ঢাকা , বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

চালের বস্তায় মিনিকেট লিখলেই ১০ লাখ টাকা জরিমানা

খাদ্যদ্রব্য অবৈধ মজুদে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান রেখে ‘খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ আইন সংসদে পাস হলে চালের বস্তায় মিনিকেট লেখা বন্ধ হবে।

গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকের এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত পরিমাণের বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুদ করলে যাবজ্জীবন কারাদ- বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। অর্থের পরিমাণ আদালত নির্ধারণ করবে। এর আগে ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল আইনটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। গতকাল আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এ আইনটির মাধ্যমে মূলত আমাদের দানাদার খাদ্যদ্রব্য ধান, চাল, গম, আটা, ভুট্টা ইত্যাদি উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিপণন, বিতরণসংক্রান্ত যেসব অপরাধ আছে সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং শাস্তির বিধান করা হয়েছে। ‘ফুড (স্পেশাল কোর্ট) অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ ও ‘দ্য ফুডগ্রেইনস সাপ্লাই (প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ এ দুটি আইনের সংমিশ্রণে নতুন আইনটি করা হয়েছে।

মাহবুব হোসেন জানান, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই ধরনের জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করেন; খাদ্যদ্রব্যের মধ্য থেকে কোনো স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণ করে বা পরিবর্তন করে উৎপাদন করেন বা বিপণন করেন বা খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশিয়ে উৎপাদন বা বিপণন করেন বা লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সের মাধ্যমে বা লাইসেন্সে উল্লিখিত পরিমাণের চেয়ে বেশি উৎপাদন করেন তবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আইনে এ বিধান যুক্ত করার হলে চালের বস্তায় মিনিকেট লেখা বন্ধ হবে। কারণ দেশে মিনিকেট বলে কোনো জাত নেই। তারা আরও জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় এ ধরনের অপরাধের জন্য পাঁচ বছরের কাররাদন্ডের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারেনি খাদ্য মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কোনো ব্যক্তি খাদ্য অধিদপ্তরের বিতরণ করা সিল বা বিতরণ করা হয়েছে এমন চিহ্নযুক্ত সিল ছাড়া সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্যভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, কেনাবেচা করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

বিভ্রান্তি সৃষ্টিসংক্রান্ত অপরাধের শাস্তির বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদন্ড বা ১৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড পেতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, কোনো কোম্পানি এ আইনে অধীনে কোনো অপরাধ করলে ওই অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা বা কর্মচারী এ অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

চালের বস্তায় মিনিকেট লিখলেই ১০ লাখ টাকা জরিমানা

আপডেট টাইম : ১২:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩

খাদ্যদ্রব্য অবৈধ মজুদে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান রেখে ‘খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ আইন সংসদে পাস হলে চালের বস্তায় মিনিকেট লেখা বন্ধ হবে।

গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকের এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত পরিমাণের বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুদ করলে যাবজ্জীবন কারাদ- বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। অর্থের পরিমাণ আদালত নির্ধারণ করবে। এর আগে ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল আইনটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। গতকাল আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এ আইনটির মাধ্যমে মূলত আমাদের দানাদার খাদ্যদ্রব্য ধান, চাল, গম, আটা, ভুট্টা ইত্যাদি উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিপণন, বিতরণসংক্রান্ত যেসব অপরাধ আছে সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং শাস্তির বিধান করা হয়েছে। ‘ফুড (স্পেশাল কোর্ট) অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ ও ‘দ্য ফুডগ্রেইনস সাপ্লাই (প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ এ দুটি আইনের সংমিশ্রণে নতুন আইনটি করা হয়েছে।

মাহবুব হোসেন জানান, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই ধরনের জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করেন; খাদ্যদ্রব্যের মধ্য থেকে কোনো স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণ করে বা পরিবর্তন করে উৎপাদন করেন বা বিপণন করেন বা খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশিয়ে উৎপাদন বা বিপণন করেন বা লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সের মাধ্যমে বা লাইসেন্সে উল্লিখিত পরিমাণের চেয়ে বেশি উৎপাদন করেন তবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আইনে এ বিধান যুক্ত করার হলে চালের বস্তায় মিনিকেট লেখা বন্ধ হবে। কারণ দেশে মিনিকেট বলে কোনো জাত নেই। তারা আরও জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় এ ধরনের অপরাধের জন্য পাঁচ বছরের কাররাদন্ডের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারেনি খাদ্য মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কোনো ব্যক্তি খাদ্য অধিদপ্তরের বিতরণ করা সিল বা বিতরণ করা হয়েছে এমন চিহ্নযুক্ত সিল ছাড়া সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্যভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, কেনাবেচা করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

বিভ্রান্তি সৃষ্টিসংক্রান্ত অপরাধের শাস্তির বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদন্ড বা ১৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড পেতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, কোনো কোম্পানি এ আইনে অধীনে কোনো অপরাধ করলে ওই অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা বা কর্মচারী এ অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে।