মেয়েকে স্কুল মাষ্টার বানাবে,ছেলেকেও দিবে সরকারী চাকুরী। এই ছোট আশা নিয়ে সামনের দিকে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিল কালুখালীর আ: রাজ্জাক নামের এক মৎস্যজীবী।
৫ বছর আগে পদ্মা নদীতে তার জমিজমা সব গ্রাস হয়ে গেছে। তখন পদ্মার জলই তার সম্বল। পদ্মার জলে ভেসেই সে জীবন,জীবিকা আর স্বপ্নের দিকে ধাবমান। কিন্তু পদ্মার জলে আছড়ে পরা বজ্রপাত তার সেই স্বপ্ন সফল হতে দিলো না। ৯ অক্টোবর আড়াইটার সময় কালুখালীর পদ্মানদীতে বজ্রপাত হওয়ায় তার সে সব স্বপ্ন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
আব্দুর রাজ্জাক রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণ নগর গ্রােমর মৃত নবাব আলীর পুত্র।
৪ মেয়ে ১ ছেলে ১ স্ত্রীকে নিয়ে রাজ্জাকের সংসার। দিন চলে প্রতিদিনের আয়ে। নদী জাল,নৌকা,নদী ছাড়া তার কোন সম্বল নেই। ৫ বছর অগ্রণী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সে নৌকা বানায়। তা দিয়েই মাছ ধরতো রাজ্জাক। গত ৯ অক্টোবর দুই সহযোগীসহ নদীর যায় রাজ্জাক।কিন্তু ফিরে আর আসা হয়নি। দুপুরে কালুখালীর পদ্মা নদীতে বজ্রপাতে রাজ্জাকের মৃত্যু হয়। আর এর মধ্যদিয়ে নদীর জলে স্বপ্নের সমাধী হয় মৎস্যজীবী রাজ্জাকের।
রাজ্জাকের ৪ মেয়ের মধ্যে রুবিয়া সবার ছোট। সে ৮ ম শ্রেনীর ছাত্রী। সে জানায়,শত কষ্টের মাঝেও আব্বু আমাদের পড়ালেখা করাতেন। তার স্বপ্ন ছিলো আমাকে মাষ্টার বানাবে।কিন্তু তা আর হলো না।
রাজ্জাকের ছোট ছেলে রবিউল।সে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ে। পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার কাজেও সে সাহায্য করতো। দু মাস আগে তার পা কেটে যায়। অর্থের অভাবে ওষুধ জোটেনি। তাই পচন লেগেছে। মৌসুমে মাছ ধরে তার চিকিৎসার কথা ছিলো কিন্তু তা হলো না।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল মানুষটি হারিয়ে মৎস্যজীবি রাজ্জাকের পরিবারটি নিরন্ন দিন কাটাচ্ছে। কোন বিত্তবান সাহায্যের হাত বাড়ালে কুলের দিশা পেত পরিবারটি।
প্রিন্ট