ঢাকা , শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শালিখায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ Logo বড়াইগ্রামে প্রতিবন্ধীদের মাঝে সিআরপির প্রতিষ্ঠাতা ভ্যালেরি অ্যান টেইলর Logo ফরিদপুরে উদিচি শিল্প গোষ্ঠীর পঞ্চদশ জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo গৃহবধূ থেকে আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া Logo ফরিদপুরের কৃষ্ণনগরে শীর্তাতদের মাঝে ফারিয়ান ইউসুফের কম্বল বিতরণ Logo দেশের কোন মারকাজ আর ছেড়ে দেয়া হবে না Logo হাতিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ফিরোজ, সাধারণ সম্পাদক জিএম ইব্রাহীম Logo মিরপুরে পরিত্যক্ত টঙ ঘর থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার Logo লালপুরে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া Logo নাটোর শ্মশানে তরুন হত্যার ঘটনায় সবুজ নামে এক যুবক চট্রগ্রাম থেকে গ্রেফতার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভেড়ামারায় রঙিন ফুলকপি চাষে দারুণ চমক !

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় নওদা ক্ষেমিরদিয়াড় ও ইসলামপুর এলাকায় রঙিন ফুলকপি চাষ করে চমক দেখিয়েছেন সাইদুল ইসলাম ও সারিজুল ইসলাম নামের দুই কৃষক। বেগুনি ও হলুদ রঙের এই ফুলকপি দেখতে খুবই সুন্দর। খেতেও সুস্বাদু, পুষ্টিগুনও রয়েছে অধিক।

 

চলতি শীত মৌসুমে ৪০শত জমিতে কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবার এমন ব্যতিক্রম সবজির চাষ করে সাড়া ফেলেছেন এ দুই কৃষক।

 

ক্ষেত দুটিতে সবুজ পাতার ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে রঙিন ফুলকপি। একটি ক্ষেতের ফুলকপির রং বেগুনি, অপরটির হলুদ। বাহারি রঙের ফুলকপি দুটির নামও সুন্দর। বেগুনি রঙের ফুলকপির নাম ভ্যালেন্টিনা আর হলুদ রঙের ফুলকপির নাম ক্যারোটিনা।

 

ভেড়ামারায় পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রথমবার বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে রঙিন ফুলকপির চাষাবাদ। দেখতে সুন্দর, খেতে সুস্বাদু এবং বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকায় এর দামও বেশ ভালো।

 

ভেড়ামারার কৃষকরা সাদা জাতের ফুলকপি চাষ করলেও এবার চাষ করেছেন রঙিন জাতের ফুলকপি। বাজারে এ জাতের ফুলকপির দাম ভালো পাওয়ার চাষীদের মুখে হাঁসি।

 

এই উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে এ রঙিন ফুলকপি চাষ ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনীসহ উপকরণ চারা, সার, জৈব, বালাইনাশক দিয়ে সহযোগিতা করছে ভেড়ামারা কৃষি অফিস।

 

প্রথমে কেউ আগ্রহ দেখাননি। পরে নওদা ক্ষেমিরদিয়াড় গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান ২০ শতাংশ জমিতে এই প্রথম রঙিন ফুলকপি পরীক্ষামূলকভাবে চাষের উদ্যোগ নেন। তিনি কৃষি অফিস থেকে ফুলকপির চারা, জৈব সার, কীটনাশক ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে রঙিন ফুলকপি চাষ শুরু করেন এবং সফল হয়েছেন।

 

তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়া ও চীনসহ অন্যান্য দেশে এ জাতের ফুলকপি সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও সুন্দর।

 

তার মতে, সাধারণ ফুলকপি চাষের যে পদ্ধতি ওই একই পদ্ধতিতে রঙিন ফুলকপি চাষ হয়। খরচ ও পরিশ্রম একই। শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এই ফুলকপি চাষ করা যায়।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রবি মৌসুমে ৭৬৭ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ১৯১ হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় ২৩০ হেক্টর, খোকসা উপজেলায় ২২ হেক্টর, কুমারখালী উপজেলায় ৫১ হেক্টর, মিরপুর উপজেলায় ৭৮ হেক্টর এবং দৌলতপুর উপজেলায় ১৯৫ হেক্টর জমিতে সাদা ফুলকপির চাষ হয়েছে।

 

স্থানীয় উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানান, চারা রোপণের পর থেকে আড়াই মাসের (৮০ দিনের) মধ্যে জমি থেকে রঙিন ফুলকপি তোলা যাচ্ছে। এই ফুলকপি চাষে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে না। শুধু জৈব সার ছিটানো লাগে।

 

উপজেলার নওদা ক্ষেমিরদিয়াড় গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম জানান, আমি এই রঙিন ফুলকপির চাষ কোনো দিন করিনি। পেঁয়াজ ও বিভিন্ন সবজির আবাদ করি। কিছুদিন আগে ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমি বিভিন্ন উচ্চমূল্যের সবজি চাষের ওপরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। সেখানে জানতে পারি যে, সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপি বেশি লাভজনক। তাই কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সহযোগিতায় আমি ২০ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপির চাষ করেছি। আমি বিষমুক্তভাবে চাষ করছি। পোকা মারার জন্য হলুদ ফাঁদ এবং সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করছি। তিনি আরো বলেন, ভালো ফলন ও সাধারণ ফুলকপির চেয়ে বেশি দাম পাওয়ায় উৎসাহী হয়ে আগামী মৌসুমে পুরো জমিতেই এই রঙিন ফুলকপি চাষ করবো।

 

ইসলামপুর গ্রামের সারিজুল ইসলাম জানান, মরিচ, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুনের চাষ করি। এ বছর আমি রঙিন ফুলকপির চাষ করেছি। বাজারে এ রঙিন ফুলের দাম বেশি। কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, পরিচর্যার খরচও দিয়েছে। আগামীতে এই এলাকায় অনেকেই এ চাষ করবে।

 

রঙিন ফুলকপি চাষে উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের নওদা ক্ষেমিরদিয়াড় গ্রামের সাইদুর রহমান ও ইসলাম পুর গ্রামের সারিজুল ইসলামের সাফল্য স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

 

তাদের এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন কৃষকসহ উৎসুক মানুষ। তারা কেউ কেউ রঙিন ফুলকপি কিনছেন, কেউ চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।

 

এলাকার মানুষ আগ্রহী হয়ে ভালো দাম দিয়ে খেত থেকেই এই ফুলকপি কিনে নিচ্ছেন। বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব রঙিন ফুলকপি। মাঝারি আকৃতির একেকটি ফুলকপি ৪০/৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে।

 

উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বিশ্বনাথ পাল বলেন, রঙিন ফুলকপির মধ্যে রয়েছে বিটা কেরোটিন এবং এন্টি অক্সডিন্টে থাকার কারনে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। মানব শরীরের ক্যান্সার ও হৃদ রোগের ঝুকিগুলো অনেকাংশে কমায়। চোঁখ ও ত্বককে সুন্দর রাখে। পুষ্টির চাহিদাটাও মেটাতে অতি সক্ষম হয়।

 

ভেড়ামারা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিসার মাহমুদা সুলতানা বলেন, পুষ্টিগুণ ও বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপি চাষ বেশি লাভজনক। অত্র উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে মোকারিমপুর ইউনিয়নের ২টি গ্রামে রঙিন ফুলকপি চাষ করা হয়েছে। রঙিন ফুল কপি চাষের জন্য অফিস থেকে সার ও বীজ সরবরাহের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও নজর কাড়ার মতো। ফলন ভাল হওয়ায় আগামিতে ব্যাপকভাবে রঙিন ফুল কপির চাষ হবে এই উপজেলায়। রঙিন ফুল কপি চাষ করা দেখে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামিতে কৃষকরা দক্ষতার সাথে রঙিন ফুলকপির চাষাবাদ করবে বলে আশা ব্যাক্ত করেছেন।

 

অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ ফেরদৌসী বলেন, কৃষকের মধ্যে কৃষিবিষয়ক নতুন তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ নিরলসভাবে মাঠপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আগামী বছর রঙিন ফুলকপির চাষির সংখ্যা আরও বাড়বে। বাজারে রঙিন ফুলকপির চাহিদাও বেশ। বাজারে নিয়ে বসে থাকতে হয় না আগ্রহ নিয়ে ক্রেতারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া রঙিন ফুলকপি পুষ্টিকর এবং খেতেও সুস্বাদু বলে জানান তিনি।

 

 

ইতোমধ্যে কৃষকরা এ রঙিন ফুলকপি বাজারজাত করে বেশ ভালো লাভবান হচ্ছে। পুষ্টিগুণ এবং বাজারে দাম ভালো হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহী এ রঙিন ফুলকপি চাষে। কৃষকরা বলেন, চাষ পদ্ধতি সাদা ফুলকপির মতো হলেও সাদা ফুলের তুলনায় রঙিন ফুল কপি বেশি লাভজনক বলে জানান কৃষকরা।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

শালিখায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ

error: Content is protected !!

ভেড়ামারায় রঙিন ফুলকপি চাষে দারুণ চমক !

আপডেট টাইম : ০৫:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার :

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় নওদা ক্ষেমিরদিয়াড় ও ইসলামপুর এলাকায় রঙিন ফুলকপি চাষ করে চমক দেখিয়েছেন সাইদুল ইসলাম ও সারিজুল ইসলাম নামের দুই কৃষক। বেগুনি ও হলুদ রঙের এই ফুলকপি দেখতে খুবই সুন্দর। খেতেও সুস্বাদু, পুষ্টিগুনও রয়েছে অধিক।

 

চলতি শীত মৌসুমে ৪০শত জমিতে কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবার এমন ব্যতিক্রম সবজির চাষ করে সাড়া ফেলেছেন এ দুই কৃষক।

 

ক্ষেত দুটিতে সবুজ পাতার ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে রঙিন ফুলকপি। একটি ক্ষেতের ফুলকপির রং বেগুনি, অপরটির হলুদ। বাহারি রঙের ফুলকপি দুটির নামও সুন্দর। বেগুনি রঙের ফুলকপির নাম ভ্যালেন্টিনা আর হলুদ রঙের ফুলকপির নাম ক্যারোটিনা।

 

ভেড়ামারায় পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রথমবার বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে রঙিন ফুলকপির চাষাবাদ। দেখতে সুন্দর, খেতে সুস্বাদু এবং বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকায় এর দামও বেশ ভালো।

 

ভেড়ামারার কৃষকরা সাদা জাতের ফুলকপি চাষ করলেও এবার চাষ করেছেন রঙিন জাতের ফুলকপি। বাজারে এ জাতের ফুলকপির দাম ভালো পাওয়ার চাষীদের মুখে হাঁসি।

 

এই উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে এ রঙিন ফুলকপি চাষ ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনীসহ উপকরণ চারা, সার, জৈব, বালাইনাশক দিয়ে সহযোগিতা করছে ভেড়ামারা কৃষি অফিস।

 

প্রথমে কেউ আগ্রহ দেখাননি। পরে নওদা ক্ষেমিরদিয়াড় গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান ২০ শতাংশ জমিতে এই প্রথম রঙিন ফুলকপি পরীক্ষামূলকভাবে চাষের উদ্যোগ নেন। তিনি কৃষি অফিস থেকে ফুলকপির চারা, জৈব সার, কীটনাশক ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে রঙিন ফুলকপি চাষ শুরু করেন এবং সফল হয়েছেন।

 

তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়া ও চীনসহ অন্যান্য দেশে এ জাতের ফুলকপি সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও সুন্দর।

 

তার মতে, সাধারণ ফুলকপি চাষের যে পদ্ধতি ওই একই পদ্ধতিতে রঙিন ফুলকপি চাষ হয়। খরচ ও পরিশ্রম একই। শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এই ফুলকপি চাষ করা যায়।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রবি মৌসুমে ৭৬৭ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ১৯১ হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় ২৩০ হেক্টর, খোকসা উপজেলায় ২২ হেক্টর, কুমারখালী উপজেলায় ৫১ হেক্টর, মিরপুর উপজেলায় ৭৮ হেক্টর এবং দৌলতপুর উপজেলায় ১৯৫ হেক্টর জমিতে সাদা ফুলকপির চাষ হয়েছে।

 

স্থানীয় উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানান, চারা রোপণের পর থেকে আড়াই মাসের (৮০ দিনের) মধ্যে জমি থেকে রঙিন ফুলকপি তোলা যাচ্ছে। এই ফুলকপি চাষে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে না। শুধু জৈব সার ছিটানো লাগে।

 

উপজেলার নওদা ক্ষেমিরদিয়াড় গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম জানান, আমি এই রঙিন ফুলকপির চাষ কোনো দিন করিনি। পেঁয়াজ ও বিভিন্ন সবজির আবাদ করি। কিছুদিন আগে ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমি বিভিন্ন উচ্চমূল্যের সবজি চাষের ওপরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। সেখানে জানতে পারি যে, সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপি বেশি লাভজনক। তাই কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সহযোগিতায় আমি ২০ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপির চাষ করেছি। আমি বিষমুক্তভাবে চাষ করছি। পোকা মারার জন্য হলুদ ফাঁদ এবং সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করছি। তিনি আরো বলেন, ভালো ফলন ও সাধারণ ফুলকপির চেয়ে বেশি দাম পাওয়ায় উৎসাহী হয়ে আগামী মৌসুমে পুরো জমিতেই এই রঙিন ফুলকপি চাষ করবো।

 

ইসলামপুর গ্রামের সারিজুল ইসলাম জানান, মরিচ, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুনের চাষ করি। এ বছর আমি রঙিন ফুলকপির চাষ করেছি। বাজারে এ রঙিন ফুলের দাম বেশি। কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, পরিচর্যার খরচও দিয়েছে। আগামীতে এই এলাকায় অনেকেই এ চাষ করবে।

 

রঙিন ফুলকপি চাষে উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের নওদা ক্ষেমিরদিয়াড় গ্রামের সাইদুর রহমান ও ইসলাম পুর গ্রামের সারিজুল ইসলামের সাফল্য স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

 

তাদের এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন কৃষকসহ উৎসুক মানুষ। তারা কেউ কেউ রঙিন ফুলকপি কিনছেন, কেউ চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।

 

এলাকার মানুষ আগ্রহী হয়ে ভালো দাম দিয়ে খেত থেকেই এই ফুলকপি কিনে নিচ্ছেন। বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব রঙিন ফুলকপি। মাঝারি আকৃতির একেকটি ফুলকপি ৪০/৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে।

 

উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বিশ্বনাথ পাল বলেন, রঙিন ফুলকপির মধ্যে রয়েছে বিটা কেরোটিন এবং এন্টি অক্সডিন্টে থাকার কারনে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। মানব শরীরের ক্যান্সার ও হৃদ রোগের ঝুকিগুলো অনেকাংশে কমায়। চোঁখ ও ত্বককে সুন্দর রাখে। পুষ্টির চাহিদাটাও মেটাতে অতি সক্ষম হয়।

 

ভেড়ামারা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিসার মাহমুদা সুলতানা বলেন, পুষ্টিগুণ ও বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপি চাষ বেশি লাভজনক। অত্র উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে মোকারিমপুর ইউনিয়নের ২টি গ্রামে রঙিন ফুলকপি চাষ করা হয়েছে। রঙিন ফুল কপি চাষের জন্য অফিস থেকে সার ও বীজ সরবরাহের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও নজর কাড়ার মতো। ফলন ভাল হওয়ায় আগামিতে ব্যাপকভাবে রঙিন ফুল কপির চাষ হবে এই উপজেলায়। রঙিন ফুল কপি চাষ করা দেখে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামিতে কৃষকরা দক্ষতার সাথে রঙিন ফুলকপির চাষাবাদ করবে বলে আশা ব্যাক্ত করেছেন।

 

অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ ফেরদৌসী বলেন, কৃষকের মধ্যে কৃষিবিষয়ক নতুন তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ নিরলসভাবে মাঠপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আগামী বছর রঙিন ফুলকপির চাষির সংখ্যা আরও বাড়বে। বাজারে রঙিন ফুলকপির চাহিদাও বেশ। বাজারে নিয়ে বসে থাকতে হয় না আগ্রহ নিয়ে ক্রেতারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া রঙিন ফুলকপি পুষ্টিকর এবং খেতেও সুস্বাদু বলে জানান তিনি।

 

 

ইতোমধ্যে কৃষকরা এ রঙিন ফুলকপি বাজারজাত করে বেশ ভালো লাভবান হচ্ছে। পুষ্টিগুণ এবং বাজারে দাম ভালো হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহী এ রঙিন ফুলকপি চাষে। কৃষকরা বলেন, চাষ পদ্ধতি সাদা ফুলকপির মতো হলেও সাদা ফুলের তুলনায় রঙিন ফুল কপি বেশি লাভজনক বলে জানান কৃষকরা।


প্রিন্ট