নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে সারা মাস জুড়েই থাকে তালাবদ্ধ, এতে করে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ঐ গ্রামের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ।
গত মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সৈয়দপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে সরেজমিনে গিয়ে দুপুড় ১২ টায় দেখা যায় কমিউনিটি ক্লিনিকটির ভবনের মূল ফটকে ঝুলছে তালা। স্থানীয়রা বলছে, এখানকার চিকিৎসক সহ দায়িত্বরতরা তাদের ইচ্ছে মতো খোলে ও বন্ধ রাখে এই ক্লিনিক।
চিকিৎসক অনুপস্থিত এবং কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) এর দায়িত্বে জিয়াউল হক (ডলার) থাকলেও সরেজমিনে গিয়ে সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। যদিও সকাল ৯টা থেকে দুপুড় ৩টা পর্যন্ত তার থাকার কথা কমিউনিটি ক্লিনিকে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান কমিউনিটি ক্লিনিকে গেলে বাঁচবে প্রাণ এই স্লোগানে সারা দেশের মতো এখানকার গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতেই গড়ে তোলা হয়েছে এই সৈয়দপুর কমিউনিটি ক্লিনিক। সারা বাংলাদেশে ১২,২২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সেবার জন্য চালু রয়েছে।কিন্তু সৈয়দপুর কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) এর দায়িত্ব পাওয়া জিয়াউল হক (ডলার) এর মতো অসাধু ব্যক্তি থাকার কারণে, এই ক্লিনিক থেকে কোনো রকম স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে না সাধারণ এলাকাবাসী। এতে করে গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, এই ক্লিনিকের চিকিৎসকদের মাসে একবার দেখা যায় তাও নিয়মিত না, তারা কখনো এখানে নিয়মিত বসেন না। এমকি তাদের দ্বারা কোনো রকম চিকিৎসাও পায়না সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। তাছাড়া ৩০টি আইটেমের মেডিসিন দেওয়ার কথা থাকলেও সাধারণ মানুষ পাচ্ছেন শুধু প্যারাসিটামল ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ। স্থানীয় শারমিন নামক এক মহিলা মাসিক আড়াই হাজার টাকার বিনিময়ে দশটা থেকে বারোটা পর্যন্ত খোলা রাখে ক্লিনিকটি জানায়, এই ওষুধ দেওয়ার জন্য। এখানে কেউ ডায়াবেটিকস, প্রেসারও মাপতে পারেন বলে জানাই সাধারণ মানুষ। এতে করে স্থানীয়রা বাড়ির কাছে সরকারের এমন সুবিধা দেওয়ার পরও ভোগ করা সম্ভব হচ্ছে সাধারণ খেটু খাওয়া মানুষের। আরো ভোগান্তি নিয়ে যেতে হচ্ছে টাকা খরচ করে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ও হাসপাতালে।
১২টা বাজতেই কমিউনিটি ক্লিনিক কেন তালাবদ্ধ এ বিষয়ে জানতে (সিএইচসিপি) এর দায়িত্বে থাকা জিয়াউল হক কে মুঠোফোনে কল করলে তিনি জানান, তিনি কাজে বাইরে আছে এবং তিনি মাসে একবার কেন ক্লিনিকে আসেন এ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি সব সময় চেষ্টা করি আসার জন্য।
এ বিষয়ে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করতেছি, সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, জিয়াউল হক ডলার অনেক প্রভাবশালী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদে আছে তার আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী। সে বিষয়ে চলছে অনুসন্ধান চোখ রাখুন আগামী পর্বে।
প্রিন্ট