মাগুরা সদর উপজেলার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাজিয়াড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সত্তার মোল্যার পুত্র মোঃ শাহাদত হোসেনের (৪৮) গাভিটি ২ পল্লী চিকিৎসকের অপচিকিৎসার কারণে বিশাল ফ্রিজিয়ান গাভীটি মারা যায়।গত বুধবার ২ আগস্ট অনুমান ৭ টার সময় শাহাদত হোসেনের একটি গাভী প্রসবের সময় তার জরায়ু বের হয়ে আসে। তখন গাভীর মালিক শাহাদত পল্লী প্রানি চিকিৎসক মোঃ পারভেজ বিশ্বাসকে ফোন করে।
পারভেজ এসে গাভীর জরায়ুটি ধস্তাধস্তি পূর্বক শরীরের ভিতরে ঢুকাইয়া সুই দিয়ে সেলাই করে এবং তাকে কিছু মেডিসিন দিয়ে চলে যায়। কিন্তু পারভেজ যাওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যেই সেলাই গুলো কেটে যায় এবং জরায়ুটা আবার বের হয়ে যায়। শাহাদত আবারও চিকিৎসক পারভেজকে ফোন করে। সে কিছুক্ষন পরে এসে শাহাদত কে জানাই তার চাচাতো ভাই পল্লী প্রানি চিকিৎসক মোঃ ইমরান হোসেন (মেসার্স কুদ্দুস ফার্মেসী) নতুন বাজার তাকে সাথে নিয়ে আবার সেলাই দিতে চায়।
শাহাদত, চিকিৎসক পারভেজকে বলেন তুমি যেটা সঠিক মনে কর প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নাও। মাগুরা পশু হাসপাতালের যদি বড় কোন ডাক্তার পরিচিত থাকে তাহলে তাকে নিয়ে আসো বা আমাকে বলো আমি ডাক্তার নিয়ে আসি। কিন্তু সে শাহাদতকে জানাই তার চাচাতো ভাই আর সে মিলে কাজটা করতে পারবে। এরপর সে মোঃ ইমরান হোসেনকে ফোন দিয়ে তাকে নিয়ে আসে এবং ২ জন মিলে পরামর্শ করে শাহাদতকে বলে তারা আবার সেলাই দিবে এবং অনেক টাকার ঔষধ লাগবে।
একথা শুনে শাহাদত বলে কোন সমস্যা নেই তোমরা আমার গরুটাকে সঠিক চিকিৎসা দিয়ে বাঁচাও। শাহাদত আবারও তাদেরকে বলে তোমরা ২ জন না পারলে আমাকে বলো আমি অন্য কোন বিকল্প ব্যবস্থা করি। কিন্তু তারা শাহাদতকে জানাই দুজনে মিলেই পারবে চিকিৎসা দিতে। এরপর আবার সেলাই করে এবং শাহাদতের কাছে থেকে ৬ হাজার ৫ শত টাকা নিয়ে দুজনে চলে যায়। তারপর তাদের চলে যাওয়ার পর আবার সেলাই খুলে যায়।
এভাবে তারা ২২ হাজার টাকা নেয় এবং শাহাদতকে একটি প্রেসক্রিপশন করে দেয়। এরপর শাহাদতের গরুটা আস্তে আস্তে আরও বেশি অসুস্থ হতে থাকে। ভুক্তভোগী শাহাদত সারা দিন-রাত গরুটার পাশে বসে থাকে আর দুই চিকিৎসকের কথামতো যা যা বলে সেগুলো করতে থাকে কিন্তু তাহাতে অবস্থার কোন উন্নতি দেখা যায়নি। ওরা দুজন আবারও এসে বলে কোন সমস্যা নেই। এরপর শেষ মূহুর্তে যখন দেখে গরুটা মারা যাচ্ছে তখন ভোররাতে ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান এসে বলে গরু আর বাঁচবে না। একথা বলার ২০ মিনিটের মধ্যেই গরুটা মারা যায়। গরুটার বাজার মূল্য আনুমানিক ৬ লাখ টাকা, প্রতিদিন ৩০-৩৫ লিটার দুধ দিতো।
শাহাদত বলেন, এই দুই পল্লী প্রানি চিকিৎসক পারভেজ ও ইমরানের অপচিকিৎসার কারণেই গরুটা মারা গেছে। দুই পল্লী প্রানি চিকিৎসক স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা করিয়া ব্যর্থ হয়। এরপর আমি অত্র বিষয় নিয়ে মাগুরা সদর থানায় এজাহার করিতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। এরপর আমি মাগুরা সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা বরাবর দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পত্র জমা দেয়। তিনি আরও জানান মোকাম মাগুরার বিজ্ঞ সদর আমলী আদালতে মামলার প্রক্রিয়াধীন। আর এই বিষয় নিয়ে সাক্ষী ব্যক্তির নাম হলো সাজিয়াড়া গ্রামের সুমি ইয়াসমিন তমা, আরমান, কোবাদ ও রিফাত। ঘটনার এই বিষয় নিয়ে পল্লী প্রানি চিকিৎসক মোঃ ইমরান হোসেনের কাছে গেলে সে জানায় নড়াইল জেলায় কর্মরত ডিএলও ডাঃ সিদ্দিকুর রহমানের নির্দেশে আমি চিকিৎসা দিয়ে ছিলাম। ঘটনার সময় অনুমান ভোররাতে ৪.৩০ টার সময়।
সাংবাদিকরা যখন ইমরানের এবং পারভেজের কাছে তথ্য সংগ্রহের জন্য যায় কুদ্দুস ফার্মেসিতে ইমরানের আপন ভাই মহাসীন এসে সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং সে চরম মারমুখী উত্তেজিত হয়ে বলে সাংবাদিকরা কিসের জন্য আমাদের দোকানে ও রকিব আহমেদের নতুন বাজার দোকানে এসেছে। এই কথা বলার পর সে সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা বানোয়াট ভুল তথ্য প্রদান করে এবং ইমরানের ভাই মহসিন বলেন সাংবাদিকরা , কি ছিরতে পারে,কার বাল ছিড়বে এবং সাংবাদিকদের কাছা খুলে দেবে এরপর চিকিৎসক ইমরান তাকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে স্থান ত্যাগ করে। নড়াইল জেলার ডিএলও ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, গাভীর জরায়ু বেরিয়ে গেলে ঢুকিয়ে দিয়ে সেলাই করে দিতে হয়।
ওরা ২ জন আমাকে ঢেকে নিয়ে গিয়ে ছিলো। ওদের ২ জনের সেলাই চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন গরুর মালিক ভদ্রলোক কেন পল্লী চিকিৎসককে ঢাকলেন। সাজিয়াড়া থেকে মাগুরা পশু হাসপাতাল তো বেশি দুরে নয়। তিনি আরও বলেন, আমার বক্তব্য হলো আমি স্থানে গেলে ঐ ভদ্রলোক আমার চিকিৎসা করতে দেয়নি এবং অপমান করেছে। জরায়ু বের হওয়া গরু গুলো খুব রিস্ক চিকিৎসা দিলে ভালো হয়,কিন্তু ইমরানরা তো ডাক্তার না এইজন্যই গরুটি মারা গিয়েছে।
প্রিন্ট