শিবপুরে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হল বাংলাদেশের রাষ্ট্র মালিকানাধীন বিশেষায়িত একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। প্রবাসী বাংলাদেশীদের আর্থিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ২০১০ সালে এই ব্যাংক সরকার প্রতিষ্ঠা করে। এই ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হলো বিদেশ গমনের জন্য বেকার যুবকদের বিনা জামানতে এক থেকে তিন লক্ষ টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা। কিন্তু কতটা স্বচ্ছতার সাথে তারা সেই দায়িত্ব পালন করছে! নরসিংদীতে শিবপুরে এই ব্যাংকের একটি শাখা রয়েছে। সেই ব্যাংকের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে উঠেছে ঘুষের টাকা না পেয়ে ঋণ বাতিলের অভিযোগ।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছেন মনোহরদীর মাকসুদুল হক নামক এক ব্যক্তি। অভিযোগ থেকে জানা যায়, মনোহরদীর হাফিজপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে মাকসুদুল হক। তিনি সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা জমা দিয়েছেন। সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য। কিন্তু প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ম্যানেজার কবিরুল হাসানের চাহিদা মত ঘুষ প্রদান না করায় তার ঋণ প্রস্তাবটি বাতিল করা হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মাকসুদুল হক মোবাইল ফোনে জানান, আমি সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য বহু কষ্টে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা সৌদি আরবের এম্বাসিতে জমা দিয়েছি, ব্যাংক থেকে আমাকে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তার জন্য আমার কাছে 20 হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়, আমি ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি করলে আমার ঋণ প্রস্তাবটি বাতিল করা হয়।এম্বাসিতে জমা দেওয়া সাড়ে তিন লাখ টাকাও ক্ষতির সম্মুখীন।
এ বিষয়ে সরেজমিনে কথা হয় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের শিবপুর শাখার ম্যানেজার কবিরুল হাসানের সাথে। তিনি জানান আমাদের পলিসিতে পড়ে নাই তাই ঋণ পায়নি। কোন পলিসিতে পাইনি জানতে চাইলে তিনি বলেন, জামিনদারের কোন দোকান নেই, তাই অডিট অফিসার ঋণ বাতিল করেছেন। সেই অফিসারের মোবাইল নাম্বার এবং কথা বলতে চাইলে তিনি সেটা দিতে অস্বীকৃতি জানান। শুধু তাই নয় নরসিংদীর সিনিয়র সাংবাদিক দিয়ে ফোন দেওয়ান তিনি। নিজের আত্মীয় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেটি জানান দিয়ে সাংবাদিকদের নিজের ক্ষমতা দেখাতে চান। এ ধরনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জন্য সরকারের নেওয়া প্রবাসী বাংলাদেশীদের আর্থিক সাহায্য দানে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কারণে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, ঘুষ না দিলে এখান থেকে বিভিন্ন কৌশলে ঋণ প্রস্তাব গুলি বাতিল করা হয় ও আরো জানান বিভিন্ন নেতাদের ফোন না গেলে ঋণ পাওয়া যায় না, তাই ভোগান্তিতে পড়ছে অনেকেই।
যেখানে বিনা জামানতে ঋণ দেওয়ার কথা বলা থাকলেও সেখানে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ঋণ বাতিল করছেন তারা।
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ নজর দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা ভুক্তভোগী পরিবার ও নরসিংদী বাসীর।
প্রিন্ট