১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আত্রাই রেলওয়ে স্টেশনটি ছিলো স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার আল বদর ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতন ও টর্চার সেল (ক্যাম্প)। পাক বাহিনীরা ওই সময় পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে অসংখ্য নিরীহ স্বাধীনতাকামী মুক্তিবাহিনী ও স্কুল কলেজগামী টগবগে যুবক দের ধরে এনে এ স্টেশন ঘরে নির্যাতন করে তাদের জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিতো (হত্যা) করত।
এছাড়াও অনেক বাঙালী শিক্ষিত যুবতী মেয়েদের কে এখানে ধরে এনে জোরপূর্বক ধর্ষণ করত এর পর হত্যা করত। আত্রাইয়ে ১৯৭১ সালের ২৬শে মে সিংসাড়া গ্রামে ভোর রাতে হামলা চালিয়ে তরতাজা ২৯ জন স্বাধীনতা ও মুক্তি কামী বাঙালীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
২৯ জন শহীদের স্মৃতিফলক টি গত ২০০৯ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তারিখে উদ্ভোদন করেন মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান। এখানে উল্লেখ্য যে ২৯ জন শহীদের মধ্যে একজন ছিলেন হানিফ নামের একজন ব্যাংক ম্যানেজার তিনি ন্যাশনাল ব্যাংক আত্রাই শাখার ব্যবস্হাপক।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি ব্যাংকের প্রায় ৩০ হাজার টাকা সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সদস্য আবুল হাসেমের মাধ্যমে সংগ্রাম পরিষদের আরেক সদস্য ওহিদুর রহমানের হাতে তুলে দিয়ে বলেছিলেন আপনারা দেশ স্বাধীন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেজন্য টাকা গুলো দিলাম। ব্যাংকে থাকেল কেউ না কেউ টাকা গুলো লুট করে নিয়ে যাবে যুদ্ধ পরিচালনার সময় টাকা গুলোর প্রয়োজন হবে। দেশের ক্লান্তি নগ্নে তৎকালীন ব্যাংক ম্যানেজার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হানিফের দেশ প্রেমিকতার নজিরবিহীন ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
এছাড়া আত্রাই উপজেলার মিরাপুর গ্রামের আরেক বধ্যভূমির সন্ধান মিলেছে। ১৯৭১ সালের ১০ জুলাই এখানে আত্রাই এর মিরাপুর ও রাণীনগরের কৃষ্ণপুর পাশাপাশি দুটি গ্রাম থেকে ধরে আনে কয়েকজন মুক্তিযুদ্ধোসহ ২২ জন মুক্তিকামী বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এই বধ্যভূমি টি স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর আজও চিহ্নিত করণ বা সংরক্ষণের কোন ব্যবস্হা করা হয়নি।
প্রিন্ট