রাজশাহীর তানোরের ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) অনুকুলে উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের বরাদ্দকৃত অর্থ চেয়ারম্যান-সচিবগণ মিলেমিশে লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যানগণ সচিবদের যোগসাজশে একাধিকবার একই প্রকল্প দেখিয়ে বরাদ্দের টাকা লোপাট করেছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের অপসারণের আগে এসব প্রকল্প তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছে ইউপি সদস্যগণ।
জানা গেছে, প্রতি অর্থবছরে দু”ধাপে উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের বরাদ্দ দেয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদের অনুকুলে। বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে প্রথম দফা এবং জুন মাসে দ্বিতীয় দফায় বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্ত্ত ইউপি চেয়ারম্যানগণ দলীয় প্রভাব বিস্তার ও সচিবের যোগসাজশে কোনো কাজ না করেই বরাদ্দের পুরো টাকা লোপাট করেছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শুরুতেই বরাদ্দের ৪০ শতাংশ টাকা কেটে নিতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি শুধু উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের বরাদ্দ না, টিআর, কাবিখা ও বিশেষ বরাদ্দ থেকেও কেটে নেয়া হতো ৪০ শতাংশ টাকা।
জানা গেছে, বিগত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে উন্নয়ন সহায়তা তহবিল থেকে প্রথম দফায় উপজেলার কলমা ইউপিতে ৯ লাখ ১০ হাজার ৯০০ টাকা, বাঁধাইড় ইউপিতে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৪০০ টাকা, পাঁচন্দর ইউপিতে ৭ লাখ ৯৯ হাজার ৯০০ টাকা, সরনজাই ইউপিতে ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯০০ টাকা, তালন্দ ইউপিতে ৪ লাখ ৬১ হাজার ১০০ টাকা, কামারগাঁ ইউপিতে ৭ লাখ ৪৩ হাজার ৭০০ টাকা ও চান্দুড়িয়া ইউপিতে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা। দ্বিতীয় দফায় এসব ইউপিতে প্রথম দফা থেকে আরো ৩০ হাজার টাকা করে বেশী বরাদ্দ দেয়া হয়।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের (ইউপি) মধ্য ৬টি ইউপির চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ দলীয় বাকি একজন বিএনপি দলীয়। তবে কলমা ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের হলেও তিনি ছিলেন সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরোধী।
স্থানীয়রা জানান, বাঁধাইড়, পাঁচন্দর, তালন্দ, কামারগাঁ ও চাঁন্দুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যানগণ ছিল সাবেক এমপির আশীর্বাদ পুষ্ট। ফলে তারা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার দাপটে সিংহভাগ বরাদ্দ নয়ছয় করেছে। একাধিক ইউপি সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারাও জনগণের ভোটে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। জনগণের কাছে তাদেরও দায়বদ্ধতা আছে। কিন্তু চেয়ারম্যানরা নিজেদের ইচ্ছেমত সবকিছু করেছেন। এবিষয়ে তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু বলেন, কাজ করা হয়েছে। কবে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে কোন ঠিকাদার কাজ করেছে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সদোত্তর না দিয়ে কৌশলে সটকে পড়েন।এবিষয়ে সরনজাই ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক খাঁন বলেন, বরাদ্দ তো তেমন পেতাম না, যেগুলো পেতাম তা দিয়ে আওয়ামী লীগপন্থী মেম্বারদের মাধ্যমে কাজ করতে হতো। বরাদ্দের পুরো কাজ হয়েছে। কিন্তু দরপত্র ও ঠিকাদারের বিষয়ে কিছুই বলেন নি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলামকে বিষয়গুলো সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি বলেন সবে যোগদান করেছি, ফাইলপত্র দেখে নিয়ম অনুযায়ী কাজ না হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কামারগাঁ,কলমা,বাধাইড়,
পাঁচন্দর ও বাধাইড় ইউপি চেয়ারম্যানদের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।#