মাগুরার মহম্মদপুরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস নিয়ে বিরোধের জের ধরে দলীয় নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত ছাত্রদল নেতা আবু তোয়েব মোল্যার মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাতে প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় তিনি গুরুতর আহত হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকার নিউল্যাব হাসপাতালে ভর্তির পর আইসিইউতে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়। আজ মঙ্গলবার বেলা আড়ায়টার সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আহত তোয়েব উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং নাওভাঙ্গা গ্রামের আবুল কালাম মাস্টারের ছেলে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজন কে আটক করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মহম্মদপুর থানার ওসি বোরহান উল ইসলাম। এদিকে আবু তোয়েবের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতায় রায় চৌধুরী, মনোয়ার হোসেন খান, মাগুরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মিঠুন রায় চৌধুরীসহ একাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। এসময় শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তারা ।
জানা যায়, রোববার সন্ধ্যার দিকে নাওভাঙ্গা গ্রামের ফুল মিয়া বিশ্বাসের ছেলে কৃষকদল নেতা জিবলু বিশ্বাস সামাজিক যোগাযােগ মাধ্যম ফেসবুকে তোয়েবের গলায় নৌকা ঝুলানো একটি ছবি পোষ্ট করেন। ছবিটি ২০১১ সালের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নিবার্চনের সময় তোলা ছিল। কৃষকদল নেতা জিবলু বিশ্বাস ফেসবুক পোষ্টে লেখেন, ‘মহম্মদপুর উপজেলা বিএনপির নেতাদের কাছে প্রশ্ন আওয়ামী লীগের কর্মী ছাত্রদলের রাজাপুর ইউনিয়ন সিনিয়র সহ-সভাপতি কিভাবে হয়।’ তোয়েব ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেখতে পেয়ে জিবলু বিশ্বাসের গ্রাম্য মাতব্বর জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে অভিযোগ করলে জিবলু বিশ্বাস কে দিয়ে তিনি পোষ্ট ডিলেট করিয়ে দিবেন বলে তাকে আশ্বস্থ করেন।
মাতব্বরের কাছে অভিযোগ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে চর নাওভাঙ্গা দক্ষিণপাড়া এলাকায় পৌছলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা জিবলুর নেতৃত্বে ১০-১২ জন দলীয় নেতা-কর্মীরা তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তোয়েবকে দেশীয় অস্ত্র রামদা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করলে সে অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে পালিয় যায় র্দুবৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতাল নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার নিউল্যাব হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে ২৮ ঘন্টা আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকার পর আজ মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার সময় তার মৃত্যু হয়। মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উল ইসলাম বলেন, বিশৃঙ্খলা এড়াতে এলকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪জনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যান্যদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মামলা হওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে আবু তোয়েবের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতায় রায় চৌধুরী, মনোয়ার হোসেন খান,মাগুরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মিঠুন রায় চৌধুরীসহ একাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। এসময় শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তারা সমবেদনা জানান। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই সার্বক্ষণিক তোয়েবের খোঁজ-খবর রেখেছিলেন নেতৃবৃন্দ।
প্রিন্ট