ হলো অবৈধ ভাটা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়া চৌধুরীর জীবনচরিত

মতিয়া চৌধুরী বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ এবং সমাজসেবিকা, যিনি দেশের উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ১৯৪৪ সালের ৩১ মার্চ নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক পরিবার ছিল একদা সমাজের সচ্ছল এবং শিক্ষিত। পরিবারের সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষামূলক পরিবেশই তার ব্যক্তিত্বকে গঠন করতে সাহায্য করে।

 

তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট এক নারী রাজনীতিবিদ। তিনি শেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের একাদশ ও দ্বাদশ সংসদের উপ নেতা ছিলেন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী রাজনীতি দিয়ে। তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-এর সদস্য ছিলেন, পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

 

মতিয়া চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকল্যাণে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি নেতৃত্বের গুণাবলি এবং সামাজিক সেবার প্রতি আগ্রহী ছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে তার রাজনৈতিক জীবনে প্রভাবিত করে। রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে থাকেন তিনি।

 

তিনি ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং এরপর ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্য হিসেবে তার কার্যকাল অত্যন্ত সফল ও জনপ্রিয়। তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে কৃষি সেক্টরে বিপ্লব ঘটানোর চেষ্টা করেছেন। তার নেতৃত্বে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে, যা কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করেছে।

 

মতিয়া চৌধুরী নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর। তিনি বিভিন্ন ফোরাম ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের নারীদের অধিকার ও ক্ষমতায়ন নিয়ে বক্তৃতা দেন। তার প্রচেষ্টা এবং নেতৃত্বে অনেক নারীর চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।

 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে, তিনি দেশীয় কৃষকদের জন্য বিভিন্ন অনুদান ও প্রণোদনা প্রদান করেন, যা কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করেছে। এছাড়া, কৃষি গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নেও তিনি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন।

 

মতিয়া চৌধুরী শুধু রাজনীতিতে নয়, সমাজসেবাতেও সক্রিয়। তিনি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন, বিশেষ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। তাঁর নেতৃত্বে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল স্থাপিত হয়েছে, যা সমাজের প্রান্তিক জনগণের সেবায় নিয়োজিত।

 

মতিয়া চৌধুরী বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, বরং একজন আদর্শনিষ্ঠ সমাজসেবিকা। তাঁর সংগ্রামী জীবন এবং জনগণের জন্য কাজ করার উদ্দীপনা নতুন প্রজন্মের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

 

মতিয়া চৌধুরীর সংগ্রামী জীবন, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং দেশের প্রতি তার অবদান তাকে একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আগামী দিনগুলোতে তার অবদান বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং নারী ক্ষমতায়ন এ আরো বড় ভূমিকা রাখবে।

 

এ আওয়ামী লীগের নেতা, আজ ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং বিভিন্ন মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক গভীর শোকের আবহ সৃষ্টি করেছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বালিয়াকান্দিতে যৌথ বাহিনীর অপারেশন ডেভিল হান্টে ইউপি সদস্য গ্রেফতার

error: Content is protected !!

‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়া চৌধুরীর জীবনচরিত

আপডেট টাইম : ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
সময়ের প্রত্যাশা অনলাইন ডেস্ক :

মতিয়া চৌধুরী বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ এবং সমাজসেবিকা, যিনি দেশের উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ১৯৪৪ সালের ৩১ মার্চ নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক পরিবার ছিল একদা সমাজের সচ্ছল এবং শিক্ষিত। পরিবারের সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষামূলক পরিবেশই তার ব্যক্তিত্বকে গঠন করতে সাহায্য করে।

 

তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট এক নারী রাজনীতিবিদ। তিনি শেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের একাদশ ও দ্বাদশ সংসদের উপ নেতা ছিলেন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী রাজনীতি দিয়ে। তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-এর সদস্য ছিলেন, পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

 

মতিয়া চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকল্যাণে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি নেতৃত্বের গুণাবলি এবং সামাজিক সেবার প্রতি আগ্রহী ছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে তার রাজনৈতিক জীবনে প্রভাবিত করে। রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে থাকেন তিনি।

 

তিনি ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং এরপর ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্য হিসেবে তার কার্যকাল অত্যন্ত সফল ও জনপ্রিয়। তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে কৃষি সেক্টরে বিপ্লব ঘটানোর চেষ্টা করেছেন। তার নেতৃত্বে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে, যা কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করেছে।

 

মতিয়া চৌধুরী নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর। তিনি বিভিন্ন ফোরাম ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের নারীদের অধিকার ও ক্ষমতায়ন নিয়ে বক্তৃতা দেন। তার প্রচেষ্টা এবং নেতৃত্বে অনেক নারীর চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।

 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে, তিনি দেশীয় কৃষকদের জন্য বিভিন্ন অনুদান ও প্রণোদনা প্রদান করেন, যা কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করেছে। এছাড়া, কৃষি গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নেও তিনি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন।

 

মতিয়া চৌধুরী শুধু রাজনীতিতে নয়, সমাজসেবাতেও সক্রিয়। তিনি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন, বিশেষ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। তাঁর নেতৃত্বে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল স্থাপিত হয়েছে, যা সমাজের প্রান্তিক জনগণের সেবায় নিয়োজিত।

 

মতিয়া চৌধুরী বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, বরং একজন আদর্শনিষ্ঠ সমাজসেবিকা। তাঁর সংগ্রামী জীবন এবং জনগণের জন্য কাজ করার উদ্দীপনা নতুন প্রজন্মের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

 

মতিয়া চৌধুরীর সংগ্রামী জীবন, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং দেশের প্রতি তার অবদান তাকে একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আগামী দিনগুলোতে তার অবদান বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং নারী ক্ষমতায়ন এ আরো বড় ভূমিকা রাখবে।

 

এ আওয়ামী লীগের নেতা, আজ ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং বিভিন্ন মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক গভীর শোকের আবহ সৃষ্টি করেছে।


প্রিন্ট