যশোরের মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি উদয় শংকর বিশ্বাসকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টার দিকে উপজেলার পাঁচকড়ি গ্রামে বাড়ির সামনে তাকে গুলি করা হয়। তিনি নেহালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক এবং স্থানীয় টেকারঘাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।
নেহালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন জানান, বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সামনের রাস্তায় উদয় শংকর বিশ্বাসকে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় খুলনা নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মনিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তার আগেই আহত অবস্থায় উদয় শংকরকে খুলনার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল মর্গে রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সেখান থেকে না আসা পর্যন্ত কীভাবে এ মৃত্যু তা বলা যাচ্ছে না। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।’
সহকারী পুলিশ সুপার (মনিরামপুর সার্কেল) আশেক সুজা মামুন বলেন, ‘উদয় হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির নারুয়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহসভাপতি আজিজ মহাজনকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত রবিবার সন্ধ্যায় হামলার শিকার হওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা রাত ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আজিজ মহাজন কোনাগ্রামের মৃত আজের মহাজনের ছেলে। বড় ভাই মো. আবদুর রহমান জানান, খাসজমির বিরোধে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজিজ মহাজন রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাশের গ্রাম বড়াবিলা থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ির দিকে আসছিলেন। পথে বাঁশ ফেলে গতিরোধ করে তাকে রড দিয়ে প্রথমে কোনাগ্রাম গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে সাজিদ রাফি (৩০) মাথায় আঘাত করলে মাটিতে পড়ে যায়। এরপর কোনাগ্রাম গ্রামের জাকির মন্ডলের ছেলে ইরান মন্ডল, আনোয়ার মন্ডলের ছেলে নিশাত মন্ডল (২৬) মৃত মালেক মহাজনের ছেলে রেজাউল সজাজনসহ (৩০) আরও সাত-আটজন চাইনিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আজিজকে মারাত্মক জখম করে। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে উদ্ধার করে তাকে প্রথমে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নিহতের বড় ভাই আবদুর রহমান থানায় অভিযোগ করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।’
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মীনগ্রামে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের আধিপত্য বিস্তারের বিরোধে হাবিবুর রহমান রিপন (৪৫) নামে এক ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনার পর এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। গত রবিবার রাত আড়াইটার দিকে আবাইপুর-মীনগ্রামের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রিপন ওই উপজেলার মীনগ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে ও আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আবাইপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালামের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। আবুল কালাম স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল হাই ও হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম দুলালের অনুসারী। আবুল কালাম আজাদ শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় ছেলে রিপন তার পক্ষের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। গত শুক্রবার হেলালের সমর্থকদের সঙ্গে ইউপি সদস্য রিপনের সমর্থকদের মারামারি হয়। এ ঘটনায় পুলিশ উভয়পক্ষের চারজনকে আটক করে। রবিবার রাতে ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান রিপন শৈলকুপা থানা থেকে মারামারির ঘটনা মীমাংসা করে ফিরছিলেন। পথে মিনগ্রামের মাঠের মধ্যে হেলালের সমর্থকরা গতিরোধ করে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে তাকে। সেখান থেকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিলে রাত সাড়ে ৩টার দিকে মারা যান।