আজ ১৬ মে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর “হাসামদিয়া গণহত্যা” দিবস। এ উপলক্ষে কোন কর্মসূচি নেয়নি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
দিবসটি উপলক্ষে রবিবার সকালে শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজের পক্ষ থেকে কলেজ চত্বরে স্থাপিত শহীদদের স্মৃতির নামফলকে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন কলেজটির অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেন লিটন।
এ সময় শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। এ ছাড়া কলেজ মিলনায়তনে স্বাস্থ্য বিধি মেনে অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেনের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সন্তান প্রফেসর দেবাশিশ সাহা, উৎপল কুমার, জীবন কৃষ্ণ রায়, ডা. বিধান চন্দ্র দে, মহাদেব চক্রবর্তী, সুবিনয় পোদ্দার প্রমুখ।
আলোচনা সভায় শহীদ পরিবারের সন্তানরা তাদের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন – মহান মুক্তিযুূ্দ্ধে শহীদদের স্মরণেও রাজনৈতিক মেরুকরণ করা হয়। দেশে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করা হলেও আজ স্বীকৃতি মিলেনি হাসামদিয়া গণহত্যায় আত্মদানকারি শহীদদের।
লজ্জার বিষয় দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটিক স্মরণ করা উচিৎ ছিল অথচ তারা নিরব, এমন কী একটি মাল্যদান করারও সময় তাদের হয়নি। সভায় গণহত্যায় ৩৩ জন শহীদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জোর দাবি জানানো হয়।
উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদ কমান্ডার অধ্যাপক আব্দুর রশীদ জানান- প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হলেও করোনার জন্য এ বছর কোন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৬ মে তিন শতাধিক পাকসেনার একটি বহর যশোর থেকে রেলযোগে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর হাসামদিয়া গ্রামে তৎকালীন মুজিব বাহিনীর ফরিদপুর জেলা কমান্ডার শাহ মো. আবু জাফর ও তার নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজে আসে।
তাদেরকে না পেয়ে পাক বাহিনীর দোসর, স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় হাসামদিয়া, রামনগর, রাজাপুর, ময়েনদিয়া, রাজাবেনি, মিঠাপুর পোয়াইলসহ কয়েকটি গ্রামের ৩৩ জন নিরস্ত্র, নিরীহ গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় হিন্দু অধ্যাসিত এলাকায় আগুন ধরিয়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া হয় অর্ধ শতাধিক বাড়িঘর। স্থানীয় ময়েনদিয়া বাজারের চালানো হয় লুটপাট। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ৫০ এর অধিক দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
প্রিন্ট