দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র বাছাইয়ে নির্বাচনী এলাকার এক শতাংশ ভোটার সমর্থনের তালিকা যথাযথ না দিতে পারায় মনোনয়ন পত্র বাতিল হয় কুষ্টিয়া-১ আসন দৌলতপুর উপজেলার তিন প্রার্থীর।
এদের মধ্যে সকলেই স্বতন্ত্র প্রার্থীচ্ছু। ফারুক হোসেন, নাজমুল হুদা (পটল) এবং ফিরোজ আল মামুনের দৌলতপুর উপজেলার মোট ৩ লাখ ৮০ হাজার ২৮৭ ভোটারের মধ্যে শতকরা একজনের করে বা এক শতাংশ সাক্ষরসহ সমর্থন জমা দেয়ার কথা থাকলেও তারা তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এই তিন প্রার্থীর মধ্যে ফারুক হোসেনকে নির্বাচনী এলাকায় অধিকাংশ মানুষ চিনতে পারেননি। উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা তিনি।
দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আফাজ উদ্দিন আহমেদের বড় পুত্র নাজমুল হুদা পটল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, তবে বর্তমানে ছন্দপতনে তিনি। দ্বাদশ নির্বাচনী কার্যক্রম শুরুর আগেও তিন ভাইয়ের রাজনৈতিক বিভক্তি এবং একই সাথে প্রার্থীতা প্রকাশ নিয়ে দৌলতপুরের ভোটারদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনায় ছিলেন তাঁরা। তিন ভাইয়ের মধ্যে বর্তমান প্রেক্ষাপটে পারিবারিক রাজনীতির সবচেয়ে বড় ধারা ধরে রেখেছেন আফাজ উদ্দিন আহমেদের কনিষ্ঠ পুত্র এজাজ আহমেদ মামুন, যিনি বর্তমানে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। যদিও এজাজ আহমেদ মামুনের সাথে রাজনৈতিক কোনো উল্লেখযোগ্য সম্পৃক্ততা নেই বাকি দু-ভাইয়ের। বরং, প্রচলিত আছে ব্যাপক মনোমালিন্য ও রাজনৈতিক দ্বিধাবিভক্তীর কথা। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন আবেদন করেছিলেন এজাজ আহমেদ মামুন, তা না পাওয়ায় প্রার্থীতা থেকে সরে এসেছেন তিনি।
নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করার প্রতিশ্রুতিতে মাঠে কাজ করতে সাম্প্রতিক আগেও দেখা গেছে তাঁকে, যেখানে জানিয়েছেন যেকোনো পরিস্থিতিতে নৌকার পক্ষে কাজ করতে তাঁর প্রতিশ্রুতির কথা।
অন্যদিকে ফিরোজ আল মামুন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাংগঠনিক পরিচয়ে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা, দৌলতপুরের জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক, ও ভোটে বিজয়ের নানান অর্জন তাঁর। তবে ভোটের মাঠের লড়াইয়ে তাঁর দীর্ঘ সময়ের অনুপস্থিতি স্থবির করে রেখেছে ব্যক্তিগত কর্মী-সমর্থকদের। আবার স্বতন্ত্র হওয়ায়, পাচ্ছেন না নিজ দলীয় নেতাকর্মী বা সতীর্থদের সমর্থন।
মনোনয়ন পুনরায় বৈধ হওয়া প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু আনছার বলেন, যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তারা নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছেন, শুনানি চলছে নিয়মিত। পুনরায় কে বা কারা বৈধতা পেলেন জানতে সময় লাগবে দু’দিন। তিনি জানান নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে সকল জেলায় দাপ্তরিক ভাবে জানিয়ে দেয়া হবে।
ফিরোজ আল মামুন ও নাজমুল হুদা পটলের সাথে কথা হলে তারা দাবি করেন, তাদের মনোনয়ন আবেদন পুনরায় বৈধতা পেয়েছে।
জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক কোনো পুন: বৈধতা সনদ দেয়া হয়নি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বাতিল হওয়া প্রার্থীদের।
প্রিন্ট