আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রায়, ২২ জন প্রার্থী ও নতুন নিবন্ধন প্রাপ্ত বিএনএম থেকে ১ জন প্রার্থীর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতায় থাকার সময়ে বিএনপি আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেননা। তাঁরা সরকার পতনে ব্যস্ত রয়েছে।
এর মধ্যে সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে দেশের যে আমূল পরিবর্ত হয়েছে তা তুলে ধরে নৌকায় ভোট চেয়ে বেড়াতে দেখা গেছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশীকে জনগণ এখনো চেনেননা। তারাও দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। দিন যত ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মী তত তৎপর হয়ে উঠছে। তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা সরকার পতন আন্দোলনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
অপর দিকে ২০ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য প্রভাবশালী নেতা শাহ মুহাম্মদ আবু জাফর জাতীয়তাবাদী বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট (বিএনএম) নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পেয়েছেন। তিনি আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনে তাঁর দলের দলীয় এমপি প্রার্থী হিসেবে থাকবেন বলে জানা গেছে। তাকে ঘিরে তার সমর্থনের নেতাকর্মীরা ফেসবুকে নানা কুরুচি মন্তব্য করছেন।
- আরও পড়ুনঃ চারবারের এমপি’র পাঁচবার দল বদল!
শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে, ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে এবং সবশেষ ২০০৫ সালে ফরিদপুর-১ আসনের (মধুখালী, আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী) উপ-নির্বাচনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যদিও বিএনপিতে যোগদানের পর সাধারণ জাতীয় নির্বাচনে তিনি জয়ী হতে পারেননি।
বোয়ালমারী আলফাডাঙ্গা-মধুখালী তিন উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর -১ আসন। তবে এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে কাকে মনোনয়ন দিবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ।
রোববার ২৬ নভেম্বর জানা যাবে কে হচ্ছেন ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী। এর মধ্যে অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা ঢাকায় অবস্থান করছেন।
ফরিদপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ২২ জন।
মনোনয়ন সংগ্রহ প্রত্যাশীরা হলেন; বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট লিয়াকত সিকদার, বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সিরাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ শামীম রেজা, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান দোলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, পুলিশের সাবেক এআইজি ও বর্তমান এমপি মনজুর হোসেন বুলবুলের সহদর মালিক খসরু, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির কমিটির সাবেক সদস্য ডা. গোলাম কবীর, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ খান মঈনুল ইসলাম মোস্তাক, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন, শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি লায়ন সাখাওয়াত হোসেন, ইউনিভার্সিটি অব পুন্ড্র সাইন্স এন্ড টেকনোলজির সাবেক ভিসি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. লুৎফর রহমান, যুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার বখতিয়ার রহমান বতু, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মো. খায়ের মিয়া, ডেফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রভাষক শেখ আব্দুর রহিম ও ফরিদপুর জেলা কৃষকলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাজারুল ইসলাম টুকু।
তবে আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মনজুর হোসেন বুলবুল এবার মনোনয়ন সংগ্রহ করেননি। তাঁর মনোনয়ন সংগ্রহ না করার কারণ এখনও জানা যায়নি।
ফরিদপুর-১আসন আওয়ামী লীগের ঘাটি হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। তবে সঠিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলে এবার ব্যত্যয় ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সাধারণ জনগণ।
বিএনপির মতো বড় দল এবার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করাতে তেমন কোন সাড়া নেই এ আসনে। তবে শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর দল রদবদলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠছে এলাকা জুড়ে।
প্রিন্ট