রমজানের কারণে তারাবির নামাজ পড়ে সবাই দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ রাতে আগুনের প্রকট শব্দ ও বিশাল আলোয় ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভাঙে দেখি আমার সব শ্যাষ। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তখন দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। মাত্র দুই ঘণ্টার আগুনে আমার সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’ এসব কথা বলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের জোতভালুকা গ্রামের দিনমজুর আরমান আলীর (৪০)।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে অগ্নিকাণ্ডে আরমান আলীর দুটি গরু ও একটি ছাগল দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। আরেকটি গরুর শরীর প্রায় ৮০ ভাগ ঝলসে গেছে। এ ছাড়া ভস্মীভূত হয়েছে তাঁর গোয়ালঘর। আরমান আলী জোতভালুকা গ্রামের মৃত আইজদ্দিন মণ্ডলের ছেলে।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল হক বলেন, ‘আগুন লাগার খবর শুনেছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করে পরে জানানো যাবে। লিখিত আবেদন পেলে নিয়ম অনুযায়ী সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।’
আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিন জানা গেছে, একটি দগ্ধ গরু মশারির ভেতরে রাখা হয়েছে। গরুটির ৮০ ভাগ শরীর, চোখ, মুখ ও কান পুড়ে গেছে। গোয়ালঘর পুড়ে ভস্মীভূত। পোড়া গোয়ালঘরের ভেতরে মরা একটি গরু ও একটি ছাগল রয়েছে। পাশেই পড়ে আছে আরও একটি মরা গরু। আশপাশে পোড়ার গন্ধ। অগ্নিকাণ্ডের শোকে ভেঙে পড়েছেন দিনমজুর আরমান ও তাঁর স্ত্রী নাছরিন খাতুন।
আরমান আলী বলেন, ‘রমজানের কারণে তারাবির নামাজ পড়ে সবাই দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ রাতে আগুনের প্রকট শব্দ ও বিশাল আলোয় ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভাঙে দেখি আমার সব শ্যাষ। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তখন দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। মাত্র দুই ঘণ্টার আগুনে আমার সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গরু, ছাগল, গোয়ালঘরসহ আমার প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।’
প্রতিবেশী বিল্লাল শেখ জানান, রাতে চিৎকার শুনে তাঁরা ছুটে গিয়ে দেখেন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এরপর কলস, হাঁড়ি-পাতিল, বালতি, বদনায় পানি ঢেলে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে আরমানের গোয়ালঘর, গোয়ালে থাকা দুটি গরু ও একটি ছাগল পুড়ে মারা গেছে। আরও একটি গরুর শরীর প্রায় ৮০ ভাগ আগুনে ঝলসে গেছে।
এদিকে দিনমজুর আরমান আলীর গোয়ালঘরে অগ্নিকাণ্ডের খবর জানা নেই বলে জানান কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও সদস্য।
প্রিন্ট