ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বালিয়াকান্দির ‘উকুন খোটা’ স্কুল এখন দেশসেরা হওয়ার অপেক্ষায় Logo তানোরের নারায়নপুর স্কুলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান Logo বাঘায় গলা কেটে হত্যা, নিহতের ভাইরা ভাই রায়হান গ্রেপ্তার Logo দামের উত্তাপে ইলিশ এখন ছুঁয়ে দেখতেও ভয় Logo গোপালগঞ্জে দূর্নীতি ও প্রতারণা করা সেই ত্রাণ কর্মকর্তার তদন্ত শুরু Logo কুষ্টিয়ায় জেল পলাতক আসামি রুবেল গ্রেফতার Logo আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবসহ সেবাদান প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়ালেন আদিত্য ফাউন্ডেশন Logo ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার Logo এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র Logo মাগুরা শ্রীপুরে মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী গ্রেফতার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

তফসিল বাতিলের আহ্ববান ১৪১ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার

-ফাইল ছবি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। পাশাপাশি কারাবন্দি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

 

আজ বুধবার (২২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান। বিবৃতি দাতাদের পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ ও সাবেক যুগ্ম সচিব মো. আবদুল বারী।

 

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘দেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক বিশ্বের দাবি উপেক্ষা করে সরকারি দল তথা আওয়ামী লীগের পরামর্শ ও নির্দেশনা মোতাবেক আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন (ইসি) একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে দেশ ও জাতিকে একটি সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইসি সরকারের একতরফা নির্বাচন আয়োজনে সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’

 

কর্মকর্তাগণ বলেন, ‘সরকার জনআকাংক্ষা, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের দাবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, এমিক্যাসকিউরিদের বিশেষজ্ঞ মতামত, এমনকি নিজ দলের সংসদীয় কমিটির মূল সুপারিশ উপেক্ষা করে ১৯৯৬ সনে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে মীমাংসিত ও নন্দিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ২০১১ সনে বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ সৃষ্টি করে। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের পর ২০১৪ ও ২০১৮ সনে অনুষ্ঠিত ২ টি নির্বাচনে জনগণ আর ভোট দিতে পারেনি। বিশেষকরে ২০০৮ এর পর নতুনভাবে ভোটার হওয়া কোটি কোটি যুবক ভোটার এ পর্যন্ত একবারের জন্যও ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনে নজিরবিহীনভাবে ১৫৩ জন সংসদ সদস্যকে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত করিয়ে নেয়া হয়। আলোচনার মাধ্যমে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেও ২০১৮ সনের নির্বাচনটি প্রহসনে পরিণত হয়। নির্বাচনের আগের দিন মধ্যরাতে ভোট হয়ে যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ ওঠে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে।’

 

তারা বলেন, ‘দেখা যায় বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরাই বিজয়ী হয়েছে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সরকার পরিবর্তিত হয়েছে। সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়েই আদালতের রায়ের অজুহাত দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে বর্তমান সংকটের সৃষ্টি করেছে।’

 

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘দেশের বর্তমান সংবিধান এবং রুলস অব বিজনেস অনুসারে প্রধানমন্ত্রী সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। যিনি একাধারে দলীয় প্রধান, সরকারের নির্বাহী প্রধান এবং সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধান। সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন সরাসরি তার নিয়ন্ত্রণে। এমনকি নির্বাচন কমিশনসহ কোন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগেও তাঁর পছন্দের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে নির্বাচনকে সামনে রেখে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে দলীয় সরকারের ইচ্ছামত ঢেলে সাজানো হয়েছে। এমন বাস্তবতায় দেশের জনগণ, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বের প্রত্যাশিত অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে সম্ভব নয়।’

 

তারা বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ্য করছি সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ এর ন্যায় আরও একটি একতরফা প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একের পর এক বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। ২৮ অক্টোবর পরবর্তী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য গায়েবী মামলা দায়ের এবং নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। মৃত, গুম, বিদেশে অবস্থানরত, ইতোপূর্বে গ্রেফতার হয়ে কারান্তরীন ব্যক্তিদেরও নতুন মিথ্যা মামলায় আসামী করা হচ্ছে। এমনকি মৃত ও গুমের শিকার অনেক নেতাকর্মীদের সাজানো মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। আইন বহির্ভুতভাবে পিতার পরিবর্তে পুত্রকে, পুত্রের পরিবর্তে পিতাকে, ভাইয়ের বদলে অন্যভাই বা আত্মীয়-স্বজনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আরও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে রাতের অন্ধকারে মুখোশধারী এবং হেলমেট বাহিনী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে বিরোধী দলের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করে চলেছে সরকার।’

 

তারা বলেন, ‘রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছে সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি সরকারের একতরফা নির্বাচনে সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বালিয়াকান্দির ‘উকুন খোটা’ স্কুল এখন দেশসেরা হওয়ার অপেক্ষায়

error: Content is protected !!

তফসিল বাতিলের আহ্ববান ১৪১ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার

আপডেট টাইম : ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। পাশাপাশি কারাবন্দি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

 

আজ বুধবার (২২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান। বিবৃতি দাতাদের পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ ও সাবেক যুগ্ম সচিব মো. আবদুল বারী।

 

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘দেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক বিশ্বের দাবি উপেক্ষা করে সরকারি দল তথা আওয়ামী লীগের পরামর্শ ও নির্দেশনা মোতাবেক আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন (ইসি) একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে দেশ ও জাতিকে একটি সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইসি সরকারের একতরফা নির্বাচন আয়োজনে সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’

 

কর্মকর্তাগণ বলেন, ‘সরকার জনআকাংক্ষা, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের দাবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, এমিক্যাসকিউরিদের বিশেষজ্ঞ মতামত, এমনকি নিজ দলের সংসদীয় কমিটির মূল সুপারিশ উপেক্ষা করে ১৯৯৬ সনে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে মীমাংসিত ও নন্দিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ২০১১ সনে বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ সৃষ্টি করে। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের পর ২০১৪ ও ২০১৮ সনে অনুষ্ঠিত ২ টি নির্বাচনে জনগণ আর ভোট দিতে পারেনি। বিশেষকরে ২০০৮ এর পর নতুনভাবে ভোটার হওয়া কোটি কোটি যুবক ভোটার এ পর্যন্ত একবারের জন্যও ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনে নজিরবিহীনভাবে ১৫৩ জন সংসদ সদস্যকে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত করিয়ে নেয়া হয়। আলোচনার মাধ্যমে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেও ২০১৮ সনের নির্বাচনটি প্রহসনে পরিণত হয়। নির্বাচনের আগের দিন মধ্যরাতে ভোট হয়ে যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ ওঠে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে।’

 

তারা বলেন, ‘দেখা যায় বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরাই বিজয়ী হয়েছে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সরকার পরিবর্তিত হয়েছে। সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়েই আদালতের রায়ের অজুহাত দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে বর্তমান সংকটের সৃষ্টি করেছে।’

 

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘দেশের বর্তমান সংবিধান এবং রুলস অব বিজনেস অনুসারে প্রধানমন্ত্রী সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। যিনি একাধারে দলীয় প্রধান, সরকারের নির্বাহী প্রধান এবং সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধান। সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন সরাসরি তার নিয়ন্ত্রণে। এমনকি নির্বাচন কমিশনসহ কোন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগেও তাঁর পছন্দের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে নির্বাচনকে সামনে রেখে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে দলীয় সরকারের ইচ্ছামত ঢেলে সাজানো হয়েছে। এমন বাস্তবতায় দেশের জনগণ, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বের প্রত্যাশিত অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে সম্ভব নয়।’

 

তারা বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ্য করছি সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ এর ন্যায় আরও একটি একতরফা প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একের পর এক বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। ২৮ অক্টোবর পরবর্তী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য গায়েবী মামলা দায়ের এবং নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। মৃত, গুম, বিদেশে অবস্থানরত, ইতোপূর্বে গ্রেফতার হয়ে কারান্তরীন ব্যক্তিদেরও নতুন মিথ্যা মামলায় আসামী করা হচ্ছে। এমনকি মৃত ও গুমের শিকার অনেক নেতাকর্মীদের সাজানো মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। আইন বহির্ভুতভাবে পিতার পরিবর্তে পুত্রকে, পুত্রের পরিবর্তে পিতাকে, ভাইয়ের বদলে অন্যভাই বা আত্মীয়-স্বজনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আরও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে রাতের অন্ধকারে মুখোশধারী এবং হেলমেট বাহিনী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে বিরোধী দলের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করে চলেছে সরকার।’

 

তারা বলেন, ‘রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছে সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি সরকারের একতরফা নির্বাচনে সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’


প্রিন্ট