রাজশাহী কলেজ হয়ে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে জিহ্বার নীচের ছোট্ট সিস্ট অপারেশনে যাওয়ার সময় রাজশাহী কলেজ দেখে মাকে ভর্তি হওয়ার কথা জানিয়েছিল মোবাশ্বিরা ইসলাম (মোহনা)। এসএসসি পরীক্ষার পরে জিহ্বার নীচের ছোট্ট সেই সিস্ট অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্যু হয় তার।
বাঘা উপজেলার নওটিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল মোবাশ্বিরা ইসলাম। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। কিন্তু ভর্তি হওয়া হলো না তার। ফল প্রকাশের আগেই সে মারা যায়। মোবাশ্বিরা ইসলাম উপজেলার পীরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মহিরুল ইসলামের মেয়ে। তার বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নওটিকা গ্রামের ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জিহ্বার নীচের সিস্ট অপসারণ করার জন্য রাজশাহী নগরের আল আমিন নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মোবাশ্বিরা ইসলামকে ভর্তি করা হয়েছিল। গত ২০ মার্চ সন্ধ্যার আগে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। চেতনা ফিরে পেয়ে পরে কথাও বলেছিল। এরপরে ওই হাসপাতালের নার্স একটি ইনজেকশন দেয়। তার পরেই অচেতন হয়ে পড়ে মোবাশ্বিরা। পরিস্থিতির অবনতি হলে পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টা ১০ মিনিটে মারা যায়। পরের দিন ২১ বিকেলে জানাজার নামাজ শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বাবা মহিরুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে রাজশাহী নগরের আল আমিন নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। সেখানে অস্ত্রোপচার করতে যাওয়ার সময় রাজশাহী কলেজ দেখে সেই কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা তার মাকে বলেছিল। মেয়ে আমার কলেজ দেখেই গেল কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়া হলো না তার। এবারের এসএসসি ফল প্রকাশের পর ১ হাজার ২০০ এর বেশিই নম্বরও পেয়েছে বলে জানান তিনি। ফলাফল শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা দিলারা ইসলামসহ স্বজন ও প্রতিবেশিরা।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শরীফা বেগম বলেন, শুধু মা-বাবার নয়,আমাদেরও স্বপ্ন ছিল সে বড় কিছু হয়ে দেশ সেবায় ভুমিকা রাখবে। একজন মেধাবীর অকাল মৃত্যুর শোক সইবার নয়।
প্রিন্ট