রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা ও উত্তরণে বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস প্রতিনিধিদল।
কংগ্রেস সদস্যের মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য এড কেইস ও অপরজন রিপাবলিকান পার্টির রিচার্ড ম্যাকরমিক। তারা মোট ১১ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
এড কেইস বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেওয়া, লেখাপড়ার ব্যবস্থা এবং বর্তমানে তাদের জীবনযাপন নিয়ে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে মিয়ানমারে তাদের ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন।’
এসব বিষয় প্রতিবেদন আকারে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে অবহিত করা হবে। তিনি বলেন, ‘এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার উদাহরণ তৈরি করেছে। সেজন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।’
রিপাবলিকান পার্টির রিচার্ড ম্যাকরমিক বলেন, ‘রোহিঙ্গা ও রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় জড়িত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যে তথ্য পেয়েছি, তা লিখিতভাবে উপস্থাপন করা হবে। রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এই সংকট মোকাবিলা ও উত্তরণের জন্য বিশ্বের সব রাষ্ট্রকে একসঙ্গে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এই দুই সদস্য রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধিতে কাজ করার আশ্বাসও দিয়েছেন।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বিকালে কক্সবাজারের শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এই দুই প্রতিনিধি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার সামছু-দৌজা নয়ন জানান, সকাল ৯টার দিকে কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীরদের সমন্বয় সংস্থা ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের অফিসে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমসহ ইউএনের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কংগ্রেস প্রতিনিধিদল রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে পরিদর্শনে যান।
সেখানে প্রতিনিধিদল ১২ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম, ১১ নম্বর ক্যাম্পে শরণার্থীদের লার্নিং সেন্টার, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত ই-ভাউচার সেন্টার পরিদর্শন করেন। দুপুরে কংগ্রেস প্রতিনিধিদল কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর কক্সবাজার শহরে ফেরার সময় প্রতিনিধিদলের হাতে একটি চিঠি হস্তান্তর করেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের।
মোহাম্মদ জোবায়ের জানান, চিঠিটিতে শরণার্থী জীবন কষ্টকর ও অসহনীয় উল্লেখ করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। বিকালে কক্সবাজার শহরে অবস্থিত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন অফিসে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তারা ঢাকায় ফিরে গেছেন।
প্রিন্ট