ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

আমার ভাঙা ফোনের গল্প

আমার নোকিয়া ৫১১০ মডেলের ফোনটাকে ঠিক মুঠোফোন বলা চলে না। কেননা, মুঠোয় নিলে এর অর্ধাংশ সব সময় বাইরে উঁকিঝুঁকি মারতে থাকে, পাছে পৃথিবীর রূপ-রস-স্বাদ থেকে মুহুর্তের জন্যও সে বঞ্চিত হয়! মুঠোফোন কেনার সামর্থ্য আমার কোনোকালেই নেই। ডিমের দামে মুরগী পাওয়ার একালেও নয়। তবুও আমাকে তা কিনতে হয়েছিল কায়দায় (আসলে বেকায়দায়) পড়ে।

 

২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারির এক বিকেলে (সৈয়দ) আরিফ ভাই এসেছিলেন চা খেতে। কথায় কথায় বললেন, ভাই একটা মোবাইল নেন না কেন? মোবাইল থাকলে যোগাযোগ রাখতে কত সুবিধা হয়! চার/পাঁচ হাজার টাকা খরচের সামর্থ্য আমার নেই, এই ছিল আমার উত্তর। আরিফ ভাই বললেন, দুই হাজার টাকায় কত ভালো মানের পুরোনো সেট পাওয়া যায়। কোন অপদেবতা সেদিন আমার কাঁধে ভর করেছিল, কে জানে! আমি মুখ ফসকে বলে ফেলরাম, দুই হাজার টাকা হলে আজই কিনব। ব্যাস! আরিফ ভাই তার হাতে থাকা নোকিয়া ৫১১০ মডেলের সেই “বনেদী” সেটটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, নেন এটাই আপনার। চামড়ার কালো জ্যাকেট পরা থাকায় সেটাকে দেখাচ্ছিল দৈত্যাকার। আমি সেটা ধরলাম ঠিকই, কিন্তু আমার বুকের ভিতর হাতুড়ি পেটার শব্দ – টাকা দেব কোত্থেকে!

 

অতঃপর কয়েক জায়গা থেকে ধার করে আরিফ ভাইকে সেদিনের মত বিদায় এবং একখানা সীম ও পঞ্চাশ টাকার একটা কার্ডের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলাম।

 

তিনদিনের মাথায় দেখি স্ক্রিনে কোনো লেখা নেই। অনেক ঝাকাঝাকি, চাপাচাপি করলাম, কিছুতেই কিছু হলো না। আড়াই হাজার টাকা আমার একেবারে জলে গেল! টাকার শোকে আমি রীতিমত মুষড়ে পড়লাম। জাকির (মির্জা জাকারিয়া বেগ) এসে “অন” বাটন চেপে লেখা আবার ফিরিয়ে এনে দিলেও বুকের ভিতর খচখচানি থেকেই গেলো। একবার যখন নষ্ট হতে শুরু করেছে, স্থায়ীভাবে নষ্ট হতে কতক্ষণ!

 

 

এরপর সেট অফ না হয়েও স্ক্রিন সাদা হয়ে যেতে লাগলো। ফলে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির ফোন আসলেও রিসিভ করে বলতে হয়, “কে বলছেন? ” ফলে কত অভিমান, অভিযোগ, ক্রোধ যে আমাকে হজম করতে হয়েছে!

 

গবেষণায় দেখা গেল, একটু চেপে ধরলে স্ক্রিনে লেখা ওঠে। কিন্তু সারাদিন ধরে চেপে বসে থাকা কি সম্ভব? তাই প্রথমে সুতা দিয়ে টাইট করে বেঁধে ফেললাম। কিন্তু সেটি তেমন নান্দনিক না হওয়ায় পরে বাঁধলাম রাবার দিয়ে। বাঁধলাম বটে, কিন্তু মানুষের সামনে ফোন আসলে যত কষ্টই হোক উঠে দূরে চলে যেতে হয়। উনারা ভাবেন, কোনো গোপন কথা বলতে অথবা উনারা বিরক্ত হবেন ভেবে আমি দূরে চলে যাচ্ছি।

 

কোনো বড় শহরে ঢুকে ছিনতাইকারীর ভয়ে আমি সদা তটস্থ থাকি। আমার হাতে ঘড়ি থাকলে শহরে ঢোকার আগেই আমি তা পকেটে লুকাই! অথচ, আমার কাছে একখানা আস্ত মোবাইল ফোন থাকলেও সেবার আমি নিশ্চিন্ত মনে ঢাকার রাস্তায় হেঁটে বেড়ানোর সাহস করেছিলাম। কেননা, আমার তখন কোনো ঘড়ি ছিল না, আর আমি নিশ্চিত ছিলাম যে আমার মোবাইল দর্শনে ছিনতাইকারী প্রথমে হতভম্ব হয়ে পড়বে, পরবর্তীতে যে হাসি দেবে তাতে থাকবে করুণা ও বিদ্রুপের মিশেল। সবশেষে হয়তো এত কমদামি মোবাইল ব্যবহারের অপরাধে দুটো থাপ্পড় মেরে আমাকে ছেড়ে দেবে। দেবেই।

 

ঢাকায় কেন গিয়েছিলাম? বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রথম আলো বন্ধুসভার পক্ষ থেকে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া ছেলেমেয়েদের সম্বর্ধনা দেয়া হবে। সে মোতাবেক প্রথম আলো অফিস থেকে উপকরণ আমাদের পাঠানো হলেও গুনে দেখা গেল দুটো মেডেল ও দুটো সার্টিফিকেট কম। ফলে সেগুলো আনতে এবং ওই মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বই কিনতে বন্ধুসভার পক্ষ থেকে রওনা হলাম ঢাকা। সঙ্গে প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফরিদপুরের সন্তান অরুণদা’র (অরুণ বসু) মোবাইল নম্বর।

 

ঢাকায় গিয়ে উঠলাম বন্ধু জাকিরের (মির্জা জাকারিয়া বেগ) মেসে। রাতেই অরুণদা’কে ফোন করলাম। উনি বললেন, আমি জাকারিয়া (প্রথম আলোর কর্মকর্তা) সাহেবকে এখনই বলে দিচ্ছি। তুমি সকালে গিয়ে ওর কাছ থেকে মেডেল আর সার্টিফিকেট নিয়ে নিও।

 

সকালে বন্ধু জাকিরকে সঙ্গে নিয়ে বেরোলাম। প্রথম আলো অফিসে কাজ সেরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে যাব বইগুলো কিনতে। পথে নেমেই বুকের মধ্যে খচখচানি – যদি অরুণদা জাকারিয়া সাহেবকে বলতে ভুলে যান, তাহলেতো আমাকে আবার ফোন করতে হবে অরুণদার কাছে। সবার সামনে আমার এ ফোন বের করবো কীভাবে! জাকিরের ফোনে আবার যথেষ্ট টাকা নেই। অগত্যা সমাধান, জাকিরকে অরুণদার নম্বর পাচার করা এবং ৫০ টাকার কার্ড কিনে দেয়া৷ কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, অরুণদার কাছে ফোন করার প্রয়োজন পড়েনি। পুরো পঞ্চাশটা টাকা আমার লস!

 

আমার এই মুঠোফোন সম্পর্কে দেবুর (দেবব্রত সমাদ্দার, হাসামদিয়া) মন্তব্য হচ্ছে, আবু বিন আদহাম যেমন তার শত তালি দেয়া জুতার কারণে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন, আপনি তেমনি পরিচিতি পাবেন এই মোবাইলের কারণে।

 

 

এ সম্পর্কে সর্বশেষ মন্তব্যটি জামানের (মনিরুজ্জামান, সাংবাদিক, গুনবহা)। সে বললো – আপনার একজন অ্যাসিসট্যান্ট প্রয়োজন। এত ভারি মোবাইল সারাক্ষণ আপনি একা বহন করলে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। এভাবে কতজন কত ভাবে যে আমাকে অপমান করার করেছে! কিন্তু আমি অবিচল। কখনো বিব্রতবোধ করিনি!

 

পুনশ্চঃ – আসল কথাই বলতে ভুলে গেছি। প্রথম আলো থেকে বেরিয়ে আমরা গিয়েছিলাম বসুন্ধরা সিটি মার্কেটে। প্রবেশমুখে বাধা। আর্চওয়ে (মেটাল ডিটেক্টর গেট) পেরিয়ে ঢুকতে হবে ভিতরে। নিরাপত্তাকর্মীরা ডালা পেতে দিলেন সামনে। জাকির তার মধ্যে ওর মোবাইল আর চাবি রাখল। আর্চওয়ে পেরিয়ে আবার তা সংগ্রহ করল। আমি দাঁড়িয়ে রইলাম বাইরে। জাকির তাগাদা দিল – আসেন। আমি কালো মুখে আমার ভাঙা মোবাইল ফোন ডালায় রাখলাম। দুই নিরাপত্তাকর্মীর চোখ বিস্ময়ে বিস্ফোরিত — ক্যায়সা মোবাইল!

 

আমি মনে মনে বললাম — বসুন্ধরা, দ্বিধা হও, আমি সেটিয়ে যাই!


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

আমার ভাঙা ফোনের গল্প

আপডেট টাইম : ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
গাজী শাহিদুজ্জামান লিটন :

আমার নোকিয়া ৫১১০ মডেলের ফোনটাকে ঠিক মুঠোফোন বলা চলে না। কেননা, মুঠোয় নিলে এর অর্ধাংশ সব সময় বাইরে উঁকিঝুঁকি মারতে থাকে, পাছে পৃথিবীর রূপ-রস-স্বাদ থেকে মুহুর্তের জন্যও সে বঞ্চিত হয়! মুঠোফোন কেনার সামর্থ্য আমার কোনোকালেই নেই। ডিমের দামে মুরগী পাওয়ার একালেও নয়। তবুও আমাকে তা কিনতে হয়েছিল কায়দায় (আসলে বেকায়দায়) পড়ে।

 

২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারির এক বিকেলে (সৈয়দ) আরিফ ভাই এসেছিলেন চা খেতে। কথায় কথায় বললেন, ভাই একটা মোবাইল নেন না কেন? মোবাইল থাকলে যোগাযোগ রাখতে কত সুবিধা হয়! চার/পাঁচ হাজার টাকা খরচের সামর্থ্য আমার নেই, এই ছিল আমার উত্তর। আরিফ ভাই বললেন, দুই হাজার টাকায় কত ভালো মানের পুরোনো সেট পাওয়া যায়। কোন অপদেবতা সেদিন আমার কাঁধে ভর করেছিল, কে জানে! আমি মুখ ফসকে বলে ফেলরাম, দুই হাজার টাকা হলে আজই কিনব। ব্যাস! আরিফ ভাই তার হাতে থাকা নোকিয়া ৫১১০ মডেলের সেই “বনেদী” সেটটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, নেন এটাই আপনার। চামড়ার কালো জ্যাকেট পরা থাকায় সেটাকে দেখাচ্ছিল দৈত্যাকার। আমি সেটা ধরলাম ঠিকই, কিন্তু আমার বুকের ভিতর হাতুড়ি পেটার শব্দ – টাকা দেব কোত্থেকে!

 

অতঃপর কয়েক জায়গা থেকে ধার করে আরিফ ভাইকে সেদিনের মত বিদায় এবং একখানা সীম ও পঞ্চাশ টাকার একটা কার্ডের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলাম।

 

তিনদিনের মাথায় দেখি স্ক্রিনে কোনো লেখা নেই। অনেক ঝাকাঝাকি, চাপাচাপি করলাম, কিছুতেই কিছু হলো না। আড়াই হাজার টাকা আমার একেবারে জলে গেল! টাকার শোকে আমি রীতিমত মুষড়ে পড়লাম। জাকির (মির্জা জাকারিয়া বেগ) এসে “অন” বাটন চেপে লেখা আবার ফিরিয়ে এনে দিলেও বুকের ভিতর খচখচানি থেকেই গেলো। একবার যখন নষ্ট হতে শুরু করেছে, স্থায়ীভাবে নষ্ট হতে কতক্ষণ!

 

 

এরপর সেট অফ না হয়েও স্ক্রিন সাদা হয়ে যেতে লাগলো। ফলে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির ফোন আসলেও রিসিভ করে বলতে হয়, “কে বলছেন? ” ফলে কত অভিমান, অভিযোগ, ক্রোধ যে আমাকে হজম করতে হয়েছে!

 

গবেষণায় দেখা গেল, একটু চেপে ধরলে স্ক্রিনে লেখা ওঠে। কিন্তু সারাদিন ধরে চেপে বসে থাকা কি সম্ভব? তাই প্রথমে সুতা দিয়ে টাইট করে বেঁধে ফেললাম। কিন্তু সেটি তেমন নান্দনিক না হওয়ায় পরে বাঁধলাম রাবার দিয়ে। বাঁধলাম বটে, কিন্তু মানুষের সামনে ফোন আসলে যত কষ্টই হোক উঠে দূরে চলে যেতে হয়। উনারা ভাবেন, কোনো গোপন কথা বলতে অথবা উনারা বিরক্ত হবেন ভেবে আমি দূরে চলে যাচ্ছি।

 

কোনো বড় শহরে ঢুকে ছিনতাইকারীর ভয়ে আমি সদা তটস্থ থাকি। আমার হাতে ঘড়ি থাকলে শহরে ঢোকার আগেই আমি তা পকেটে লুকাই! অথচ, আমার কাছে একখানা আস্ত মোবাইল ফোন থাকলেও সেবার আমি নিশ্চিন্ত মনে ঢাকার রাস্তায় হেঁটে বেড়ানোর সাহস করেছিলাম। কেননা, আমার তখন কোনো ঘড়ি ছিল না, আর আমি নিশ্চিত ছিলাম যে আমার মোবাইল দর্শনে ছিনতাইকারী প্রথমে হতভম্ব হয়ে পড়বে, পরবর্তীতে যে হাসি দেবে তাতে থাকবে করুণা ও বিদ্রুপের মিশেল। সবশেষে হয়তো এত কমদামি মোবাইল ব্যবহারের অপরাধে দুটো থাপ্পড় মেরে আমাকে ছেড়ে দেবে। দেবেই।

 

ঢাকায় কেন গিয়েছিলাম? বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রথম আলো বন্ধুসভার পক্ষ থেকে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া ছেলেমেয়েদের সম্বর্ধনা দেয়া হবে। সে মোতাবেক প্রথম আলো অফিস থেকে উপকরণ আমাদের পাঠানো হলেও গুনে দেখা গেল দুটো মেডেল ও দুটো সার্টিফিকেট কম। ফলে সেগুলো আনতে এবং ওই মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বই কিনতে বন্ধুসভার পক্ষ থেকে রওনা হলাম ঢাকা। সঙ্গে প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফরিদপুরের সন্তান অরুণদা’র (অরুণ বসু) মোবাইল নম্বর।

 

ঢাকায় গিয়ে উঠলাম বন্ধু জাকিরের (মির্জা জাকারিয়া বেগ) মেসে। রাতেই অরুণদা’কে ফোন করলাম। উনি বললেন, আমি জাকারিয়া (প্রথম আলোর কর্মকর্তা) সাহেবকে এখনই বলে দিচ্ছি। তুমি সকালে গিয়ে ওর কাছ থেকে মেডেল আর সার্টিফিকেট নিয়ে নিও।

 

সকালে বন্ধু জাকিরকে সঙ্গে নিয়ে বেরোলাম। প্রথম আলো অফিসে কাজ সেরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে যাব বইগুলো কিনতে। পথে নেমেই বুকের মধ্যে খচখচানি – যদি অরুণদা জাকারিয়া সাহেবকে বলতে ভুলে যান, তাহলেতো আমাকে আবার ফোন করতে হবে অরুণদার কাছে। সবার সামনে আমার এ ফোন বের করবো কীভাবে! জাকিরের ফোনে আবার যথেষ্ট টাকা নেই। অগত্যা সমাধান, জাকিরকে অরুণদার নম্বর পাচার করা এবং ৫০ টাকার কার্ড কিনে দেয়া৷ কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, অরুণদার কাছে ফোন করার প্রয়োজন পড়েনি। পুরো পঞ্চাশটা টাকা আমার লস!

 

আমার এই মুঠোফোন সম্পর্কে দেবুর (দেবব্রত সমাদ্দার, হাসামদিয়া) মন্তব্য হচ্ছে, আবু বিন আদহাম যেমন তার শত তালি দেয়া জুতার কারণে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন, আপনি তেমনি পরিচিতি পাবেন এই মোবাইলের কারণে।

 

 

এ সম্পর্কে সর্বশেষ মন্তব্যটি জামানের (মনিরুজ্জামান, সাংবাদিক, গুনবহা)। সে বললো – আপনার একজন অ্যাসিসট্যান্ট প্রয়োজন। এত ভারি মোবাইল সারাক্ষণ আপনি একা বহন করলে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। এভাবে কতজন কত ভাবে যে আমাকে অপমান করার করেছে! কিন্তু আমি অবিচল। কখনো বিব্রতবোধ করিনি!

 

পুনশ্চঃ – আসল কথাই বলতে ভুলে গেছি। প্রথম আলো থেকে বেরিয়ে আমরা গিয়েছিলাম বসুন্ধরা সিটি মার্কেটে। প্রবেশমুখে বাধা। আর্চওয়ে (মেটাল ডিটেক্টর গেট) পেরিয়ে ঢুকতে হবে ভিতরে। নিরাপত্তাকর্মীরা ডালা পেতে দিলেন সামনে। জাকির তার মধ্যে ওর মোবাইল আর চাবি রাখল। আর্চওয়ে পেরিয়ে আবার তা সংগ্রহ করল। আমি দাঁড়িয়ে রইলাম বাইরে। জাকির তাগাদা দিল – আসেন। আমি কালো মুখে আমার ভাঙা মোবাইল ফোন ডালায় রাখলাম। দুই নিরাপত্তাকর্মীর চোখ বিস্ময়ে বিস্ফোরিত — ক্যায়সা মোবাইল!

 

আমি মনে মনে বললাম — বসুন্ধরা, দ্বিধা হও, আমি সেটিয়ে যাই!


প্রিন্ট