ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়ে করছেন ডাক্তারি, রোগী সেজে ধরলেন ইউএনও

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা করে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দেওয়া এক ভুয়া চিকিৎসককে রোগী সেজে ধরলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। এসময় কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সনদ ছাড়া রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার কারণে ওই চিকিৎসককে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার (১০ মে) দুপুরে নোয়াখালী পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের জহুরুল হক গ্যারেজের পাশে জাহান কটেজে এ অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ।

দণ্ডপ্রাপ্ত ভুয়া চিকিৎসক মাইন উদ্দিন সবুজ (৪০) ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার বাসিন্দা। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়াশোনা করেছেন। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে চিকিৎসক হিসেবে বিভিন্ন রোগীদের ব্যবস্থাপত্র ও সার্জারী করেন বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের জহুরুল হক গ্যারেজের পাশে জাহান কটেজের নিচতলায় বাসা ভাড়া নিয়ে চেম্বার করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করা মাইন উদ্দিন সবুজ। নিজের নামের পাশে বিভিন্ন ভুয়া ডিগ্রী ব্যবহার করে প্যাড বানান তিনি। যা ব্যবহার করে নিয়মিত ব্যবস্থাপত্র ও অপারেশন করতেন।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার (১০ মে) দুপুরে পূর্বে সিরিয়াল দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ নিজেই রোগী সেজে সেখানে হাজির হন। এ সময় তিনি সবুজের কাছে তার সনদপত্র দেখতে চান। কিন্তু সবুজ সনদ দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রোগী সেজে সকালে সিরিয়াল দিয়েছি। যখন চেম্বারে যাই তখন ডাক্তার ভেতরে আছেন বলে আমাকে জানায়। এরপর সনদ চাইলে তিনি দেখাতে ব্যর্থ হন। মূলত তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়ালেখা করেছেন বলে আমাদের জানান।

ইউএনও নিজাম উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, মাইন উদ্দিন সবুজ স্বীকার করেন ৩–৪ বছর ধরে এভাবে চিকিৎসক হিসেবে প্রতারণা করে আসছিলেন। ভুয়া চিকিৎসক প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা শহরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এরা মানুষকে ধোকা দিচ্ছে। মানুষ এদের কাছে এসে প্রতারিত হচ্ছে। জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

অভিযানে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারী সার্জন ডা. ফাত্তাহেল আলীম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক, উপ–প্রশাসনিক কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র দে সহ আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরে যাতায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ

error: Content is protected !!

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়ে করছেন ডাক্তারি, রোগী সেজে ধরলেন ইউএনও

আপডেট টাইম : ১০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩
তাহসিনুল আলম সৌরভ, সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা করে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দেওয়া এক ভুয়া চিকিৎসককে রোগী সেজে ধরলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। এসময় কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সনদ ছাড়া রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার কারণে ওই চিকিৎসককে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার (১০ মে) দুপুরে নোয়াখালী পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের জহুরুল হক গ্যারেজের পাশে জাহান কটেজে এ অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ।

দণ্ডপ্রাপ্ত ভুয়া চিকিৎসক মাইন উদ্দিন সবুজ (৪০) ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার বাসিন্দা। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়াশোনা করেছেন। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে চিকিৎসক হিসেবে বিভিন্ন রোগীদের ব্যবস্থাপত্র ও সার্জারী করেন বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের জহুরুল হক গ্যারেজের পাশে জাহান কটেজের নিচতলায় বাসা ভাড়া নিয়ে চেম্বার করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করা মাইন উদ্দিন সবুজ। নিজের নামের পাশে বিভিন্ন ভুয়া ডিগ্রী ব্যবহার করে প্যাড বানান তিনি। যা ব্যবহার করে নিয়মিত ব্যবস্থাপত্র ও অপারেশন করতেন।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার (১০ মে) দুপুরে পূর্বে সিরিয়াল দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ নিজেই রোগী সেজে সেখানে হাজির হন। এ সময় তিনি সবুজের কাছে তার সনদপত্র দেখতে চান। কিন্তু সবুজ সনদ দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রোগী সেজে সকালে সিরিয়াল দিয়েছি। যখন চেম্বারে যাই তখন ডাক্তার ভেতরে আছেন বলে আমাকে জানায়। এরপর সনদ চাইলে তিনি দেখাতে ব্যর্থ হন। মূলত তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়ালেখা করেছেন বলে আমাদের জানান।

ইউএনও নিজাম উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, মাইন উদ্দিন সবুজ স্বীকার করেন ৩–৪ বছর ধরে এভাবে চিকিৎসক হিসেবে প্রতারণা করে আসছিলেন। ভুয়া চিকিৎসক প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা শহরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এরা মানুষকে ধোকা দিচ্ছে। মানুষ এদের কাছে এসে প্রতারিত হচ্ছে। জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

অভিযানে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারী সার্জন ডা. ফাত্তাহেল আলীম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক, উপ–প্রশাসনিক কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র দে সহ আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


প্রিন্ট