৮ সন্তানের জনক রমজান মন্ডল। চার পুত্র চার কন্যা। বয়স ৯০ এর কাছাকাছি। বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার মঘি ইউনিয়নের আরোয়াকান্দি গ্রামে। স্ত্রী লালমতি। বয়স ৮০ ছুই ছুই। উভয়ের শরীরেই বাসা বেধেছে নানান জটিল রোগ । চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন । বাবা মায়ের চিকিৎসা করাতে হবে। পিতা রমজান মন্ডলের বাড়িতে আট ভাই বোন একত্রিত হয় । জমি বিক্রি করে বাবার চিকিৎসা করা যেতে পারে, এ বিষয়ে ছয় ভাই বোন একমত পোষণ করে। কিন্তু বিপত্তিবাদে তখনই যখন বড় ভাই বাবর মেজ ভাই শহীদ জমি বিক্রি করে বাবা মায়ের চিকিৎসা করাতে দ্বিমত পোষণ করে। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। একপর্যায়ে কথা কাটাকাটি রূপ নেয় সহিংসতায়। উভয়পক্ষের মধ্যে শুরু হয় মারামারি। পরবর্তীতে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়।
এ সময় আহতদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ সজ্জা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার ১২ এপ্রিল আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মাগুরা সদর উপজেলার মঘী ইউনিয়নের আরোয়াকান্দি গ্রামে রমজান মন্ডলের নিজ বাড়িতে। পিটিয়ে আহত করা হয় রমজান মন্ডল, তার স্ত্রী লালমতি, ছেলে ওহাব মন্ডল, মেয়ে মিতা বেগমকে।
ভুক্তভোগী রমজান মন্ডলের দাবি, তার নিজের এবং তার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সম্পত্তি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিলে তার ৬ ছেলে মেয়ে একমত হলেও বাধা দেয় বড় ছেলে বাবর মন্ডল ও মেজো ছেলে শহীদ মন্ডল। শুরু হয় কথা কাটাকাটি । কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার বড় ও মেজ ছেলে এবং তাদের ছেলেরা তাকে সহ তার স্ত্রী, সেজ ছেলে এবং ছোট মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে।
রমজান মন্ডলের স্ত্রী লালমতি বেগম তার স্বামীর বক্তব্যের সত্যতা স্বীকার করেন।
রমজান মন্ডলের সেজো ছেলে ওহাব মন্ডল জানান, বাবা মায়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত অর্থ সংগ্রহের জন্য জমি বিক্রি কে কেন্দ্র করে তার বড় ভাই ও মেজ ভাই এবং তাদের ছেলেরা তাকে তার ছোট বোনকে এবং তার বাবা-মাকে পিটিয়ে আহত করেছে।
রমজান মন্ডলের ছোট মেয়ে মিতা বেগম বলেন, জমি বিক্রির বিষয়ে কথোপকথনের এক পর্যায়ে তার বড় ভাই বাবর মন্ডল তার পিতা কে উদ্দেশ্য করে বলেন, জমি লিখে দিবি তা না হলে লাশ ফেলে দিব।
তিনি আরোও জানান, বাবর আলীর ছেলে জসিম ও আলমগীর তার পিতা কে উদ্দেশ্য করে বলেন আগে জমি লিখে দিতে হবে তারপরে চিকিৎসা।
১২ এপ্রিল (শুক্রবার) সন্ধ্যার এই ঘটনার জেরে শনিবার আনুমানিক সকাল সাড়ে সাতটায় বাবর মন্ডল শহীদ মন্ডল এবং তার ছেলেরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছোট ভাই ইউনুস এর উপর অতর্কিত হামলা করেন এবং তাকে গুরুতর জখম করেন বলে জানিয়েছেন রমজান মন্ডলের ছোট ছেলে ইউনুছ মন্ডল।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শহীদ মন্ডল এবং সাগর মন্ডল কে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে পাওয়া যায়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা ক্যামেরার সামনে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি ।
প্রিন্ট