ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

প্রতি বছর ২৭,২৮ ও ২৯ শে চৈত্র তিন দিন ব্যাপী ওরশ

ভেড়ামারার গোলাপ নগর সোলেইমান শাহ্ (রঃ) মাজার শরীফে নারী-পূরুষের ভীড়

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আধ্যাত্মিক সাধক পুরুষ হযরত সোলাইমান শাহ্ চিশতী (র:) মাজারে ৩দিনব্যাপী ওরশ মোবারক শুরু হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় চৈত্র মাসের শেষের দিকে ২৭,২৮ ও ২৯ এই তিন দিন ব্যাপী ওরশ জমজমাট ভাবে চলছে। ৫৩ তম বাৎসরিক এই ওরশ শরীফ কে ঘিরে গ্রামীণ মেলায় ভীড় জমেছে।

ওরশ শরীফ কে কেন্দ্র করে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্তা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

মাজার শরীফের খাদেম রবিউল ইসলাম বলেন,ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্যেই ঊনবিংশ শতকে যে সকল মনীষী, আউলিয়া, গাউজ, কুতুব, দরবেশ, ফকির এই উপমহাদেশে তথা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন হযরত সোলাইমান শাহ্ (রঃ) তাদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন।

মোকারিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বলেন, ৬০ এর দশকে সোলেইমান শাহ্ এসে পদ্মার নদীর তীরবর্তী স্থানে অবস্থান নেন। সেখানে একটা খড়ের কুঁড়ে ঘরে থাকতেন।

ওরশ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদ বেনু বলেন, বাবা সোলেমান শাহ্ বরিশাল জেলার লোক ছিলেন । যৌবন আরম্ভ হলে তিনি গৃহ ত্যাগ করে ভারতের পশ্চিম বাংলার করিমপুর থানার খাজুরে বর্ডারে কিছুদিন বসবাস করেন। তারপর বাংলাদেশে চলে আসেন। তিনি রাজশাহীর চরে অনেক দিন থাকেন। তারপর সেখান থেকে চলে আসেন ভেড়ামারা ঘোষপাড়া গ্রামে সাতবাড়ীয়া মসজিদের উত্তরের মাঠে এক বাবলা গাছের নীচে সলেমান কিছু দিন থাকেন। সর্বশেষে মোকারিমপুরের পদ্মা নদীর তীরে গোলাপনগরে অবস্থান করেন এবং এখানে রেল লাইনের ধারে তিনি স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন।

ওরশ কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর ব্রাশফায়ারে তিনি এবং তিনার ৮সহচর শহীদ হয়। তারপর থেকেই উক্ত আশেকানরা এখানে গড়ে তোলে মাজার ও সোলাইমান শাহ্ দরবার শরীফ। তার ভক্ত আশীকানরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ ভারত-ভূটান ও পাকিস্তান থেকে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে প্রতি বছর ২৭,২৮ ও ২৯ শে চৈত্র তিন দিন ব্যাপী ওরশ শরীফে যোগদেয়। সোলাইমান শাহ্ এই ওরশে লাখো নারী-পুরুষের সমাবেশ ঘটে।

মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সমাজ সেব কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, এই মাজার শরীফ সুষ্ঠু তদারকি পরিচালনার নেতৃত্ব নিয়ে তৎকালীন সময় গোলাপনগর গ্রামে বহুবার দাঙ্গা হাঙ্গামাসহ বহুবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ সংগঠিত হয়। এরই কারণে গত ২০০৮ সাল হতে আজঅবদী এই মাজারটি সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হচ্ছে।

মাজার শরিফের সভাপতি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ বলেন, দরবার শরীফ এলাকায় কোনো রকম বিশৃংখলা সৃষ্টি কেউ করতে চাইলে তা রুখে দিতে তিন স্তরে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদেরকে ডিউটিতে রাখা হয়েছে। তারা তাতক্ষণিক ভাবে যে কোন সমস্য সমাধানের জন্য সু ব্যবস্থা নিবেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

প্রতি বছর ২৭,২৮ ও ২৯ শে চৈত্র তিন দিন ব্যাপী ওরশ

ভেড়ামারার গোলাপ নগর সোলেইমান শাহ্ (রঃ) মাজার শরীফে নারী-পূরুষের ভীড়

আপডেট টাইম : ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আধ্যাত্মিক সাধক পুরুষ হযরত সোলাইমান শাহ্ চিশতী (র:) মাজারে ৩দিনব্যাপী ওরশ মোবারক শুরু হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় চৈত্র মাসের শেষের দিকে ২৭,২৮ ও ২৯ এই তিন দিন ব্যাপী ওরশ জমজমাট ভাবে চলছে। ৫৩ তম বাৎসরিক এই ওরশ শরীফ কে ঘিরে গ্রামীণ মেলায় ভীড় জমেছে।

ওরশ শরীফ কে কেন্দ্র করে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্তা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

মাজার শরীফের খাদেম রবিউল ইসলাম বলেন,ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্যেই ঊনবিংশ শতকে যে সকল মনীষী, আউলিয়া, গাউজ, কুতুব, দরবেশ, ফকির এই উপমহাদেশে তথা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন হযরত সোলাইমান শাহ্ (রঃ) তাদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন।

মোকারিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বলেন, ৬০ এর দশকে সোলেইমান শাহ্ এসে পদ্মার নদীর তীরবর্তী স্থানে অবস্থান নেন। সেখানে একটা খড়ের কুঁড়ে ঘরে থাকতেন।

ওরশ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদ বেনু বলেন, বাবা সোলেমান শাহ্ বরিশাল জেলার লোক ছিলেন । যৌবন আরম্ভ হলে তিনি গৃহ ত্যাগ করে ভারতের পশ্চিম বাংলার করিমপুর থানার খাজুরে বর্ডারে কিছুদিন বসবাস করেন। তারপর বাংলাদেশে চলে আসেন। তিনি রাজশাহীর চরে অনেক দিন থাকেন। তারপর সেখান থেকে চলে আসেন ভেড়ামারা ঘোষপাড়া গ্রামে সাতবাড়ীয়া মসজিদের উত্তরের মাঠে এক বাবলা গাছের নীচে সলেমান কিছু দিন থাকেন। সর্বশেষে মোকারিমপুরের পদ্মা নদীর তীরে গোলাপনগরে অবস্থান করেন এবং এখানে রেল লাইনের ধারে তিনি স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন।

ওরশ কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর ব্রাশফায়ারে তিনি এবং তিনার ৮সহচর শহীদ হয়। তারপর থেকেই উক্ত আশেকানরা এখানে গড়ে তোলে মাজার ও সোলাইমান শাহ্ দরবার শরীফ। তার ভক্ত আশীকানরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ ভারত-ভূটান ও পাকিস্তান থেকে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে প্রতি বছর ২৭,২৮ ও ২৯ শে চৈত্র তিন দিন ব্যাপী ওরশ শরীফে যোগদেয়। সোলাইমান শাহ্ এই ওরশে লাখো নারী-পুরুষের সমাবেশ ঘটে।

মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সমাজ সেব কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, এই মাজার শরীফ সুষ্ঠু তদারকি পরিচালনার নেতৃত্ব নিয়ে তৎকালীন সময় গোলাপনগর গ্রামে বহুবার দাঙ্গা হাঙ্গামাসহ বহুবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ সংগঠিত হয়। এরই কারণে গত ২০০৮ সাল হতে আজঅবদী এই মাজারটি সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হচ্ছে।

মাজার শরিফের সভাপতি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ বলেন, দরবার শরীফ এলাকায় কোনো রকম বিশৃংখলা সৃষ্টি কেউ করতে চাইলে তা রুখে দিতে তিন স্তরে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদেরকে ডিউটিতে রাখা হয়েছে। তারা তাতক্ষণিক ভাবে যে কোন সমস্য সমাধানের জন্য সু ব্যবস্থা নিবেন।


প্রিন্ট