ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির বসন্ত উৎসব উদযাপন

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনায় শান্তিনিকেতনে সূচিত ও প্রবর্তিত বসন্ত উৎসবের আদলে কলকাতার রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির (জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি) উদ্যোগ ও পরিচালনায় শুক্রবার দুপুর ৩ টা থেকে মহাসমারোহে পালিত হয়েছে ঋতুরাজ বসন্ত আবাহন উৎসব। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গনে এই উৎসবের শুরুতে প্রথম পর্যায়ে শতাধিক মানুষজনের সাহচর্যে রথীন্দ্রমঞ্চ থেকে শুরু হয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে পায়ে চলা পথে হেঁটে কবিগুরুর বাসভবন, অন্দরমহলের প্রশস্ত চাতাল পূর্ণ প্রদক্ষিণ করে রথীন্দ্রমঞ্চের সামনে পদযাত্রা শেষ হয়।
পদযাত্রায় অংশ নেন আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ববর্গ, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রিত কলাকুশলীরা, সোসাইটির সদস্য/সদস্যাবৃন্দ, এবং সোসাইটির কর্মপরিচালন সমিতির কর্মকর্তাগণ। পদযাত্রা চলাকালীন সকলে সকলকে আবিরের রঙে রাঙিয়ে গান ও চলমান নৃত্যের মধ্য দিয়ে অপূর্ব মুহূর্তটিকে ব্যঞ্জনাময় করে তোলেন।
শ্রীখোল বাদ্যসহ সমবেত কণ্ঠে তিনটি রবীন্দ্রসঙ্গীত “ওরে গৃহবাসী”, “ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে” আর “ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায়” গানে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি অঙ্গন মুখরিত হয়ে ওঠে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকাল ৫টায় রথীন্দ্রমঞ্চে। উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়, সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, ধীমান দাশ, সব্যসাচী হাজারা, রুমেলা মুখার্জী, জয়শ্রী দে প্রমুখ। বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. পবিত্র সরকার, ড. সুজিত বসু, শ্রী অগ্নিভ বন্দোপাধ্যায়, শ্রীমতি হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায়, রাজেশ সিনহা (স্থানীয় পৌরপিতা)। উপস্থিত সকলেই জোড়াসাঁকো পুণ্যভূমি পরিক্রমায় অংশ নেন।
বসন্ত উৎসব উদযাপনের পটভূমি বিশ্লেষণ সহ সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের প্রারম্ভিক ভাষণের মধ্য দিয়ে মঞ্চ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
মঞ্চে উপবিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বগণ একে একে এই বসন্ত উৎসবের পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্য রাখেন এবং সোসাইটি আয়োজিত বসন্ত উৎসব উদযাপনের ভাবময়তা এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এরপর সমবেত সঙ্গীত, নৃত্য ও সমবেত আবৃত্তি সহযোগে বিভিন্ন পরিবেশনায় ছিলেন সৃজনী (রামকৃষ্ণ সারদা মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যাভবন), ভবন’স জি.কে.বিদ্যামন্দির, স্যার রমেশ মিত্র বালিকা বিদ্যালয় (উ:মা:), চারুকেশী, ছন্দনীড়, আনন্দলোক, আনন্দবিতান সংস্থা।
উপস্থাপনা গুণে প্রতিটি পরিবেশনা হয়ে ওঠে আনন্দপূর্ণ এবং মনোজ্ঞ। রথীন্দ্রমঞ্চের বাইরে দালানে অসামান্য দক্ষতায় ক্যানভাসে আবির- রঙে বসন্ত বন্দনা ফুটিয়ে তুলে সকলের মন জয় করে নেন চার বিখ্যাত চিত্রশিল্পী দীপঙ্কর সমাদ্দার, সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, কৌশিক মজুমদার ও অমিতাভ গুপ্ত।
রথীন্দ্রমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন লাইলী মুখার্জী।
চিত্রশিল্পী দীপঙ্কর সমাদ্দার, কৌশিক মজুমদার, সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, অমিতাভ গুপ্ত আবির ও রং দিয়ে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন বসন্ত ও রবীন্দ্রনাথ। চিত্রশিল্পীদের ছবি ঘিরে উপস্থিত দর্শকবৃন্দের মধ্যে এক আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। ছবির শেষে রথীন্দ্র মঞ্চে চারজন চিত্রশিল্পীকে রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির পক্ষ থেকে সম্মানিত করা হয়। সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় এ প্রতিবেদককে জানান -”বসন্ত বন্দনা অনুষ্ঠানে চিত্রশিল্পীদের এই লাইভ পেইন্টিং তাদের অনুষ্ঠানের একটা অন্য ভালোলাগা এনে দিল”
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির বসন্ত উৎসব উদযাপন

আপডেট টাইম : ১২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনায় শান্তিনিকেতনে সূচিত ও প্রবর্তিত বসন্ত উৎসবের আদলে কলকাতার রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির (জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি) উদ্যোগ ও পরিচালনায় শুক্রবার দুপুর ৩ টা থেকে মহাসমারোহে পালিত হয়েছে ঋতুরাজ বসন্ত আবাহন উৎসব। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গনে এই উৎসবের শুরুতে প্রথম পর্যায়ে শতাধিক মানুষজনের সাহচর্যে রথীন্দ্রমঞ্চ থেকে শুরু হয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে পায়ে চলা পথে হেঁটে কবিগুরুর বাসভবন, অন্দরমহলের প্রশস্ত চাতাল পূর্ণ প্রদক্ষিণ করে রথীন্দ্রমঞ্চের সামনে পদযাত্রা শেষ হয়।
পদযাত্রায় অংশ নেন আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ববর্গ, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রিত কলাকুশলীরা, সোসাইটির সদস্য/সদস্যাবৃন্দ, এবং সোসাইটির কর্মপরিচালন সমিতির কর্মকর্তাগণ। পদযাত্রা চলাকালীন সকলে সকলকে আবিরের রঙে রাঙিয়ে গান ও চলমান নৃত্যের মধ্য দিয়ে অপূর্ব মুহূর্তটিকে ব্যঞ্জনাময় করে তোলেন।
শ্রীখোল বাদ্যসহ সমবেত কণ্ঠে তিনটি রবীন্দ্রসঙ্গীত “ওরে গৃহবাসী”, “ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে” আর “ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায়” গানে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি অঙ্গন মুখরিত হয়ে ওঠে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকাল ৫টায় রথীন্দ্রমঞ্চে। উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়, সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, ধীমান দাশ, সব্যসাচী হাজারা, রুমেলা মুখার্জী, জয়শ্রী দে প্রমুখ। বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. পবিত্র সরকার, ড. সুজিত বসু, শ্রী অগ্নিভ বন্দোপাধ্যায়, শ্রীমতি হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায়, রাজেশ সিনহা (স্থানীয় পৌরপিতা)। উপস্থিত সকলেই জোড়াসাঁকো পুণ্যভূমি পরিক্রমায় অংশ নেন।
বসন্ত উৎসব উদযাপনের পটভূমি বিশ্লেষণ সহ সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের প্রারম্ভিক ভাষণের মধ্য দিয়ে মঞ্চ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
মঞ্চে উপবিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বগণ একে একে এই বসন্ত উৎসবের পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্য রাখেন এবং সোসাইটি আয়োজিত বসন্ত উৎসব উদযাপনের ভাবময়তা এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এরপর সমবেত সঙ্গীত, নৃত্য ও সমবেত আবৃত্তি সহযোগে বিভিন্ন পরিবেশনায় ছিলেন সৃজনী (রামকৃষ্ণ সারদা মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যাভবন), ভবন’স জি.কে.বিদ্যামন্দির, স্যার রমেশ মিত্র বালিকা বিদ্যালয় (উ:মা:), চারুকেশী, ছন্দনীড়, আনন্দলোক, আনন্দবিতান সংস্থা।
উপস্থাপনা গুণে প্রতিটি পরিবেশনা হয়ে ওঠে আনন্দপূর্ণ এবং মনোজ্ঞ। রথীন্দ্রমঞ্চের বাইরে দালানে অসামান্য দক্ষতায় ক্যানভাসে আবির- রঙে বসন্ত বন্দনা ফুটিয়ে তুলে সকলের মন জয় করে নেন চার বিখ্যাত চিত্রশিল্পী দীপঙ্কর সমাদ্দার, সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, কৌশিক মজুমদার ও অমিতাভ গুপ্ত।
রথীন্দ্রমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন লাইলী মুখার্জী।
চিত্রশিল্পী দীপঙ্কর সমাদ্দার, কৌশিক মজুমদার, সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, অমিতাভ গুপ্ত আবির ও রং দিয়ে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন বসন্ত ও রবীন্দ্রনাথ। চিত্রশিল্পীদের ছবি ঘিরে উপস্থিত দর্শকবৃন্দের মধ্যে এক আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। ছবির শেষে রথীন্দ্র মঞ্চে চারজন চিত্রশিল্পীকে রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির পক্ষ থেকে সম্মানিত করা হয়। সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় এ প্রতিবেদককে জানান -”বসন্ত বন্দনা অনুষ্ঠানে চিত্রশিল্পীদের এই লাইভ পেইন্টিং তাদের অনুষ্ঠানের একটা অন্য ভালোলাগা এনে দিল”