ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বালিয়াকান্দির ‘উকুন খোটা’ স্কুল এখন দেশসেরা হওয়ার অপেক্ষায় Logo গোপালগঞ্জে দূর্নীতি ও প্রতারণা করা সেই ত্রাণ কর্মকর্তার তদন্ত শুরু Logo কুষ্টিয়ায় জেল পলাতক আসামি রুবেল গ্রেফতার Logo আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবসহ সেবাদান প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়ালেন আদিত্য ফাউন্ডেশন Logo ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার Logo এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র Logo মাগুরা শ্রীপুরে মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী গ্রেফতার Logo রাশিয়ার কুরস্কে ৪০ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে ইউক্রেন Logo কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির বিপক্ষে যাওয়ায় ১৫ নেতাকে শোকজ Logo ভিডিও ফুটেজে নারীর ওপর হামলা, পুলিশের প্রতিবেদনে উলটে গেল ঘটনা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

গোপালগঞ্জে নামসর্বস্ব এতিমখানার নামে সরকারি যায়গা ভোগদখল করার অভিযোগ

গোপালগঞ্জে নামসর্বস্ব এতিমখানার নাম ভাঙিয়ে প্রায় ৮ একর সরকারি যায়গা দখল করে ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১২নং উলপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ৪৭ নং উলপুর মৌজার মধ্যপাড়া গ্ৰামে।

ঘটনায় গ্ৰামবাসীর মধ্যে ব্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের  দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এলাকাবাসীর দাবি নিজড়া গ্ৰামের প্রভাবশালী সিহাব মোল্লা ভূয়া এতিমখানা দেখিয়ে নামমাত্র একটি কমিটি তৈরি করে বিশাল এই সরকারি যায়গা দখল করে রেখেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগের সূত্র ধরে সরজমিন পরিদর্শন করে এলাবাসীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। দেখা যায় জরাজীর্ণ কয়েকটি পুরাতন বইল্ডইং ঘর। পুরো জায়গা জুড়ে ঝোপঝাড় গজিয়ে আছে। পুরাতন এক বিল্ডিং এ ঝুলানো আছে এতিমখানার একটি সাইনবোর্ড। এখানে নেই কোন এতিম শিক্ষার্থী, দেখা মেলেনি কোন শিক্ষকের। সেখানে বসতি গড়ে তুলেছেন সিহাব মোল্লার মেয়ে পিয়া খানম।

 

পিয়া খানম সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে এতিমখানাটি বন্ধ, আমার বাবা এতিমখানার সভাপতি আমি এবং আমার স্বামী এগুলো রক্ষনাবেক্ষন জন্য এখানে বসবাস করছি।

এলাকার একটি নিরপেক্ষ সূত্র ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের তথ্য থেকে জানা যায়, নিজড়া গ্ৰামের মরহুমা সাহিদা খানম জীবিত থাকাকালীন সময়ে সরকারি জায়গা লিজনিয়ে একটি এতিমখানা স্থাপন করেন। তিনি এতিমখানারটি বেসকিছুদিন চালানোর পরে ২০২০ সালে মারা যান। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি দূর্বলত হতে হতে কয়েক মাস পূর্বে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

উলপুর এলাকার বাসিন্দা নাশির মোল্লা ও ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজাউল মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, জবরদখলদার ও ভূমিদস্যু সিহাব মোল্লা এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা সাহিদা খানমের আপন চাচা। সাহিদার মৃত্যুর পর সুযোগ বুঝে এতিমখানাটির নাম মাত্র দায়িত্ব নেয় তিনি। একপর্যায়ে এতিম ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের নির্যাতন করে বের করে দেন এবং প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন আসবাবপত্র বিক্রয় করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। বর্তমানে নিজের মেয়ে জামাইকে বসবাস করতে দিয়ে কয়েকটি ভবনসহ পুরো জায়গা দখল করে রেখেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিহাব মোল্লা তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি  এতিমখানার সভাপতি আপাতত রক্ষনাবেক্ষনের জন্য আমার মেয়ে-জামাইকে দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি এতিমখানাটি চালু করবো।

 

 

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মহসিন উদ্দীন বলেন, আমি শুনেছি ওই এলাকায় সরকারি যায়গা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ঝামেলা চলছে। কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি যায়গা অনিয়মে দখল করে রাখতে পারবে না। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কেউ ভোগদখল করতে চাইলে সরকারি বিধি মোতাবেক আবেদন করে বন্দোবস্ত গ্ৰহণ করতে হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বালিয়াকান্দির ‘উকুন খোটা’ স্কুল এখন দেশসেরা হওয়ার অপেক্ষায়

error: Content is protected !!

গোপালগঞ্জে নামসর্বস্ব এতিমখানার নামে সরকারি যায়গা ভোগদখল করার অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০২৩
মুন্সী সাদেকুর রহমান শাহিন, গোপালগঞ্জ ব্যুরো প্রধান :

গোপালগঞ্জে নামসর্বস্ব এতিমখানার নাম ভাঙিয়ে প্রায় ৮ একর সরকারি যায়গা দখল করে ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১২নং উলপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ৪৭ নং উলপুর মৌজার মধ্যপাড়া গ্ৰামে।

ঘটনায় গ্ৰামবাসীর মধ্যে ব্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের  দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এলাকাবাসীর দাবি নিজড়া গ্ৰামের প্রভাবশালী সিহাব মোল্লা ভূয়া এতিমখানা দেখিয়ে নামমাত্র একটি কমিটি তৈরি করে বিশাল এই সরকারি যায়গা দখল করে রেখেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগের সূত্র ধরে সরজমিন পরিদর্শন করে এলাবাসীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। দেখা যায় জরাজীর্ণ কয়েকটি পুরাতন বইল্ডইং ঘর। পুরো জায়গা জুড়ে ঝোপঝাড় গজিয়ে আছে। পুরাতন এক বিল্ডিং এ ঝুলানো আছে এতিমখানার একটি সাইনবোর্ড। এখানে নেই কোন এতিম শিক্ষার্থী, দেখা মেলেনি কোন শিক্ষকের। সেখানে বসতি গড়ে তুলেছেন সিহাব মোল্লার মেয়ে পিয়া খানম।

 

পিয়া খানম সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে এতিমখানাটি বন্ধ, আমার বাবা এতিমখানার সভাপতি আমি এবং আমার স্বামী এগুলো রক্ষনাবেক্ষন জন্য এখানে বসবাস করছি।

এলাকার একটি নিরপেক্ষ সূত্র ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের তথ্য থেকে জানা যায়, নিজড়া গ্ৰামের মরহুমা সাহিদা খানম জীবিত থাকাকালীন সময়ে সরকারি জায়গা লিজনিয়ে একটি এতিমখানা স্থাপন করেন। তিনি এতিমখানারটি বেসকিছুদিন চালানোর পরে ২০২০ সালে মারা যান। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি দূর্বলত হতে হতে কয়েক মাস পূর্বে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

উলপুর এলাকার বাসিন্দা নাশির মোল্লা ও ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজাউল মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, জবরদখলদার ও ভূমিদস্যু সিহাব মোল্লা এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা সাহিদা খানমের আপন চাচা। সাহিদার মৃত্যুর পর সুযোগ বুঝে এতিমখানাটির নাম মাত্র দায়িত্ব নেয় তিনি। একপর্যায়ে এতিম ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের নির্যাতন করে বের করে দেন এবং প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন আসবাবপত্র বিক্রয় করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। বর্তমানে নিজের মেয়ে জামাইকে বসবাস করতে দিয়ে কয়েকটি ভবনসহ পুরো জায়গা দখল করে রেখেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিহাব মোল্লা তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি  এতিমখানার সভাপতি আপাতত রক্ষনাবেক্ষনের জন্য আমার মেয়ে-জামাইকে দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি এতিমখানাটি চালু করবো।

 

 

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মহসিন উদ্দীন বলেন, আমি শুনেছি ওই এলাকায় সরকারি যায়গা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ঝামেলা চলছে। কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি যায়গা অনিয়মে দখল করে রাখতে পারবে না। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কেউ ভোগদখল করতে চাইলে সরকারি বিধি মোতাবেক আবেদন করে বন্দোবস্ত গ্ৰহণ করতে হবে।


প্রিন্ট