ঢাকা , শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আইপিএস সুখেন্দু হীরার ‘জঙ্গলমহলের ডায়েরি’ প্রকাশ Logo যশোরে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের টেরিটরি ম্যানেজারের ওপর হামলা Logo খোকসায় ৫৩ তম শীতকালীন জাতীয় ক্রিড়া প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ Logo শিবপুরে বাদল মোল্লার বিরুদ্ধে বালুর ট্রাকে বাধা ও টাকা ছিনতাই এর অভিযোগ Logo ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগ Logo লালপুরে দিবালোকে ভ্যানচালক হত্যার ঘটনায় আটক ২ Logo গোমস্তাপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা Logo তানোরে প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে মতবিনিময় Logo মধুখালীতে এম এম একাডেমির বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুরষ্কার বিতরণ Logo পদ্মা নদীতে অবৈধ আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণ করলেন ইউএনও
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পরীমনির মামলায় নাসিরসহ ৫ জন গ্রেপ্তার, বোট ক্লাবের সদস্য কারা?

নায়িকা পরীমনির মামলায় ঢাকা বোট ক্লাবের বিনোদন সম্পাদক ও ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদসহ পাঁচ জনকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুপুরে তাদের গ্রেপ্তারের আগে সাভার থানায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন পরীমনি।

পরীমনির সঙ্গে ওই ঘটনার স্থান সাভারের বিরুলিয়া এলাকার ঢাকা বোট ক্লাব। ৮ জুন রাতে তিনি সেখানে গেলে হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হন। রোববার প্রথমে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে ঘটনার বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান।

রাতে তিনি তার গুলশানের বাসায় অভিযোগের বিস্তারিত বর্ণনা দিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নাসির নিজেকে আইজিপি বেনজীর আহমেদের বন্ধু পরিচয় দেন।

ঘটনার পর ভোররাতে তিনি বনানী থানায় অভিযোগ করতে গেলেও থানা মামলা নেয়নি। পরে তিনি বেনজির আহমেদের কাছে বার বার অভিযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান,” এধরনের কোনো অভিযোগ নিয়ে কেউ আইজিপি মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করেননি।” বনানী থানার ওসি নূরে আযম মিয়া গণমাধ্যমের কাছে ঘটনার পর পরীমনির অভিযোগ নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন,” পরীমনি তখন মদ্যপ ছিলেন। অসুস্থ ছিলেন আরকি। সে কারণে অভিযোগ না নিয়ে হাসপাতলে পাঠিয়ে দেই। অসুস্থ কারুর কাছ থেকে আমরা অভিযোগ নিতে পারি না।”

পরীমনি অভিযোগ করেন, নাসির আহমেদ ওই রাতে তাকে বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেন। তার মুখের ভেতরে মদের বোতল ঢুকিয়ে দেন৷ পরীমনি বলেন,” ঘটনার পর সবাই শুধু ঘটনা জানতে চেয়েছে। কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়ায়নি।”

বিরুলিয়ার সেই বোট ক্লাবের সভাপতি আইজিপি বেনজীর আহমেদ। আর নাসির ইউ মাহমুদ ওই ক্লাবের বিনোদন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক।

পরীমনির সংবাদ সম্মেলনের পর পরই পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। রাতেই তার বাসায় পুলিশ যায়। তার প্রাথমিক জবানবন্দি নেয়। তারপর ঘটনাস্থল ঠিক করে তাকে সাভার থানায় মামলা করার পরামর্শ দেয়।

সোমবার সকালে সাভার থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ওই ক্লাবে অভিযান চালিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু সেখানে নাসির ইউ আহমেদকে তারা পাননি। পরে গোয়েন্দারা উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে নাসিরসহ পাঁচ জনকে আটক করে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, উত্তরার যে বাসা থেকে নাসির ইউ আহমেদ ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয় ওই বাসাটি ডিজে পার্টির জন্য তিনি ব্যবহার করতেন। সেখান থেকে বিদেশি মদ, ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা মামলার পাশাপাশি মাদক আইনেও মামলা হবে।”

তিনি বলেন,” নাসির ও তার সহযোগীদের কোনো রকম ছাড় দেয়া হবে না। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর বোট ক্লাবে ফের অভিযান চালানো হবে।”

বোট ক্লাবের সদস্য আবাসন ব্যবসায়ী নাসির ইউ আহমেদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তবে উত্তরার বাসায় পুলিশ প্রবেশের পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি দাবি করেন,” তার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ করা হয়েছে। তারা ক্লাবের সদস্য না হয়ে ক্লাবে ঢুকে বিদেশি ড্রিংকস নিতে চাইলে আমি বাধা দিই।”

বোট ক্লাবটির সদস্য হতে এককালীন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। পরিচালনা পর্যদে ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা আছেন। এই ঘটনায় ঢাকা বোট ক্লাব একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ক্লাবের সদস্য বখতিয়ার আহমেদ দাবী করেন,” এরকম টুক টাক ঘটনা ঘটেই থাকে। আমরা পাত্তা দেই না।”

এদিকে নাসির গ্রেপ্তার হওয়ার পর পরীমনি বিকেল পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে কথা বলেনি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাসার সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায় রাতে তিনি তার বাসায় সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আইপিএস সুখেন্দু হীরার ‘জঙ্গলমহলের ডায়েরি’ প্রকাশ

error: Content is protected !!

পরীমনির মামলায় নাসিরসহ ৫ জন গ্রেপ্তার, বোট ক্লাবের সদস্য কারা?

আপডেট টাইম : ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুন ২০২১
ডেস্ক রিপোর্টঃ :

নায়িকা পরীমনির মামলায় ঢাকা বোট ক্লাবের বিনোদন সম্পাদক ও ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদসহ পাঁচ জনকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুপুরে তাদের গ্রেপ্তারের আগে সাভার থানায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন পরীমনি।

পরীমনির সঙ্গে ওই ঘটনার স্থান সাভারের বিরুলিয়া এলাকার ঢাকা বোট ক্লাব। ৮ জুন রাতে তিনি সেখানে গেলে হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হন। রোববার প্রথমে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে ঘটনার বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান।

রাতে তিনি তার গুলশানের বাসায় অভিযোগের বিস্তারিত বর্ণনা দিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নাসির নিজেকে আইজিপি বেনজীর আহমেদের বন্ধু পরিচয় দেন।

ঘটনার পর ভোররাতে তিনি বনানী থানায় অভিযোগ করতে গেলেও থানা মামলা নেয়নি। পরে তিনি বেনজির আহমেদের কাছে বার বার অভিযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান,” এধরনের কোনো অভিযোগ নিয়ে কেউ আইজিপি মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করেননি।” বনানী থানার ওসি নূরে আযম মিয়া গণমাধ্যমের কাছে ঘটনার পর পরীমনির অভিযোগ নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন,” পরীমনি তখন মদ্যপ ছিলেন। অসুস্থ ছিলেন আরকি। সে কারণে অভিযোগ না নিয়ে হাসপাতলে পাঠিয়ে দেই। অসুস্থ কারুর কাছ থেকে আমরা অভিযোগ নিতে পারি না।”

পরীমনি অভিযোগ করেন, নাসির আহমেদ ওই রাতে তাকে বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেন। তার মুখের ভেতরে মদের বোতল ঢুকিয়ে দেন৷ পরীমনি বলেন,” ঘটনার পর সবাই শুধু ঘটনা জানতে চেয়েছে। কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়ায়নি।”

বিরুলিয়ার সেই বোট ক্লাবের সভাপতি আইজিপি বেনজীর আহমেদ। আর নাসির ইউ মাহমুদ ওই ক্লাবের বিনোদন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক।

পরীমনির সংবাদ সম্মেলনের পর পরই পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। রাতেই তার বাসায় পুলিশ যায়। তার প্রাথমিক জবানবন্দি নেয়। তারপর ঘটনাস্থল ঠিক করে তাকে সাভার থানায় মামলা করার পরামর্শ দেয়।

সোমবার সকালে সাভার থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ওই ক্লাবে অভিযান চালিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু সেখানে নাসির ইউ আহমেদকে তারা পাননি। পরে গোয়েন্দারা উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে নাসিরসহ পাঁচ জনকে আটক করে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, উত্তরার যে বাসা থেকে নাসির ইউ আহমেদ ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয় ওই বাসাটি ডিজে পার্টির জন্য তিনি ব্যবহার করতেন। সেখান থেকে বিদেশি মদ, ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা মামলার পাশাপাশি মাদক আইনেও মামলা হবে।”

তিনি বলেন,” নাসির ও তার সহযোগীদের কোনো রকম ছাড় দেয়া হবে না। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর বোট ক্লাবে ফের অভিযান চালানো হবে।”

বোট ক্লাবের সদস্য আবাসন ব্যবসায়ী নাসির ইউ আহমেদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তবে উত্তরার বাসায় পুলিশ প্রবেশের পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি দাবি করেন,” তার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ করা হয়েছে। তারা ক্লাবের সদস্য না হয়ে ক্লাবে ঢুকে বিদেশি ড্রিংকস নিতে চাইলে আমি বাধা দিই।”

বোট ক্লাবটির সদস্য হতে এককালীন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। পরিচালনা পর্যদে ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা আছেন। এই ঘটনায় ঢাকা বোট ক্লাব একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ক্লাবের সদস্য বখতিয়ার আহমেদ দাবী করেন,” এরকম টুক টাক ঘটনা ঘটেই থাকে। আমরা পাত্তা দেই না।”

এদিকে নাসির গ্রেপ্তার হওয়ার পর পরীমনি বিকেল পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে কথা বলেনি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাসার সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায় রাতে তিনি তার বাসায় সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন।


প্রিন্ট