ঢাকা , সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

৩৮৭ কোটি টাকার তেল ও ডাল কিনছে সরকার

১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন ও ২৫ হাজার টন মসুর ডাল

ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের ১ কোটি পরিবারের মধ্যে প্রতি মাসে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার পরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি ও ২৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কিনবে রাষ্ট্রায়ত্ত ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এই জন্য মোট ব্যয় হবে ৩৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
আজ বুধবার অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত তিনটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৬ কোটি ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে টিসিবি। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত ৬ কোটি ৬০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের চুক্তি হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুই লিটার পেট বোতলে এ সয়াবিন তেলের মূল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান গ্রীণ নেশন বিল্ডার্স অ্যান্ড ডেভেলপারস (স্থানীয় এজেন্ট : চট্টগ্রামের এন এস কনস্ট্রাকশন)। তেলের উৎস হচ্ছে ব্রাজিল, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রতি লিটার তেলের দাম ধরা হয়েছে ১ দশমিক ১৬ ডলার। সে হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৪১ কোটি টাকা (১ ডলার = ১১০.৫০ টাকা হিসাবে)।

জানা গেছে, বিগত কয়েক মাসে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সয়াবিন তেল ক্রয়ের জন্য অনেকগুলো দরপত্র আহ্বান করা হলেও একাধিকবার কোনো দরপত্র পাওয়া যায়নি এবং দুইবার দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দরের চেয়ে দরদাতার প্রস্তাবিত দর বেশি হওয়ায় সয়াবিন তেল ক্রয় করা হয়নি। বর্তমান প্রস্তাবিত দর দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দরের চেয়ে সামান্য কম।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অন্যদিকে দুটি পৃথক প্রস্তাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনা হবে ২৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল। এর মধ্যে দুটি লটে স্থানীয়ভাবে কেনা হবে ১৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল। অগ্রিম আয়কর ও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানো পর্যন্ত পরিবহন ব্যয়সহ উভয় লটেই প্রতি কেজি মসুর ডালের দর ধরা হয়েছে ১০০ টাকা। সে হিসেবে ৮০ কোটি টাকায় ৮ হাজার মেট্রিক টন ডাল সরবরাহ করবে বি অ্যান্ড সি ইনকরপোরেশন এবং ৭০ কোটি টাকায় ৭ হাজার মেট্রিক টন ডাল সরবরাহ করবে সেনা কল্যাণ সংস্থা। পঞ্চাশ কেজির বস্তায় এ ডাল সরবরাহ করা হবে।

সূত্র জানায়, অবশিষ্ট ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনা হবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে। প্রতি মেট্রিক টন ৮৭৫ ডলার দরে এ ডাল সরবরাহ করবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান উমা এক্সপো প্রাইভেট লিমিটেড। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় ৯৬ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ডালের উৎস ভারতীয় এবং ২৫/৫০ কেজির বস্তায় আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে এ ডাল সরবরাহ করা হবে।

স্থানীয়ভাবে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কেনার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, উভয় ক্ষেত্রেই উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী মসুর ডাল না পাওয়ায় সুষ্ঠুভাবে টিসিবি’র বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে দ্রুত সময়ে পণ্য প্রাপ্তির লক্ষ্যে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে টিসিবি’র মসুর ডাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ লাখ ৮৮ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত ৮৭ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ডাল কেনার চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

৩৮৭ কোটি টাকার তেল ও ডাল কিনছে সরকার

আপডেট টাইম : ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩

ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের ১ কোটি পরিবারের মধ্যে প্রতি মাসে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার পরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি ও ২৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কিনবে রাষ্ট্রায়ত্ত ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এই জন্য মোট ব্যয় হবে ৩৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
আজ বুধবার অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত তিনটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৬ কোটি ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে টিসিবি। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত ৬ কোটি ৬০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের চুক্তি হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুই লিটার পেট বোতলে এ সয়াবিন তেলের মূল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান গ্রীণ নেশন বিল্ডার্স অ্যান্ড ডেভেলপারস (স্থানীয় এজেন্ট : চট্টগ্রামের এন এস কনস্ট্রাকশন)। তেলের উৎস হচ্ছে ব্রাজিল, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রতি লিটার তেলের দাম ধরা হয়েছে ১ দশমিক ১৬ ডলার। সে হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৪১ কোটি টাকা (১ ডলার = ১১০.৫০ টাকা হিসাবে)।

জানা গেছে, বিগত কয়েক মাসে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সয়াবিন তেল ক্রয়ের জন্য অনেকগুলো দরপত্র আহ্বান করা হলেও একাধিকবার কোনো দরপত্র পাওয়া যায়নি এবং দুইবার দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দরের চেয়ে দরদাতার প্রস্তাবিত দর বেশি হওয়ায় সয়াবিন তেল ক্রয় করা হয়নি। বর্তমান প্রস্তাবিত দর দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দরের চেয়ে সামান্য কম।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অন্যদিকে দুটি পৃথক প্রস্তাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনা হবে ২৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল। এর মধ্যে দুটি লটে স্থানীয়ভাবে কেনা হবে ১৫ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল। অগ্রিম আয়কর ও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানো পর্যন্ত পরিবহন ব্যয়সহ উভয় লটেই প্রতি কেজি মসুর ডালের দর ধরা হয়েছে ১০০ টাকা। সে হিসেবে ৮০ কোটি টাকায় ৮ হাজার মেট্রিক টন ডাল সরবরাহ করবে বি অ্যান্ড সি ইনকরপোরেশন এবং ৭০ কোটি টাকায় ৭ হাজার মেট্রিক টন ডাল সরবরাহ করবে সেনা কল্যাণ সংস্থা। পঞ্চাশ কেজির বস্তায় এ ডাল সরবরাহ করা হবে।

সূত্র জানায়, অবশিষ্ট ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনা হবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে। প্রতি মেট্রিক টন ৮৭৫ ডলার দরে এ ডাল সরবরাহ করবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান উমা এক্সপো প্রাইভেট লিমিটেড। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় ৯৬ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ডালের উৎস ভারতীয় এবং ২৫/৫০ কেজির বস্তায় আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে এ ডাল সরবরাহ করা হবে।

স্থানীয়ভাবে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কেনার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, উভয় ক্ষেত্রেই উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী মসুর ডাল না পাওয়ায় সুষ্ঠুভাবে টিসিবি’র বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে দ্রুত সময়ে পণ্য প্রাপ্তির লক্ষ্যে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে টিসিবি’র মসুর ডাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ লাখ ৮৮ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত ৮৭ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ডাল কেনার চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।