গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের গেরাখোলা (দক্ষিণ পাড়া) গ্রামের মৃত রাঙা তালুকদারের ছেলে রুহুল আমিন তালুকদার (২৭) জোর পূর্বক তার নিজের মামা আব্দুল মান্নানের (৬০) জমি দখলের চেষ্টা করছে এবং পরিবারের লোকজনকে মারধর করে মালামাল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভয়ে অসহায় পরিবারটি ঘর থেকে বের হতে পারছে না। এ ব্যাপারে মান্নানের মেয়ে মীম বেগম (২০) বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত রুহুল আমিন তালুকদার তার নিজের মামার ক্রয়কৃত বসতির জমি দখল করে রুহুলের বাড়ির রাস্তা করার চেষ্টা করে আসছিলো। লোক চলাচলের রাস্তা দেওয়া সত্বেও জোর পূর্বক আরো জায়গা নিতে চেষ্টা করে আসছিলো রুহুল। এরই জের ধরে গত ১০ ডিসেম্বর রবিবার সকালে রুহুল সহ তার লোকজন নিয়ে মান্নানের বাড়িতে ঢুকে ভাঙ্গচুর শুরু করে, ঘরে ঢুকে মালামাল এবং টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় বাড়িতে থাকা মান্নান শেখের স্ত্রী সহ মেয়েরা বাঁধা দিলে রুহুল আমিন ও তার লোকজন তাদের বেধড়ক মারধর করে আহত করেন। এতে মান্নান শেখের স্ত্রী পারভীন বেগম (৫৫) গুরুতর আহত অবস্থায় কাশিয়ানী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি রয়েছেন। এসময় তাদের সাথে থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। একটি ছাগীর দুটি বাচ্চা রেখে ছাগিটিকে নিয়ে যায়। রুহুল আমিনের হুমকি এবং মারপিটের ভয়ে অসহায় পরিবারটি ঘর থেকে বের হতে পারছে না।
মান্নান শেখ বলেন, আমি আমার ক্রয়কৃত জমির ওপর বসত করে আসছি। লোকজন যাতায়াতের জন্য রাস্তা দিয়েছি। এখন আমার আরও জমি দখলে নিয়ে রুহুল আমিন তালুকদার তার নিজের সুবিধা মত রাস্তা করতে চাচ্ছে। আমার কোন ছেলে নেই, আমার ৫ টি মেয়ে সন্তান। আমার ছেলে না থাকায় সে আমাকে বিভিন্ন ভাবে ভয় ও হমকি দিচ্ছে। ছোট মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছি রুহুলের ভয়ে। রবিবার সকালে রুহুল সহ তার সাথে লোকজন নিয়ে এসে আমাকে, আমার স্ত্রী সহ মেয়েদের মারধর করে আহত করে আমার ঘরের বিভিন্ন মালামাল, স্বর্ণের জিনিস, একটি ছাগী নিয়ে গেছে। আমার স্ত্রী বেশি আহত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি। আমি ওদের ভয়ে মেয়েদের নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে আছি। ঘর থেকে বের হতে পারছি না।
মহেশপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ শাখাওয়াত মোল্লা বলেন, ঘটনা যা ঘটেছে সঠিক, আমি কাশিয়ানী হাসপাতালে আহত রোগীকে দেখতে এসেছি। টি মিমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করবো।
মহেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান লুথুর নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রুহুল আমিন তালুকদার আমার আত্মীয়, এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি এতটুকু বলেই চড়াও হয়ে লাইন কেটে দেন।
অভিযুক্ত রুহুল আমিন তালুকদারকে এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ফোনে চার্জ নাই, এখন কথা বলতে পারবো না বলেেই লাইন কেটে দেন।
কাশিয়ানী থানার এস আই মিজান ফকির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি আমি দেখে এসেছি, পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা যেটা হয় আমি সেটা নিবো।
প্রিন্ট