একটা সময় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে হাত পেতে জীবিকা নির্বাহ করত গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার বিশেষ চাহিদা সম্পর্ণ ব্যাক্তিরা । কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর দৌলতদিয়া ঘাট নির্ভর হাজারো মানুষের জীবন-জীবিকার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
ঘাটের বিশেষ চাহিদা সম্পর্ণ ব্যাক্তি (প্রতিবন্ধীদের) উপরও এর প্রভাব পড়ে। আয়-রোজগার কমে গিয়ে মানবেতর দিন কাটাতে থাকে তারা।
এমতবস্হা বিকল্প কর্ম সংস্হান তৈরীতে তারা ক্ষুদ্র পরিসরে ঝাড়ু নির্মান ও বিক্রি শুরু করেন। ভালো লাভ হতে থাকলেও ব্যবসা বড় করতে দরকার ছিল অন্তত ৪ লক্ষ টাকা। তাদের সংগ্রহে ছিল ১ লক্ষ টাকা। বিষয়টি কিছুদিন আগে গোয়ালন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা মুন্সি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্রের নজরে আসে। তারা এ সকল বিশেষ চাহিদা সম্পর্ণ ব্যাক্তিদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। এর অংশ হিসেবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহযোগীতায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ‘প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থাকে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ১ লক্ষ টাকার অনুদান ও ২ লক্ষ টাকার সুদ মুক্ত ঋনের পৃথক দুটি চেক হস্তান্তর করা হয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মো. রতন শেখ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মুন্নাফ শেখ সহ কয়েক জন চেক দুটি গ্রহন করেন।
তাদের হাতে চেক তুলে দেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন।
এ সময় উপস্হিত ছিলেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা দেওয়ান তোফায়েল হোসেন, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল প্রমুখ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ-তহবিলের ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান প্রকল্পের আওতায় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সদস্যরা ভিক্ষা বৃত্তি বাদ দিয়ে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে এ অনুদান প্রদান করা হয়েছে। আশা করছি এ সহযোগিতা তাদের বিকল্প কর্মসংস্হানে অনেক কাজে লাগবে। একই সাথে আমি বিশেষ চাহিদা সম্পর্ণ ব্যাক্তিদের( প্রতিবন্ধীদের) প্রস্তুতকৃত ঝাড়ু তার দফতরের প্রয়োজনে ক্রয় করা সহ অন্যদেরকেও কেনার অনুরোধ জানাচ্ছি।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মো. রতন শেখ বলেন, “শেখ হাসিনার দীক্ষা, ছাড়তে হবে ভিক্ষা।” এই মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরীর জন্য ইতিমধ্যে ঝাড়ু প্রস্তুত ও বিক্রি করতে শুরু করেছি। আজকের এই অনুদান ও ঋন নিয়ে আমারা ঝাড়ু তৈরির নতুন একটি কারখানা নির্মান করে নতুনভাবে নিজেদের জীবন যাত্রা শুরু করব।
প্রিন্ট